কাজে দিল মোষের মাংসের টোপ, খাঁচাবন্দি কুলতলির বাঘিনী
বাঘকে খাঁচাবন্দি করতে আগে টোপ হিসেবে দেওয়া হয়েছিল ছাগলের মাংস। এবার ছাগল নয়, খাঁচায় দেওয়া হয় প্রায় আট কেজি মহিষের মাংস। সেই লোভেই বৃহস্পতিবার ভোর ৩টে নাগাদ খাঁচাবন্দি হল সুন্দরবনের বাঘিনী। স্বস্তি মিলল কুলতলির পেটকুলচাঁদ ও সাবুর আলি কাঁটা এলাকার গ্রামবাসীদের। দক্ষিণ ২৪ পরগনা বন বিভাগীয় আধিকারিক মিলন মণ্ডল বলেন, সম্ভবত এটি বাঘিনী। মহিষের মাংসের টোপ দিয়ে খাঁচাবন্দি করেছেন বনকর্মীরা। বয়স ৫ থেকে ৬ বছর। স্বাস্থ্যপরীক্ষার পরে গভীর জঙ্গলে ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সেটি সুস্থই আছে। বনদপ্তর সূত্রের খবর, বাঘিনীকে বনি ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে ঝড়খালি থেকে দুই প্রাণী চিকিৎসক এসে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করবেন। তারপরে শুক্রবার সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলে ছাড়া হবে তাকে। অন্যদিকে, দুইদিন আগে রায়দিঘি রেঞ্জের ভুবনেশ্বরী ঠাকুরান নদীর চরে বাঘের পায়ের ছাপ দেখা যায়। বাঘের অস্তিত্ব বুঝতে নজরদারি চালাচ্ছেন বনকর্মীরা।
বুধবার চিতুরি জঙ্গলের কাছে ঘাপটি মেরে ছিল এই বাঘিনীটি। কিন্তু পায়ের ছাপ দেখা যায় লোকালয়ের কাছে পেটকুলচাঁদ সেতু সংলগ্ন জঙ্গলের কাছে নদীর চরে। বাঘিনীটির অবস্থান আন্দাজ করে জঙ্গলের চারপাশ জাল দিয়ে ঘিরে দেন বনকর্মীরা। তাকে বন্দি করার জন্য পাতা হয় খাঁচা। কিন্তু ছাগলের বদলে টোপ হিসেবে দেওয়া হয় আট কেজি মহিষের মাংস। রাতভর ওঁত পেতে কিছু দূরেই বসে থাকেন বনকর্মীরা। মাংসের গন্ধ পেয়ে খাঁচায় ঢুকে পড়ে বাঘিনী। দরজা বন্ধের সময়ে ফাঁদ বুঝতে পেরে একবার গর্জন করে উঠেছিল সে। কিন্তু তখন অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে।
এর আগে কুলতলি থেকে শুরু করে মৈপীঠ বা গোসাবায় বাঘকে খাঁচাবন্দি করতে দেওয়া হয়েছিল ছাগলের টোপ। কিন্তু এবার কেন মহিষের মাংস? দক্ষিণ ২৪ পরগনা বন বিভাগীয় আধিকারিক বলেন, এক বেসরকারি সংস্থা ছাগল খাঁচায় দেওয়া অপরাধ মনে করে সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ করেছিল। তখনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, আর ছাগল টোপ হিসেবে খাঁচায় দেওয়া হবে না। তাই মহিষের মাংস জোগাড় করে তা খাঁচায় দেওয়া হয়। জানা গিয়েছে, বাঘিনীকে খাঁচাবন্দি করার পর প্রচুর মিষ্টি জল খাওয়ানো হয়। বনবিভাগীয় এক আধিকারিক বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, আজমলমারি ১২ জঙ্গল থেকে একটি বাঘ ও একটি বাঘিনী বেরিয়ে পড়েছিল। বাঘটি ফের জঙ্গলে ঢুকে গিয়েছে কি না, তাও দেখা হচ্ছে।