আরও একবার ২০১৮ হলে… ফেসবুকে পুরভোট নিয়ে সাবধানবাণী দেবাংশুর, শুরু বিতর্ক
“আরও একবার ‘২০১৮’ হলে, আরও একটা ‘২০১৯’ কিন্তু সময়ের অপেক্ষা”, পুরভোটের মুখে ফেসবুকে বিস্ফোরক পোস্ট তৃণমূলের যুব নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্যের। তাঁর ওই মন্তব্য নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার দেবাংশু ফেসবুক পোস্টে লেখেন, “ব্যক্তিগত স্বার্থে কিছু মানুষ ভোটে অশান্তি করেন। তাই লোকাল বডির ভোটে বেশি অশান্তি হয়। পুলিশকে ১০০ শতাংশ ‘ফ্রি হ্যান্ড’ দিতে হবে। প্রয়োজনে বিধানসভার দ্বিগুণ সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট হোক।”
তাঁর সংযোজন, “বারবার সবটা ‘২০২১’-এর মতো হবে না। আর হাত জোড় করে বাড়ি বাড়ি ঘুরলেও কিন্তু মানুষ ক্ষমা করবে না। যারা অশান্তি করে, ভবিষ্যতে তারা অনায়াসে ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে ‘সেটিং’ করে নিতে পারবেন। তখন মার খেতে হবে কর্মীদের। মরতে হবে সাধারণ সদস্যদের। কিছু স্বার্থান্বেষী বদমায়েশের জন্য দলের মুখে কালি লাগতে দেবেন না। একজন অতি সাধারণ কর্মী হিসেবে অনুরোধ রইল।”
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে বাংলায় পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়েছিল। ওই ভোট চলাকালীন রাজ্যের বিরোধী দলগুলি শাসক দল অর্থাৎ তৃণমূলের বিরুদ্ধে “সন্ত্রাসে”র অভিযোগ তুলেছিল। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের দাবি, এদিন ওই প্রসঙ্গই টেনেছেন দেবাংশু। ঠিক তার পরের বছর অর্থাৎ ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচন হয়। যে নির্বাচনে রাজ্যে BJP -র অভূতপূর্ব উত্থান ঘটে।
যদিও একুশের বিধানসভা নির্বাচনে সেসব ফ্যাক্টর কাজে আসেনি। তার আগেই ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের টিম I-PAC -কে তৃণমূলের নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজি ভাবার দায়িত্ব দেওয়া হয়। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছিল, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ই PK- কে বঙ্গে নিয়ে আসেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, PK -র পরামর্শে ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’ করে তৃণমূল। আবারও আস্থা অর্জন করে শাসক দল।
বর্তমানে আবারও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় একের পর এক পুরসভার দখল নিতে শুরু করেছে শাসক দল। সাঁইথিয়া, বজবজ, দিনহাটা পুরসভা ইতিমধ্যেই তৃণমূলের দখলে এসেছে। আর এই পরিস্থিতির দাঁড়িয়ে দেবাংশু ভট্টাচার্যের ফেসবুক পোস্টকে ‘সতর্কবার্তা’ হিসেবেই দেখছে ওয়াকিবহাল মহল। এই প্রেক্ষাপটে দেবাংশু ভট্টাচার্যের পোস্টকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। কলকাতা পুরভোটের আগে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেছিলেন, “কেউ যদি অপকর্ম করে দলকে কলুষিত করে, তাহলে সে যত বড় নেতার ছত্রছায়ায় থাকুক না কেন, তাঁকে বহিষ্কার করা হবে।”