অখিলেশের সমর্থনে ‘বিজেপিকে হারানোর কাহিনী’ শোনাতে উত্তরপ্রদেশে যাচ্ছেন মমতা
পথ দেখিয়েছে বাংলা। এবার সেই পথেই দেশ থেকে বিজেপিকে হটানোর জন্য তৈরি হচ্ছে রণকৌশল। যার কেন্দ্রবিন্দুতে এবার বিজেপি শাসিত রাজ্য উত্তরপ্রদেশ। তাই তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লখনৌ সফর নিয়ে সমাজবাদী পার্টি আওয়াজ তুলেছে, ‘বিজেপিকে হারানোর কাহিনী, শুনুন বাংলার বাঘিনীর মুখে’।
আসন্ন পাঁচ রাজের বিধানসভা ভোটের মধ্যে রাজনীতিবিদদের আঁতস কাচের তলায় এখন যোগী রাজ্য। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে, বিজেপির কাছেও বড় পরীক্ষা উত্তরপ্রদেশ ধরে রাখা। কারণ, উত্তরপ্রদেশের এই নির্বাচনই ইঙ্গিত দেবে আগামী দিন দেশের সরকার কার হাতে যেতে পারে।
ঠিক এইরকম অবস্থায় আগামী ৮ তারিখ উত্তরপ্রদেশে ভোট প্রচারে যাচ্ছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সমাজবাদী পার্টির সমর্থনে বার্তা দেবেন তিনি। উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে অখিলেশ যাদবের দলকে সমর্থন দিয়েছে তৃণমূল। এই পরিধিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে লখনৌতে দাঁড়িয়ে অখিলেশকে পাশে বসিয়ে উত্তরপ্রদেশের মানুষের কাছে বার্তা দেবেন তৃণমূল নেত্রী। কিন্তু সমাজবাদী পার্টি বলছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সফরে উত্তরপ্রদেশ থেকে দেশব্যাপী বার্তা পৌঁছে যাবে। সেইসঙ্গে উত্তরপ্রদেশ শুনবে, মমতার লড়াই-সংগ্রামের কথা। সমাজবাদী পার্টির সহ সভাপতি কিরণময় নন্দ বলেছেন, দলের কর্মী-সমর্থক থেকে উত্তরপ্রদেশের সাধারণ মানুষ, উৎসুক হয়ে রয়েছেন তৃণমূল নেত্রীর বক্তব্য শোনার জন্য। ভার্চুয়াল মাধ্যমে তৃণমূল নেত্রীর সেদিনের বার্তা আমরা উত্তরপ্রদেশের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে চাই। ফেসবুক, ইউটিউবের মাধ্যমে সেই বার্তা পৌঁছে যাবে। এছাড়া জেলায় জেলায় পার্টি অফিসে দলীয় কর্মীরা থাকবেন। নির্বাচন কমিশনের অনুমতি নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় জায়েন্ট স্ক্রিন, প্রজেক্টরের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
২০২১ সালে বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের দিকে তাঁকিয়ে ছিল গোটা দেশ। তৃণমূলের কথায়, নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহরা কার্যত ‘ডেইলি প্যাসেঞ্জার’ হয়ে গিয়েছিলেন বাংলায়। কোটি কোটি টাকা খরচ করে প্রচার করা হয়। তাছাড়া কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে বিজেপি দলীয় স্বার্থে কাজে লাগিয়েছিল বলে অভিযোগ। কিন্তু এতসবের পরেও যে বিজেপি ২০০ আসন পার করার যে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল, বাংলার মানুষ তাদের সেই স্বপ্নে জল ঢেলে দিয়েছে। ঘটনাচক্রে বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে আট দফায়। এই দীর্ঘ সময় ধরে নির্বাচন পর্বে কী কী ঘটনা ঘটেছে, তা শুনতে চায় উত্তরপ্রদেশ। তাই সমাজবাদী পার্টির নেতৃত্ব বলেছেন, বাংলার নির্বাচনে বিজেপির ‘সর্বশক্তি’র বিরুদ্ধে তৃণমূল নেত্রীকে কীভাবে লড়াই করতে হয়েছে, আর এই লড়াইয়ে বাংলার মানুষ কীভাবে পাশে থেকেছে, সবটা শুনতে চায় উত্তরপ্রদেশ। সমাজবাদীর পার্টির শীর্ষ নেতা কিরণময় নন্দ বলেছেন, উত্তরপ্রদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ে বাড়তি শক্তি জোগাবে। একই সুরে উত্তরপ্রদেশের তৃণমূল নেতা ললিতেশপতি ত্রিপাঠি বলেছেন, বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তৃণমূল নেত্রী। তাই তাঁর কথা শুনতে চায় গোটা দেশ। বিজেপিকে দেশ থেকে হটানোই এখন মূল লক্ষ্য। আর আমরা সেই লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছি। উত্তরপ্রদেশ থেকে বিজেপি হটাতে একযোগে সমাজবাদী পার্টি ও তৃণমূল কংগ্রেস যে লড়াই শুরু করেছে, সেটার দিকেই এখন নজর সারা দেশের। আর কান, নরেন্দ্র মোদিকে গদিচ্যূত করতে মমতার বার্তায়। কারণ অখিলেশ যাদবের দলও স্লোগান তুলেছে, ‘খেলা হবে।’