আজ উত্তরপ্রদেশে প্রথম দফার নির্বাচন, ৫৮ আসনে চলছে ভোটগ্রহণ
বলা হচ্ছে সেমিফাইনাল শুরু হয়ে গেল। আরও স্পষ্ট করে বললে এটাই প্রথম সেমিফাইনাল। পাঁচ রাজ্যের ভোট। আগামী বছর আরও একঝাঁক রাজ্যে বিধানসভার ভোট নির্ধারিত আছে। সেটি দ্বিতীয় সেমিফাইনাল। এই দুই সেমিফাইনালের পর ২০২৪ সালে ফাইনাল। অর্থাৎ লোকসভার নির্বাচন। আজ থেকে একমাস ধরে চলবে পাঁচ রাজ্যের ভোট। পাঞ্জাব, উত্তরাখণ্ড, গোয়া, মণিপুর এবং উত্তরপ্রদেশ। নামে পাঁচ রাজ্য হলেও গোটা দেশের নজর কিন্তু একটি রাজ্যের দিকেই। উত্তরপ্রদেশ। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ তো বটেই, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিরও অগ্নিপরীক্ষা। কারণ, তিনিই এই ভোটে যোগী আদিত্যনাথের পাশাপাশি প্রধান মুখ। শুধু একটি রাজ্য দখল নয়। উত্তরপ্রদেশ হল হিন্দি বলয়ের প্রাণকেন্দ্র। উত্তরপ্রদেশ হাতছাড়া হলে ২০২৪ সালের আগে তা চরম ধাক্কা বিজেপির কাছে।
জনমত সমীক্ষা অথবা রাজনৈতিক বিশ্লেষণ বলছে, পাঞ্জাব, উত্তরাখণ্ড এবং গোয়ায় বিজেপি এবার প্রথম থেকেই ব্যাকফুটে। বিজেপিও ধরে নিচ্ছে এই তিন রাজ্যে তাদের পারফরম্যান্স আশানুরূপ হবে না। এই প্রেক্ষাপটেই উত্তরপ্রদেশ জয় এখন বিজেপির প্রধান টার্গেট। কারণ একটাই। আজ উত্তরপ্রদেশের যে অংশে নির্বাচন শুরু হয়েছে, সেই পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে দলিত, কৃষক এবং জাঠ সম্প্রদায় তিন ভোটব্যাঙ্কই বিজেপির উপর ক্ষুব্ধ। এক বছর ধরে চলা কৃষক আন্দোলন পাঞ্জাব এবং পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে বিজেপিকে সবথেকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। ভোটের প্রাক্কালে কৃষক সংগঠনগুলি বিজেপিকে পরাস্ত করার ডাক দিয়ে বিজেপিকে আরও বড় অস্বস্তিতে ফেলেছে।
উত্তরপ্রদেশে বিজেপির নার্ভাস হওয়ার প্রধান কারণ এই প্রথম এই রাজ্যে ভোট হতে চলেছে কমবেশি দ্বিমুখী। সরাসরি লড়াই বিজেপি বনাম সমাজবাদী পার্টির। মোদী-যোগী বনাম অখিলেশ যাদব। বিজেপি বিরোধী ভোট এবার বিভাজিত হওয়ার সম্ভাবনা কম। বহুজন সমাজ পার্টি কিংবা কংগ্রেস এই ভোটে তুলনামূলকভাবে পিছিয়ে পড়েছে। সেই কারণেই এক বছর আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পরাজয়ের যন্ত্রণা ভুলতে উত্তরপ্রদেশ জয় বিজেপির কাছে এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ।
আজ থেকে শুরু হয়ে ৭ মার্চ পর্যন্ত ভোটপর্ব চলবে। ১০ মার্চ ফলপ্রকাশ। পাঁচ রাজ্যের ভোট নিয়ে কতটা টেনশনে বিজেপি? উত্তরপ্রদেশে ভোটের প্রাক্কালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বুধবার সাক্ষাৎকার দিলেন সংবাদ সংস্থাকে। যেখানে তিনি ডবল ইঞ্জিন সরকারের পক্ষে সওয়াল করলেন দফায় দফায়। মোদি বলেন, আয়ুষ্মান স্বাস্থ্য বিমা থেকে ওয়ান নেশন ওয়ান রেশন কার্ড ইত্যাদি প্রত্যেক প্রকল্প রূপায়ণে কোনও বাধা আসবে না। মোদীর অভিযোগ, বিভিন্ন রাজ্য আমাদের প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে বাধা দিচ্ছে। সেই কারণেই ডবল ইঞ্জিন সরকারের প্রয়োজন বলে মোদির দাবি। কিন্তু উত্তরপ্রদেশ জয়ে মরিয়া মোদি এদিন অখিলেশ যাদবের পালের হাওয়া কাড়তে দাবি করেন, অন্য কেউ নয়, আমিই প্রকৃত সমাজবাদী।