সরস্বতী পুজোর বাজারে আগুন দামে বিক্রি ফুল থেকে সব্জি
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের আকাশছোঁয়া দামে এমনিতেই হাঁসফাঁস অবস্থা সাধারণ মানুষের। শাক, সব্জি, ফল, ফুল থেকে শুরু করে চাল, ডাল, তেল—সবকিছুর দামেই ছ্যাঁকা লাগছে। সরস্বতী পুজোর জন্য সেই বাজার আরও চড়া। আজ, শনিবার বাগদেবীর আরাধনা। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই স্কুল, কলেজ, নানা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে গৃহস্থের ঘরে বাগদেবীর আরাধনার আয়োজন তুঙ্গে। কিন্তু বাজারদরের এই হালচাল দেখে অনেকেই আয়োজনে কাটছাঁট করতে বাধ্য হচ্ছেন। শুক্রবার কলকাতার বিভিন্ন বাজারে ফুল, ফল, সব্জির দাম ছিল রীতিমতো চড়া। বাধ্য হয়ে অনেকে নিয়মরক্ষার মতো করে অল্প ফুল, ফল কিনছেন।
এদিন সকাল থেকে গড়িয়াহাট, লেক মার্কেট, শিয়ালদহ, শ্যামবাজার, মানিকতলা সহ নানা বাজারে ক্রেতাদের ভিড় উপচে পড়ে। এসব বাজার ঘুরে দেখা গেল, এদিন প্রতি কেজি শসা বিক্রি হয়েছে ৫০‑৬০টাকা দরে। এক ডোজন কাঁঠালি কলার দাম পড়ছে ৬০ টাকা। শাঁকালু, আপেল, পেয়ারা, পাকা পেঁপে, তরমুজ প্রতি কেজির দাম ছিল যথাক্রমে ৪০, ১৫০, ১২০, ৫০ ও ৫০ টাকা। একটি আনারসের দাম নিয়েছে ৬০‑৭০ টাকা। জামরুল বিক্রি হয়েছে ২০০ টাকা কেজি দরে। এক টুকরো আখের দামই ছিল ৮‑১০টাকা। নারকেল কুল ৫০‑৬০টাকায় বিক্রি হয়েছে। দেবীর ঘটের ডাব বিক্রি হয়েছে কোথাও ৩০, কোথাও ৩৫ টাকায়।
সরস্বতী পুজোয় অনেকের বাড়িতে ‘গোটা সিদ্ধ’ প্রথা পালিত হয়। আবার কোথাও কোথাও দেবীকে নানা ব্যাঞ্জন সহ খিচুড়ি ভোগ নিবেদন করা হয়। এসবের জন্য নানা সব্জির দরকার পড়ে। সেসবের দামও ছিল বেশ চড়া। ছোট সাইজের ফুলকপি প্রতিটির দাম ছিল ২৫‑৩০টাকা। বেগুন বিক্রি হয়েছে কোথাও ৪০, কোথাও ৫০ টাকা কেজি দরে। টমেটো, কড়াইশুঁটি, কুমড়ো প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে যথাক্রমে ৪০, ৪০ ও ৩০ টাকায়। বাগদেবীর আরাধনায় দরকার হয় পলাশফুল, খাগের কলম ও মাটির দোয়াত। এদিন ছোট একটি পলাশ ফুলের দাম ছিল ১০টাকা। খাগের কলম ও দোয়াত বিক্রি হয়েছে ১০‑১৫ টাকায়। ফুলের বাজারও রীতিমতো আগুন। বড় সাইজের গাঁদা ফুলের একটি মালার দাম ছিল ৫০ টাকা। রজনীগন্ধার বড় মালা বিক্রি হয়েছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়। ২০‑২৫ টাকার নীচে ঝুরোফুল বিক্রি করা হয়নি।
শিয়ালদহ বাজারে পুজোর কেনাকাটা করতে এসেছিলেন এন্টালির গৃহবধূ বনানী পাল। তিনি বলেন, ফল, ফুল, সব্জির যা দাম, তাতে এবার নিয়মরক্ষার পুজোই করতে হবে। মানিকতলা বাজারে দাঁড়িয়ে বাগমারির বাসিন্দা অরূপ সাঁতরা বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে মানুষের পকেট ফাঁকা। তার উপর জিনিসপত্রের যা দাম, তাতে তো পুজো করাই দুঃসাধ্য হয়ে উঠছে। সব মিলিয়ে বাগদেবীর আরাধনা করতে গিয়েও পকেটে টান পড়ছে মধ্যবিত্ত বাঙালির। শিয়ালদহের কোলে মার্কেটে চলছে কেনাকাটা।