গেরুয়া শিবিরে বিদ্রোহ থামাতে হিমশিম খাচ্ছেন বঙ্গ বিজেপির শীর্ষ নেতারা
বঙ্গ বিজেপিতে বিদ্রোহ থামার কোনও লক্ষণই নেই। বরং প্রতিদিন তা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর সেই ডামাডোল থামাতে কার্যত হিমশিম খাচ্ছেন রাজ্য পার্টির শীর্ষ নেতারা। রাজ্য-রাজনীতির বর্তমান পরিস্থিতিতে দলের অন্দরের এই বিদ্রোহ কীভাবে থামানো যায়, আপাতত সেই দিশা খুঁজতেই মরিয়া বঙ্গ ব্রিগেড। এই অবস্থায় রাজ্য বিজেপিতে বিক্ষুব্ধ হিসেবে পরিচিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরকে বোঝাতেও প্রাণপাত করছে দলের তথাকথিত শাসক শিবির। কথা বলা হচ্ছে তাঁর সঙ্গে। একইসঙ্গে বিজেপির রাজ্য পার্টি এও বুঝিয়ে দিচ্ছে যে যত বড় নেতাই হোন না কেন, দলবিরোধী অবস্থান কোনওমতেই মেনে নেওয়া হবে না।
সোমবার দিল্লিতে বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘সকলের সঙ্গেই আমরা কথাবার্তা বলছি। শান্তনুবাবু মন্ত্রী। প্রত্যেকের সঙ্গেই কথা হচ্ছে।’ একইসঙ্গে এদিন সুকান্তবাবু বলেন, ‘আমরাও চাই, শান্তনুবাবু যা বলার তা দলের মধ্যেই বলুন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিংবা সাংসদ হিসেবে তিনি বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে দেখা করতেই পারেন। দলের নেতা তাঁর বক্তব্য নেতৃত্বকেই বলবেন। তবে যা বলার তা প্রকাশ্যে সংবাদমাধ্যমে না বলে পার্টির মধ্যেই বলা প্রয়োজন।’ বিজেপির রাজ্য সভাপতির এই মন্তব্যকে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। গেরুয়া শিবির মনে করছে, দলের কথা পার্টির মধ্যেই বলার বার্তা দিয়ে সুকান্তবাবু স্পষ্টই বুঝিয়ে দিলেন যে দলের রীতিনীতি কিংবা নিয়ম-শৃঙ্খলা না মেনে প্রকাশ্যে নিয়মিত পার্টি-বিরোধী মন্তব্য কোনওমতেই বরদাস্ত করা হবে না। তবে বঙ্গ বিজেপির বিক্ষুব্ধ নেতাদের নিয়ে শান্তনু ঠাকুরের তথাকথিত চড়ুইভাতি-রাজনীতি নিয়ে নির্দিষ্ট করে কোনও মন্তব্য করতে চাননি বিজেপির রাজ্য সভাপতি।
রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, আসন্ন নির্বাচনগুলিকে মাথায় রেখে যখন বিজেপির রাজ্য পার্টির আরও সঙ্ঘবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন, তখন এহেন ক্রমবর্ধমান কোন্দল স্বাভাবিকভাবেই বঙ্গ নেতাদের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। কারণ তাঁরা বিলক্ষণ জানেন, দিনের শেষে বিষয়টি নিয়ে রাজ্য পার্টিকে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে জবাবদিহি করতেই হবে।
বিজেপি সূত্রের খবর, দিল্লিতে এসেই অমিত শাহ এবং জে পি নাড্ডার সঙ্গে আলাদা করে সাক্ষাতের জন্য শান্তনুবাবু সময় চাইলেও সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনি তা পাননি। একেও লক্ষ্যণীয় বলেই মনে করা হচ্ছে।