বিবাদ মেটাতে পুরভোটে বিধায়ক হিরণকে প্রার্থী করল বিজেপি! জল্পনা রাজনৈতিক মহলে
একদিকে যখন তৃণমূল কংগ্রেস কোনও বিধায়ককেই আর পুরভোটে প্রার্থী করেনি। অন্যদিকে তখন বিধায়ক তথা অভিনেতা হিরণকে ভোটে দাঁড় করাল গেরুয়া শিবির। খড়গপুর সদরের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী করা হয়েছে হিরণকে। তবে কি ক্ষোভ প্রশমনের চেষ্টাতেই টিকিট দেওয়া হল তাঁকে? এমনটাই মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের।
কিছুদিন আগেই হিরণের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়ার খবরে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল রাজ্য-রাজনীতিতে। জল্পনা উঠতে শুরু করে তাঁর দলবদল নিয়েও। তবে কী বঙ্গে বিজেপির সঙ্গে ক্রমশই দূরত্ব বাড়ছে হিরণ চট্টোপাধ্যায়ের (Hiraan Chatterjee)? বিতর্কে মুখে হিরণকে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি অভিমান উগরে দিতেও দেখা গিয়েছিল। বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে বরাবরই ঠান্ডা লড়াই ছিল বিধায়ক হিরণের। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুদারের বিরুদ্ধেও ক্ষোভের সুর শোনা গিয়েছিল হিরণের গলায়।
তবে হিরণ বলেছিলেন, ”হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়া মানেই দল ছাড়া নয়। আমি নিজের এলাকায় সাধ্যমতো কাজ করে যাচ্ছি। কোভিডের সময় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি। এই দুর্দিনেও আমাদের দলে একাধিক মানুষ যোগদান করেছেন।”
অন্যদিকে, পুরভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশ হওয়ার পর দেখা গিয়েছিল নজর কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে রয়েছেন হিরণ চট্টোপাধ্যায়।ইতিমধ্যে হিরণ (Hiran Chatterjee) খড়গপুরের ভোটার হয়েছেন। তিনি প্রেমবাজার এলাকায় ভোটার তালিকায় নাম তুলেছেন। তাঁকে ভোটের প্রচারেও অন্যতম প্রধান মুখ হিসেবে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল গেরুয়া শিবির। কয়েকদিন আগে অবশ্য খড়গপুরের পুরভোটের জন্য দলকে প্রস্তুত করতে একটি বৈঠক করেছিলেন সাংসদ দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)।
যদিও সেই বৈঠকে দেখা মেলেনি বিধায়ক হিরণের। তাঁর অনুপস্থিতিতে হওয়া এই বৈঠক নিয়ে দলের অন্দরেও প্রশ্ন ওঠে। এই ঘটনার পরই রাজ্য নেতৃত্ব হিরণের ক্ষোভ মেটাতে ময়দানে নামে। আর তারই ফলশ্রুতি তাঁকে পুরভোটের টিকিট দেওয়া। এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
২০২১-এ দিলীপ ঘোষের খাসতালুক হিসাবে পরিচিত খড়গপুর থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হন অভিনেতা হিরণ। লাগাতার অন্তর্দ্বন্দ্বে জর্জরিত বঙ্গ বিজেপি। বিদ্রোহ এবং অসন্তোষ থামাতে তাই অন্যরকম স্ট্র্যাটেজি নিয়েছেন সুকান্ত মজুমদাররা। বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের দলের প্রতি আস্থা ফেরাতে তাই এবার পুরভোটে টিকিট দেওয়ার ক্ষেত্রেও পিছপা হচ্ছে না নেতৃত্ব। হিরণ সে ক্ষেত্রে অন্যতম একটি নাম।