মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মস্তিষ্কপ্রসূত কন্যাশ্রী প্রকল্প প্রাপকের সংখ্যা ৭৫ লক্ষ ছুঁতে চলেছে
মাইল ফলক ছুঁতে চলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাধের ‘কন্যাশ্রী’। উপভোক্তার সংখ্যা ৭৫ লক্ষে পৌঁছে যাওয়া এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। মঙ্গলবার পর্যন্ত সরকারি তখ্য বলছে, কন্যাশ্রী প্রকল্পে প্রাপক অর্থাৎ ইউনিক বেনিফিশিয়ারির সংখ্যা ৭৪ লক্ষ ৯৪ হাজার ৯১৮ জন। মনে করা হচ্ছে, কয়েকদিনের মধ্যেই ৭৫ লক্ষের গণ্ডি পার হয়ে যাবে কন্যাশ্রী। বাল্য বিবাহ রোধ, স্কুলছুটের সংখ্যা কমানো এবং আর্থিক কারণে মেয়েদের পড়া যাতে বন্ধ না হয়ে যায়, তা নিশ্চিত করতেই এই প্রকল্প শুরু করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। শিক্ষার প্রগতিতে এই পরিসংখ্যান নতুন মাত্রা যোগ করবে।
২০১১ সালে বাংলায় সরকার গড়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একাধিক প্রকল্প বিশ্বমঞ্চে স্বীকৃতি পেয়েছে, পুরস্কৃত হয়েছে। সেই তালিকায় ‘কন্যাশ্রী’ একেবারে প্রথম সারিতে। ২০১৩ সালে মমতা চালু করেন এই প্রকল্প। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার যখন ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’-এর নামে প্রচারেই বরাদ্দ অর্থের ৫৮ শতাংশ খরচ করে বসে আছে, তখন সাফল্যে চূড়ায় আরও একধাপ এগিয়েছে ‘কন্যাশ্রী’। রাজ্য প্রশাসন সাফ জানাচ্ছে, এই প্রকল্প এতটাই স্বচ্ছ যে, মানুষ চাইলে সরকারি ওয়েবসাইটে যাবতীয় তথ্য যাচাই করে নিতে পারবেন। এর তিনটি ভাগ রয়েছে। ‘কে-ওয়ান’, ‘কে-টু’ এবং ‘কে-থ্রি’। প্রথম দু’টি বিভাগ দেখভালের দায়িত্বে নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ দপ্তর। শেষ বিভাগটি দেখে উচ্চশিক্ষা দপ্তর। ১৩-১৮ বছর পর্যন্ত ‘কে-ওয়ান’-এর ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বার্ষিক হাজার টাকা দেওয়া হয়। ‘কে-টু’তে অঙ্কটা এককালীন ২৫ হাজার টাকা। শুধুমাত্র ‘কে-ওয়ান’ ও ‘কে-টু’ মিলিয়ে প্রাপকের সংখ্যা ৭৫ লক্ষ ছুঁতে চলেছে। দপ্তরের দেওয়া পরিসংখ্যান বলছে, ২০২১ সালের এপ্রিল মাস থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে কে-ওয়ান প্রাপকের সংখ্যা ৩২.৭৯ লক্ষ। এই সময়ে কে-টু পেয়েছেন ৬.৭৬ লক্ষ। ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই প্রকল্পে সরকার খরচ করেছে ১১১৯৩ কোটি ২৪ লক্ষ টাকা। আর শুধু ২০২১-২২ অর্থবর্ষে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্তই সরকারের খরচ হয়েছে ২১৩৮ কোটি ৬৬ লক্ষ টাকা। কে-টু বিভাগে আরও জোর দেওয়ার কথা উঠে এসেছে সরকারের প্রশাসনিক বৈঠকে। নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেছেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের এই প্রকল্প সাফল্যের সঙ্গে রূপায়ণ করা হয়েছে। উপকার পাচ্ছে বাংলার কন্যাশ্রীরা।’