দক্ষিণবঙ্গ বিভাগে ফিরে যান

দুর্নীতির অভিযোগ কাঁথি পুরসভার নির্বাচিত বোর্ডের বিরুদ্ধে

February 2, 2022 | 2 min read

 কাঁথি পুরসভায় নির্বাচিত বোর্ডের মেয়াদকালে(২০১৭-’১৯) কয়েক কোটি টাকা অনিয়মের অভিযোগ উঠল। গ্রিন সিটি মিশন প্রকল্পে শহরে সৌন্দর্যায়ন এবং এলইডি লাইট বসানোর কাজে এই অনিয়ম হয়েছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় পুরসভার অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার এবং তৎকালীন এগজিকিউটিভ অফিসারের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে। অভিযুক্ত অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার দিলীপকুমার চুয়ান এখনও পুরসভায় কর্মরত। এগজিকিউটিভ অফিসার সমীরকুমার দে অবসর নিয়েছেন। সোমবার তাঁদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪০৯, ১০২বি এবং ৪৭৭এ ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। আনুমানিক ১৮-২০কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে পুলিস জানিয়েছে। 


কাঁথি থানার আইসি অমলেন্দু বিশ্বাস বলেন, প্রাথমিকভাবে অফিসার ও ইঞ্জিনিয়ারের বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছে। তবে, তৎকালীন জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হবে। 


গত বছর নভেম্বর মাসে কাঁথি পুরসভার ১৭নম্বর ওয়ার্ডের করকুলির বাসিন্দা পল্লব দত্ত কাঁথি পুরসভায় ২০১৭-’১৯ সালের মধ্যে গ্রিন সিটি মিশন এবং পরিবহণ দপ্তরের আর্থিক সহায়তায় বেশকিছু কাজে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে বলে লিখিত অভিযোগ করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে অতিরিক্ত জেলাশাসক(জেলাপরিষদ) শ্বেতা আগরওয়াল এবং অতিরিক্ত পুলিস সুপার(গ্রামীণ) মানব সিংলার নেতৃত্বে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়া হয়। তাতে ইঞ্জিনিয়ারদেরও রাখা হয়। সেই কমিটি তদন্ত শুরু করে। তাতে নির্বাচিত বোর্ডের আমলে অনিয়মের হদিশ পাওয়া যায়। এরপর পল্লববাবুর সেই অভিযোগের ভিত্তিতে দু’জনের বিরুদ্ধে এফআইআর হল।


জানা গিয়েছে, গ্রিন সিটি মিশন প্রকল্পে কাঁথি পুরসভার ৮নম্বর ওয়ার্ডে মেচেদা বাইপাস সৌন্দর্যায়নের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। সেইমতো সবরকম প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু, বাইপাসে ট্রাফিক পোস্টের কাছে একটি হাইমাস্ট লাইট বসানো ছাড়া সৌন্দর্যায়নের কোনও কাজ হয়নি। টাকা অন্য খাতে ব্যবহার করার নথিও নেই। এছাড়াও শহরে মেচেদা বাইপাস থেকে দীঘা বাইপাস, রূপশ্রী মোড় থেকে দিঙ্গলবেড়িয়া মোড়, ওল্ড দীঘা বাসস্টপ থেকে জুনপুট যাওয়ার রাস্তা, খড়্গপুর বাইপাস থেকে ১১৬বি জাতীয় সড়ক বরাবর হাসপাতালমুখী রাস্তা, প্রভৃতি রোডে এলইডি লা‌ইট বসানো, কেবল লাইন পাতার কাজে বিস্তর অনিয়ম হয়েছে বলে অভিযোগ। এস্টিমেট অনুযায়ী কাজ হয়নি। খাতার সঙ্গে বাস্তবে বিস্তর ফারাক। আর তাতেই কয়েক কোটি টাকা নয়ছয় হয়েছে বলে অভিযোগ।

পুরভোটের মুখে কাঁথি পুরসভায় বিপুল অঙ্কের আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছে বিজেপি। কারণ, তৎকালীন পুরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন্দু অধিকারী এখন বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক। এদিন সৌমেন্দুবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি ওই ঘটনা নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেব না।


এবিষয়ে তৃণমূলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তরুণকুমার মাইতি বলেন, তৎকালীন বোর্ডের কতিপয় পদাধিকারী কাউন্সিলারদের একটা অংশকে অন্ধকারে রেখে স্বেচ্ছাচার চালিয়েছেন। এলইডি লাইট এবং সৌন্দর্যায়নের নামে কয়েক কোটি টাকার দুর্নীতি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত হয়েছে। সেই তদন্তে দুর্নীতি প্রমাণিত হওয়ায় এফআইআর হয়েছে। আরও অনেকেই যুক্ত আছেন। কাঁথি শহরে যে উন্নয়ন হওয়ার কথা ছিল, তা হয়নি।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#West Bengal, #bjp, #Scam, #Kanthi, #kanthi municipality

আরো দেখুন