আইপ্যাক ইস্যুতে পার্থর উল্টোপথে সৌগত, বাড়ালেন ধোঁয়াশা
আইপ্যাক (Ipac) নিয়ে তৃণমূল নেতৃত্ব তাদের অবস্থান স্পষ্ট করার পরদিনই তাদের দরাজ সার্টিফিকেট দিলেন দলের বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায় (TMC MP Sougata Roy)। বললেন, আইপ্যাকের মতো এত শৃঙ্খলাবদ্ধ ব্যবস্থা আগে দেখেননি তিনি। এই প্রসঙ্গেই তাঁর মত, আইপ্যাকের সঙ্গে চুক্তি ভেঙে যাওয়ায় ক্ষতি না হলেও দলের অসুবিধা হবে। আইপ্যাকের সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে কিনা, এ প্রশ্নের জবাব ইতিমধ্যেই সরাসরি এড়িয়ে গিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব।
তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ নিয়ে আগের দিন কোনও জবাব দিতে চাননি। তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও এ নিয়ে প্রশ্ন নেননি। বলেছিলেন, এটা দলের বিষয় নয়। এর পরদিন মঙ্গলবার দিল্লিতে বসে একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সৌগত রায় আইপ্যাকের হয়ে ব্যাট ধরলেন। সরাসরি বললেন, “আইপ্যাকের সঙ্গে কী চুক্তি ছিল জানি না। সেই চুক্তি ভেঙে গিয়েছে। ক্ষতি না হলেও অসুবিধা তো হবেই।”
একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, “একুশের নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই থেকে দলের জয়, তাদের উল্লেখযোগ্য অবদান ছিল। তা নিয়ে কোনও সমস্যা হয়নি।” এর পরই আইপ্যাককে প্রশংসায় ভরিয়ে দমদমের সাংসদ বলেন, “আইপ্যাকের কাজ দেখেছি। এত শৃঙ্খলাবদ্ধ ব্যবস্থা। ম্যানেজমেন্ট, আইআইটির গ্র্যাজুয়েট ছেলেমেয়েরা কাজ করেছেন। অত্যন্ত যোগ্য সকলে। পাঁচ লক্ষ টাকা বেতন পাওয়ার যোগ্য।” তাঁর কথায়, “এঁরা রাজনীতিতে টাকা কামাতে আসেননি। সার্ভের মধ্যে দিয়ে মানুষের সঙ্গে মিশে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে এসেছিলেন।”
এই পরিস্থিতির মধ্যে প্রার্থীতালিকা নিয়ে দ্বন্দ্ব থামার ইঙ্গিত এখনও মেলেনি। কর্মীদের বিদ্রোহ থেকে পরিস্থিতি শীর্ষ নেতৃত্বের দিকে মোড় ঘুরেছে। কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র একের পর এক মুখ খুলেছেন। একদিন আগেই সরাসরি নিশানা করেন সৌগত রায়কে। ফেসবুক লাইভে বলেন, “আইপ্যাকের বদলে সৌগত রায়কে দায়িত্ব দিক। উত্তর ২৪ পরগনার দায়িত্ব দিক ওঁকে। কোনটা দেখবেন?”
এদিন সৌগত জবাবে বলেন, “আমার কোনও জেলার দায়িত্ব ছিল না। প্রথমে দল সার্ভে করে। পরে আইপ্যাক করে। আমি জানতে পেরে সুব্রত বক্সি আর পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে বলি। তাঁরা জানান, তালিকা চূড়ান্ত। তার পর বিধায়ক পার্থ ভৌমিককে একটা তালিকা দিয়েছিলাম। দু’-চারটে নাম এসএমএস করেছিলাম।” মদন সেই সঙ্গেই বলে দেন, “কামারহাটির দায়িত্ব কাউকে নিতে হবে না। আমিই সব খরচ দেব। সাংসদ সৌগত রায়কেও নিতে হবে না।” সেই সঙ্গেই মদন বলেন, “ওঁর নজর তো কামারহাটিতে। সেখানকার মাখনটা যে নষ্ট করতে হবে।” জবাবে সৌগত বলেছেন, দল দেখবে।
অন্যদিকে, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এক ব্যক্তি এক পদ ও রাজনীতির বয়স নিয়ে যা যা মন্তব্য করেছিলেন, তাকেও সমর্থন করেছেন সৌগত। বলেছেন, “আমি মনে করি অভিষেক ঠিকই বলেছে। একটা নির্দিষ্ট বয়সসীমা থাকলে ভাল।” এক ব্যক্তি এক পদ নিয়ে তাঁর বক্তব্য, “গত বছর ৫ জুনের বৈঠকে আমিও ছিলাম। আমি এই নীতি সমর্থন করি।”