প্রতিটি পঞ্চায়েতে প্লাস্টিক ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প, উদ্যোগী রাজ্য
প্লাস্টিক দূষণ মানব সভ্যতার কাছে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। এর ক্ষতির দিকগুলি কমবেশি সকলেই জানেন। তারপরেও প্লাস্টিকের ব্যবহার বেড়েই চলেছে। নিত্যদিনের জীবনের সঙ্গে এই উপাদান ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে পড়েছে। শহরের পাশাপাশি গ্রামীণ এলাকার ছবিও একই। তাই দূষণের হাত থেকে রক্ষা পেতে এবার রাজ্যের প্রতিটি পঞ্চায়েত এলাকায় প্লাস্টিক ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প করার সিদ্ধান্ত নিল সরকার। প্রতিটি প্রকল্পের জন্য ১৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েতগুলিকে একটি করে ‘প্লাস্টিক বেলিং মেশিন’ দেওয়া হবে। ফাঁকা জায়গায় এই মেশিনের মাধ্যমে সব ধরনের প্লাস্টিক গলানো হবে। বোতল, খেলনা, বালতি সহ বিভিন্ন ধরনের বড় উপকরণ কয়েক মিনিটে গলে যাবে। পরে সেটি অন্যত্র পাঠানো হবে। সেটি থেকে বিভিন্ন ধরনের ঘর সাজানোর জিনিসপত্র তৈরি করা হবে। বোতল বা প্লাস্টিকের প্যাকেট একবার ব্যবহার করার পরেই ফেলে দেওয়া হয়। বেশিরভাগ সময় তা জলাশয়ে গিয়ে পড়ে। নালাতেও তা আটকে যাবে। প্লাস্টিক কোনওভাবেই সম্পূর্ণ নষ্ট করা সম্ভব নয়। কিন্তু ঘর সাজানোর জিনিস তৈরি হলে তা সহজে ফেলে দেওয়া হবে না। বাড়িতে দীর্ঘদিন থেকে যাবে। সেই কারণেই এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।
বর্ধমান জেলা পরিষদের সেক্রেটারি চিরন্তন প্রামাণিক বলেন, পিচের সঙ্গে প্লাস্টিক মিশিয়ে রাস্তা তৈরি করা যায় কি না, তা নিয়ে পরীক্ষা চলছে। কয়েকটি এলাকায় পাইলট প্রজেক্ট নেওয়া হয়েছে। সফল হলে এই কাজেও গলানো প্লাস্টিক ব্যবহার হবে। খেলনা বা ঘর সাজানো জিনিস তৈরি করার জন্য একটি সংস্থার সঙ্গে প্রাথমিক কথা হয়েছে। লোহার মতোই বিশেষ যন্ত্রের মাধ্যমে প্লাস্টিক গলানো হবে। তা বাইরে আগুনে পোড়ানো হলে বায়ুদূষণ হবে। কিন্তু বিশেষ মেশিনের মাধ্যমে প্লাস্টিক গলানো হলে বায়ুদূষণ হবে না।
প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, কয়েকদিনের মধ্যেই মেশিন কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে। পঞ্চায়েতগুলি জায়গা চিহ্নিত করবে। সেখানেই বিশেষ মেশিন বসানো হবে। সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্পের কাজ অনেক আগেই শুরু হয়ে গিয়েছে। বর্ধমান জেলা এই প্রকল্পে নজির গড়েছে। ৩৩টি প্রকল্প চলছে। আগামী দিনে দূষিত জলও পরিস্রুত করার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রতিটি পঞ্চায়েত এলাকাতেই এই প্রকল্প হবে। তবে তার আগে প্লাস্টিক ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টে জোর দেওয়া হয়েছে।
পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া বলেন, নির্মল বাংলা প্রকল্পে আমাদের জেলায় অনেক ভালো কাজ হচ্ছে। আগামীদিনে একাধিক প্রকল্প বাস্তবায়িত করা হবে।
আর এক আধিকারিক বলেন, শহরের পাশাপাশি প্রতিটি পঞ্চায়েত এলাকায় প্রচুর প্লাস্টিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে। নালা নর্দমায় তা জমে যাওয়ায় নিকাশির সমস্যাও হয়। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে সেই সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে।