বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাঁইথিয়া-বজবজ পুরসভা দখলের পথে তৃণমূল
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গড় দক্ষিণ ২৪ পরগনায় পুরভোটের আগেই ফুটল ঘাসফুল। ভোটের আগেই বজবজ পুরসভা দখল করে নিল তৃণমূল। ওই পুরসভায় ভোট হবে আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি। তবে তার আগেই পুরসভার ১২টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পেয়েছে জোড়াফুল শিবির।
১০৮টি পুরসভার ভোটের জন্য বুধবারই ছিল মনোনয়নের শেষ দিন। দুপুর তিনটে পর্যন্ত মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময়সীমা ছিল। তবে তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, বজবজ পুরসভার মোট ২০টি আসনের মধ্যে ১২টিতে দলীয় প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন। পুরবোর্ড গঠনের জন্য ম্যাজিক সংখ্যা ১১। ১২টি ওয়ার্ড বিরোধীশূন্য হওয়ায় ওই পুরসভা তৃণমূলের ঝুলিতেই চলে গেল।
বজবজ পুরসভার ২০টি ওয়ার্ডের মধ্যে দু’টি ওয়ার্ড (৫ এবং ১৮)-এ বিজেপি মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছে। আটটি ওয়ার্ড (৫, ৮, ১০, ১১, ১৩, ১৪, ১৭ ও ১৮)-এ মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছে বামেরা। বিজেপি-র ডায়মন্ড হারবার সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি সবিতা চৌধুরীর কথায়, ‘‘তৃণমূল আমাদের প্রার্থীদের ভয় দেখাচ্ছে ক্রমাগত। কেউই বাড়ির বাইরে বার হওয়ার সাহস পাচ্ছেন না। আমাদের প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দিতে দেওয়া হয় নি। মাত্র দু’জন মনোনয়ন পত্র জমা দিতে পেরেছেন।’’ একই অভিযোগ বামেদেরও। সিপিএমের বজবজ এরিয়া কমিটির সম্পাদক আখতার হোসেনের কথায়, ‘‘ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের কথা বজবজের সকলেই জানেন। প্রার্থীরা নিরাপত্তা পাননি বলেই অনেক ওয়ার্ডে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়া হয়নি। ভয় দেখিয়ে তৃণমূল বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করতে চাইছে।’’
বিরোধীদের অভিযোগ, মানতে নারাজ তৃণমূল। জাহাঙ্গিরের কথায়, ‘‘বিরোধীরা মিথ্যা অভিযোগ করছে। তারা প্রার্থী দেওয়ার লোক পাইনি। তৃণমূলের আমলে বজবজের দিকে দিকে উন্নয়ন হয়েছে। তাই মানুষ বিরোধীদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।’’
বজবজ পুরসভা হাতে এলেও সেখানকার দলীয় প্রার্থীদের নিয়ে বিতর্ক জিইয়ে রয়েছে তৃণমূল শিবিরে। বিতর্ক দানা বেঁধেছে দলের তরফে প্রকাশিত দ্বিতীয় তালিকার প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিতে না পারায়। প্রথম তালিকায় যাঁরা ছিলেন তাঁরাই মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। মঙ্গলবার বজবজ পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী হাসিবা খাতুনের সমর্থনে প্রচার করেন ফলতা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা অভিষেক ‘ঘনিষ্ঠ’ নেতা জাহাঙ্গির খান। সেই মিছিলকে ঘিরে ওই বিতর্ক তুঙ্গে। কারণ হাসিবা দলের অনুমোদিত প্রার্থী নন। তাঁর নাম প্রথম তালিকায় ছিল। ঘটনাচক্রে জাহাঙ্গিরের ওই মিছিলের দিন কয়েক আগেই তাঁর ওয়াই ক্যাটেগরির নিরাপত্তা প্রত্যাহার করে নিয়েছে নবান্ন।
মহেশতলা পুরসভাতেও তৃণমূলের প্রার্থী-বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের হয়ে মনোনয়ন দিয়েছেন দু’জন প্রার্থী। এক জন রাজিয়া খাতুন এবং অন্য জন শুভ্রা চক্রবর্তী। সংশোধিত তালিকায় শুভ্রার নাম রয়েছে। তাঁকে দলীয় প্রতীক দেওয়ার দাবিতে আলিপুরে প্রশাসনিক দফতরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে বসেছেন মহেশতলার বিধায়ক তথা পুরসভার বিদায়ী চেয়ারম্যান দুলাল দাস। পরে দলীয় নেতৃত্বের আশ্বাসে বিক্ষোভ তুলে নেন তিনি।
TMC BJP CPM Budge Budge