কোনও ব্যাঙ্ক স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের ঋণ না দিলে তাদের সাথে লেনদেন বন্ধের হুঁশিয়ারি নবান্নের
স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে সহজ শর্তে ঋণ দিয়ে রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু কিছু সরকারি ব্যাঙ্ক এই ঋণ দিতে এগিয়ে আসছে না। গত সপ্তাহে অনুষ্ঠিত প্রশাসনিক বৈঠকে এনিয়ে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বর্তমানে আটটি ব্যাঙ্ক ছাত্রছাত্রীদের ঋণ দিচ্ছে। আরও তিনটি সরকারি ব্যাঙ্ক স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ঋণ দিতে এগিয়ে এসেছে। সেই ব্যাঙ্কগুলি হল, কানাড়া ব্যাঙ্ক, ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া এবং ব্যাঙ্ক অব বরোদা। মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী সব জেলাশাসককে নির্দেশ পাঠিয়েছেন, যেসব ব্যাঙ্ক স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের ঋণ দেবে না, তাদের সঙ্গে রাজ্য সরকারি লেনদেন বন্ধ করতে হবে।
গত বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ঋণ দেওয়ার বিষয় নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ১ লক্ষ ১৪ হাজার ছাত্রছাত্রী এই ঋণের জন্য আবেদন করেছেন। তাঁদের মধ্যে ২৫ হাজার আবেদন অনুমোদন করা হয়েছে। আর ঋণ পেয়েছেন ১৪ হাজার জন। এই সংখ্যা আরও বাড়াতে হবে। ব্যাঙ্কগুলি সহযোগিতা করছে না। এর পিছনে রাজনৈতিক অভিসন্ধির অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। পরদিন জেলাশাসকদের সঙ্গে সব প্রকল্পের দ্রুত রূপায়ণ নিয়ে একটি জরুরি বৈঠক করেন মুখ্যসচিব। সেখানেই তিনি বলেন, ছাত্রছাত্রীদের উচ্চশিক্ষার জন্য এই ঋণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু যেসব ব্যাঙ্ক আমাদের সহযোগিতা করবে না, সেখান থেকে আমরা সব অ্যাকাউন্ট তুলে নেব। তাদের সঙ্গে আর্থিক লেনদেনও বন্ধ করে দিতে হবে।
এমন হুঁশিয়ারি এর আগে বেশ কাজে লেগেছিল। ফের সেই পথেই হাঁটতে চায় নবান্ন। এক শীর্ষকর্তা জানিয়েছেন, প্রতিটি ব্লক, মহকুমা ও জেলায় বিভিন্ন ব্যাঙ্কের মাধ্যমে সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা লেনদেন হয়। এতে উপকৃত হয় ব্যাঙ্কগুলিও। আমাদের ছেলেমেয়েদের পাশে না দাঁড়ালে আমরা সেই অ্যাকাউন্টগুলি চালু রাখব কেন? এই ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার গ্যারান্টি দিচ্ছে। মাত্র ৪ শতাংশ সুদের হারে ছাত্রছাত্রীরা এই ঋণ পাচ্ছেন। ছাত্রছাত্রীদের পাশে সকলের দাঁড়ানো কর্তব্য।
যেসব ব্যাঙ্ক স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ঋণ দিতে এখনও পর্যন্ত এগিয়ে এসেছে, তারা হল এসবিআই, পিএনবি, ইউকো, ইউনিয়ন, অ্যাক্সিস, এইচডিএফসি, আইসিআইসিআই এবং সমবায় ব্যাঙ্ক। সব ধরনের সমবায় ব্যাঙ্ককে যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য। স্টুডেন্ট ক্রেডিড কার্ড ছাড়াও কিষান ক্রেডিট কার্ড, কেসিসি (এআরডি), এসএইচজি ঋণ প্রভৃতি দেওয়া হয় ব্যাঙ্কের মাধ্যমে। সেইসব কাজ দ্রুতগতিতে আরও বেশি সংখ্যায় করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।