উত্তরবঙ্গের রেল দুর্ঘটনা নিয়ে বিতর্ক আরও উস্কে দিলেন খোদ রেলমন্ত্রী
বিকানির-গুয়াহাটি এক্সপ্রেস বেলাইন হওয়ার পরে দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রাথমিকভাবে সংশ্লিষ্ট ট্রেনের ইঞ্জিনের গাফিলতিকেই দায়ী করেছিলেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। কিন্তু শুক্রবার রাজ্যসভায় এই সংক্রান্ত এক প্রশ্নের লিখিত জবাবে সেই রেলমন্ত্রীই ইঞ্জিনের গাফিলতির কথা উল্লেখ করলেন না। শুধু জানালেন, রেলের তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পাওয়ার পরেই দুর্ঘটনার কারণ স্পষ্ট হবে।
গত ১৩ জানুয়ারি উত্তরবঙ্গের ময়নাগুড়িতে বেলাইন হয়ে যায় বিকানির-গুয়াহাটি এক্সপ্রেস। হতাহতের ঘটনাও ঘটে। সর্বোপরি ২০১৯ সালের এপ্রিল মাস থেকে কোনও ট্রেন দুর্ঘটনায় একজন যাত্রীরও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি, বারবার রেলের এহেন দাবিতেও চুনকালি পড়ে। দুর্ঘটনার পর রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে যে ইঞ্জিনের ত্রুটির কারণেই দুর্ঘটনা ঘটেছে। যদিও শুক্রবার রাজ্যসভায় এক লিখিত জবাবে রেলমন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘কলকাতার নর্থ-ইস্ট ফ্রন্টিয়ার সার্কেলের কমিশনার অব রেলওয়ে সেফটি এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় তদন্ত চালাচ্ছে। সেই তদন্ত সম্পূর্ণ হওয়ার পরেই বোঝা যাবে, ওই দুর্ঘটনা কেন ঘটেছিল।’ একইসঙ্গে রেলমন্ত্রী এদিন লিখিতভাবে জানিয়েছেন, ‘সংশ্লিষ্ট ট্রেন দুর্ঘটনার দায় কার, সেটিও কমিশনার অব রেলওয়ে সেফটির তদন্ত শেষ হওয়ার পরেই স্পষ্ট হবে।’ তবে রেলমন্ত্রক সাধারণ ট্রেন যাত্রীদের কোনও সুরক্ষা এবং নিরাপত্তাই দিতে পারছে না, এমন অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করেছেন রেলমন্ত্রী। সেই রিপোর্ট কবে পেশ হবে, সে ব্যাপারেও আলোকপাত করেননি রেলমন্ত্রী।
অন্যদিকে, অন্য একটি প্রশ্নের লিখিত জবাবে রেলমন্ত্রক জানিয়েছে, কোনও প্রকল্প কত দ্রুত শেষ হবে, তা একাধিক বিষয়ের উপর নির্ভর করে। এর মধ্যে বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে প্রয়োজনীয় অনুমোদন পাওয়ার বিষয়টি নির্ভর করে। তেমনই সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার ওই প্রকল্পের জন্য কত তাড়াতাড়ি জমি অধিগ্রহণ করে দিচ্ছে, সেটিও নির্ভর করে। পাশাপাশি আনুষঙ্গিক অন্যান্য কারণও থাকে। সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে রেলের বিভিন্ন প্রকল্পে বরাদ্দ সম্বলিত জোনওয়াড়ি পিঙ্কবুক। সেখানে বাংলাকে বঞ্চনার ছবি স্পষ্ট হয়েছে। যদিও এদিনের জবাবে রেলমন্ত্রক নির্দিষ্ট করে কোনও রাজ্যের নামোল্লেখ করেনি। মন্ত্রক জানিয়েছে, নতুন লাইন, গেজ কনভারশন, ডাবলিং প্রভৃতি প্রকল্পের জন্য পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দই করা হয়েছে।