রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

জনতাকে হয়রান করলে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে রাজ্য সরকারি কর্মীদের

February 8, 2022 | 2 min read

কাজে ফাঁকি আর নয়। প্রাপ্য পরিষেবা থেকে কোনওভাবেই বঞ্চিত করা যাবে না সাধারণ মানুষকে। আম জনতাকে হয়রান করার শাস্তি হবে মোটা অঙ্কের জরিমানা। ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত গুণাগার দিতে হতে পারে রাজ্য সরকারি কর্মীদের। এমনই উদ্যোগ নবান্নের। সূত্রের খবর, নয়া নিয়ম চালু করতে ‘পশ্চিমবঙ্গ জন পরিষেবা অধিকার আইন, ২০১৩’-এ বদল চায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। ইতিমধ্যেই তার খসড়া জমা পড়েছে আইন দপ্তরে। সব দিক বিবেচনা করে তাতে প্রাথমিক ছাড়পত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাকি শুধু মুখ্যমন্ত্রীর সম্মতি। সেই চূড়ান্ত সিলমোহর মিললেই আইন বদলের কাজে হাত দেওয়া হবে।

বাম আমলে রাজ্য সরকারি দপ্তরের মূল মন্ত্র ছিল ‘আসি-যাই, মাইনে পাই’। প্রথমবার ক্ষমতায় এসেই সেই কর্মনাশা সংস্কৃতির অচলায়তন ভাঙার উদ্যোগ নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১৩ সালে বিধানসভায় পাশ হয় ‘জন পরিষেবা অধিকার আইন’। উদ্দেশ্য একটাই, সরকারি দপ্তরে এসে সাধারণ মানুষ যাতে হয়রানির শিকার না হন। প্রায় সবক’টি দপ্তরকেই আনা হয় ওই আইনের আওতায়। সরাসরি সাধারণ মানুষের স্বার্থ জড়িত এমন দপ্তরগুলিতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। যেমন রেশন কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স, জন্ম-মৃত্যুর শংসাপত্র বা এসব নথির ‘কপি’, জমির মিউটেশন প্রভৃতি পরিষেবার মতো একগুচ্ছ সরকারি কাজ। পরিষেবা দিতে সর্বোচ্চ কতদিন সময় লাগবে, তার হিসেব চাওয়া হয় আধিকারিক ও কর্মীদের কাছে। সেই অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়সীমার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে দপ্তরগুলি। এই আইনের আওতায় আনা হয় পুরসভা এবং গ্রাম পঞ্চায়েতকেও। আইন অনুযায়ী, সরকারি দপ্তরে আবেদন জানিয়ে নির্ধারিত দিনের মধ্যে পরিষেবা না পেলে অভিযোগ দায়ের করা যাবে। কোন পদাধিকারীর কাছে নালিশ জানাতে হবে, বিজ্ঞপ্তিতে সে কথাও উল্লেখ করা হয়। এমনকী তাতে সুরাহা না মিললে আরও উচ্চ পদাধিকারীর কাছে অভিযোগ জানানো যাবে। যদি কর্মী বা আধিকারিকের গাফিলতি প্রমাণিত হয়, সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করার সংস্থান রয়েছে আইনে। গোটা বিষয়টি দেখভালের জন্য গড়া হয়েছে ‘রাইট টু পাবলিক সার্ভিস কমিশন’।

সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত একজন সরকারি কর্মী বা আধিকারিককেও কর্তব্যে গাফিলতির জন্য জরিমানা করা হয়নি। তাহলে কি সরকারি দপ্তর সর্বত্র সুষ্ঠুভাবে চলছে? বাস্তবটা অনেকাংশেই এমন নয়, জানেন প্রায় সবাই। জানা যাচ্ছে, সেই খামতি মেটাতেই এবার উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য। রাইট টু পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পক্ষ থেকে এই সংক্রান্ত একটি খসড়া পাঠানো হয় আইন দপ্তরে। সেখানে সংশ্লিষ্ট আইনে মূলত দু’টি বদল চাওয়া হয়েছে। প্রথমত, জরিমানার অঙ্ক এক হাজার থেকে বাড়িয়ে ১০ হাজার টাকা করা। দ্বিতীয়ত, কমিশনের দায়িত্ব ও অধিকার আরও বাড়ানোর আর্জি। কেমন অধিকার? যদি কোনও নাগরিক অভিযোগ জানিয়েও সুরাহা না পান, সেক্ষেত্রে যাতে কমিশন হস্তক্ষেপ করতে পারে। অর্থাৎ, দ্বিতীয়বার আপিল করতে হলে আর কোনও সরকারি উচ্চপদস্থ আধিকারিক নয়, সরাসরি কমিশনের দ্বারস্থ হওয়া যাবে। তারাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। দোষ প্রমাণিত হলে সরকারি কর্মী বা আধিকারিককে জরিমানা করার ক্ষমতা যাতে কমিশনকে দেওয়া হয়, সেই আবেদনও করা হয়েছে খসড়ায়। জানা গিয়েছে, প্রাথমিকভাবে এই প্রস্তাবে আপত্তি নেই আইন দপ্তরের। তবে চূড়ান্ত অনুমোদন দেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#West Bengal, #Nabanna, #fine, #govt employees, #common people, #Govt services

আরো দেখুন