পাড়ায় শিক্ষালয় – বিরোধীদের মুখে ছাই দিয়ে ব্যাপক সাড়া এই কর্মসূচিতে
সব সমস্যার সমাধান আছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে। সরকারি পরিষেবা সরাসরি মানুষের ঘরের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার পর এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকারের লক্ষ্য শিক্ষাকে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া।
যদিও রাজ্য সরকার অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের জন্য বিদ্যালয়ে পঠন পাঠনের অনুমতি আগেই দিয়েছিল, মুখ্যমন্ত্রী ছোট ক্লাসের শিক্ষার্থীদের স্কুলে এখনই ফেরানোর বিরোধী ছিলেন। কারণ অল্পবয়সী বাচ্চারা কোভিড প্রোটোকল মেনে চলতে পারবে না। তাহলে সমাধান? আশেপাশের পার্ক, খেলার মাঠ বা অন্যান্য খোলা জায়গায় ক্লাস করা।
যেমন ভাবনা তেমনি কাজ। শুরু হয়ে গেল ‘পাড়ায় পাড়ায় শিক্ষালয়’ কর্মসূচি। রবীন্দ্র ভাবনায় তৈরি এই কর্মসূচির লক্ষ্য শিশুদের খোলা জায়গায় জড়ো করা এবং তাদের ভার্চুয়াল পঠন পাঠনের বদলে সরাসরি পড়াশোনা বা খেলাধুলোয় ফের অভ্যস্ত করা।
ইতিমধ্যেই মমতার ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্প ব্যাপক সফলতা পেয়েছে। বিভিন্ন সামাজ কল্যাণমূলক প্রকল্পের অধীনে নানারকম সুবিধা পেতে রাজ্যবাসীর হয়রানির অবসান হয়েছে এই কর্মসূচির হাত ধরে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী নিশ্চিত করছেন যে জনগণের সমস্যার সমাধান যেন তাদের দরজায় পৌঁছে দেওয়া যায়। মমতা এটাও নিশ্চিত করেছেন যে দলের তরুণ সদস্যরা, যারা পাড়ার ক্লাব চালান, তারাও যেন নাগরিক সমস্যা সমাধানের এই স্থানীয় শিবিরগুলিতে নিয়োজিত থাকেন। দুয়ারে সরকার কর্মসূচি তৃণমূল সরকারকে ব্যাপকভাবে রাজনৈতিক সাফল্য এনে দিয়েছে।
আর তাই দুয়ারে সরকারের পর দুয়ারে শিক্ষা। পঠন পাঠনের এই নয়া উদ্যোগে আশেপাশের পার্ক এবং খোলা জায়গাগুলি ব্যবহার করা হবে, যাতে শিশুরা খোলা জায়গায় পড়াশোনা করতে পারে আর সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। লকডাউনের দু’বছরে ভয়ঙ্কর প্রভাব পড়েছে পড়ুয়াদের মনের ওপর বলে মত বিশেষজ্ঞদের। স্কুলছুটের সংখ্যাও বেড়েছে এবং শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যর ওপর ভয়ঙ্কর প্রভাব পড়েছে। অনেক অভিভাবক তাদের বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাতে চান, যাতে তারা শিখতে, খেলতে এবং বন্ধুদের সাথে মিশতে পারে।
এই কর্মসূচির প্রথম দিনই বিপুল সাফল্য দেখা গেছে। ৭৫০০০ কেন্দ্রে প্রায় ৩০ লক্ষ ছাত্র- ছাত্রী পড়তে এসেছে। এই সাফল্যে খুশি সরকারি আধিকারিক এবং অভিভাবকরা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই শিবিরগুলিতে মিড-ডে মিলের ওপরেও জোর দিচ্ছেন। কিন্তু খাবার বসে খাওয়ানো হবে নাকি পড়ুয়াদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে তা এখন আলোচনাস্তরে। কিন্তু তা সত্ত্বেও ছেলেমেয়েদের স্কুলের পরিবেশে পাঠাতে পেরে খুশি অভিভাবকরা।