মমতার হস্তক্ষেপে সরাসরি স্বাস্থ্যদপ্তরের অধীনে আসছেন প্রায় দু’হাজার আয়ুষ চিকিৎসক
১০-১৫ বছর পর দোটানার জ্বালা থেকে মুক্তি পেতে চলেছেন পঞ্চায়েতে কর্মরত প্রায় দু’হাজার হোমিওপ্যাথিক ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক। রাজ্যের সাড়ে পাঁচশোর বেশি গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস এবং হাজারের বেশি উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্মরত তাঁরা। বেতন পান পঞ্চায়েত দপ্তর থেকে। আবার নিয়ম মানেন স্বাস্থ্যদপ্তরের। কাজ ভালো হচ্ছে কি হচ্ছে না, বিচার করে পঞ্চায়েত দপ্তর। ওষুধ ফুরিয়ে গেলে চাইতে হয় পঞ্চায়েত দপ্তরের কাছে। আবার গাইডলাইন মানতে হয় স্বাস্থ্যদপ্তরের। নিজেরাও বুঝতে পারেন না, ঠিক কোন দপ্তরের চিকিৎসক তাঁরা! ১০-১৫ বছর ধরে কয়েকশো চিঠিচাপাটি পাঠিয়েও জট খোলেনি। অবশেষে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে এইসব চিকিৎসকের পঞ্চায়েত থেকে সরাসরি স্বাস্থ্যদপ্তরের অধীনে আনছে সরকার। বিভিন্ন প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও স্বাস্থ্যদপ্তরের প্রয়োজনের জায়গায় তাঁদের পোস্টিং দেওয়া হবে। স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলেন, পঞ্চায়েতের ওই আয়ূষ চিকিৎসকদের স্বাস্থ্যদপ্তরে ফেরানো হচ্ছে। কীভাবে কাজে লাগানো হবে, তার নীতি প্রস্তুত হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ২০০৬ সাল থেকে রাজ্যের বিভিন্ন পঞ্চায়েত ও উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রায় দু’শো আয়ুর্বেদিক এবং ২০১১ সাল থেকে এইসব জায়গায় আরও হাজারেরও বেশি হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসককে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ করা হয়। কিছু চিকিৎসক নিযুক্ত হন জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনখাতে। বাকিরা নিযুক্ত হন স্টেট বাজেট খাতে। অভিযোগ, শুরু থেকেই পঞ্চায়েত ও স্বাস্থ্য, দুই দপ্তরের মাঝে পরে চরম অসুবিধায় পড়ছিলেন তাঁরা। সমস্যায় পড়ছিল মানুষও। কারণ, প্রয়োজনীয় ওষুধ শেষ হয়ে গেলে পঞ্চায়েত প্রধান, নয়তো বিডিওকে বলতে হয় তাঁদের। অধিকাংশ সময় তাঁরা প্রশাসনিক রুটিন কাজকর্মে ব্যস্ত থাকেন। ওষুধের সমস্যায় তাঁদের মাধ্যমে উপর মহলে পৌঁছে, আসতে আসতে লেগে যেত কয়েক মাস। বেতনের ক্ষেত্রেও তাই। শুরু থেকেই অধিকাংশ মাসে সময়ে ভাতা পান না তাঁরা। ফার্মাসিস্ট বা অন্য কোনও সহযোগী নেই। এই অবস্থাতেই খাতায় এন্ট্রি, রোগী দেখা, আয়ূষ ডিসপেনসরি চালানো সব চলছে। স্বাস্থ্যে ফেরানোর পর এই দ্বিধাদ্বন্দ্বের পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পাবেন বলে আশা করছেন তাঁরা।