ক্রমাগত বিতর্কিত মন্তব্যের জের, মদন মিত্রকে শোকজ তৃণমূলের
লজ্জিত বলে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছিলেন। তবুও ছাড় মিলল না! মদন মিত্রের গতকালের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে দল। তাঁকে শো-কজ করা হচ্ছে। শো-কজের উত্তরে সন্তুষ্ট না হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে খবর তৃণমূল সূত্রে।
গতকাল সকালে বিস্ফোরক মন্তব্যের পর রাতেই ক্ষমা চেয়ে নেন মদন মিত্র (Madan Mitra)। ফেসবুক লাইভে (Facebook Live) বললেন, তিনি লজ্জিত। প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির সঙ্গে টানলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) তুলনা।
ফেসবুক লাইভে এসে গতকাল রাতে মদন মিত্র বলেন, ‘সাংবাদিকরা আমাকে জিজ্ঞেস করেন, পৃথিবীতে আমার কাছে সবথেকে সুন্দর ও পবিত্র কে। আমি বলেছি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরের নাম বলি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরেই আমার মুখ থেকে বেরিয়ে গেছে কেউ মোটা, কেউ গোটা, কেউ সোঁটা। দয়া করে আমি আমার সমস্ত নেতৃত্বের কাছে করজোরে ক্ষমা চাইছি। মদন মিত্র কেন মুখ দিয়ে বাজে ভাষা বের করবে! আমি লজ্জিত।’
এদিন ফেসবুক লাইভে এসে মদন মিত্র জানান যে তাঁর বাড়ি থেকেও তাঁকে ‘ভর্ৎসনা’ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘বাড়ি থেকে আমাকে বলেছে আমার রাজনীতি (Politics) ছেড়ে দেওয়া উচিত।’
শীর্ষ নেতৃত্বের কড়া বার্তার পরেও গতকাল ফের বিস্ফোরক মন্তব্য করেন মদন মিত্র। দুর্গাপুরে দলীয় কর্মসূচিতে ভরা সভায় দাঁড়িয়ে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘ফেসবুকে সুব্রত বক্সী লিখেছেন মমতা ছাড়া কারও ছবি নয়। মমতা (Mamata Banerjee) ছাড়া আর কারও ছবি থাকবে না কেন? যারা যুব তৃণমূল করে, তারা তো অভিষেকের ছবি দেবেই। প্রতি মুহূর্তে দলে এত পরিবর্তন হচ্ছে।’
এরপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মদন মিত্র বলেন, ‘আমি ফ্রি থাকলে শেলি, কিটস, রবীন্দ্রনাথ, শরত্চন্দ্রের লেখা পড়ি। আমি সৌগত রায়ের লেখা পড়ি না। আমার অভিষেকের মুখ ভাল লাগে। দলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর অভিষেকের মুখই ভাল। বাকিরা কেউ গোটা, কেউ মোটা, কেউ সোঁটা, কেউ সরু’।
দল যে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে তা নাকি জানেনই না মদন মিত্র। সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানান, এখনও কোনও চিঠি পাননি তিনি। আত্মপক্ষ সমর্থন করে মদনের জবাব, আমার বাড়িতে অনেক মোটা লোক আছে। আমার পিসি, আমার মাসি। আমি বলেছি, মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়, অভিষেক ব্যানার্জির পর আমার মোটা-সোটা-গোটা কাউকে ভালো লাগে না। তাও রাতে আবার বলেছি যে, কেউ যদি দুঃখ পেয়ে থাকে, তাহলে আমি ক্ষমাপ্রার্থী। মদনের বক্তব্য, দল যদি চিঠি পাঠায়, আমি নিয়ে নেব। এখন কোন ঠিকানায় পাঠিয়েছে, খোঁজ নিচ্ছি। তৃণমূল ভবনেও খোঁজ নিচ্ছি। চিঠি এলে উত্তর দেব, যা শাস্তি দেবে, মাথা পেতে নেব। কোনও অসুবিধা নেই। শুধু দলের কাছে এটাই বলব যে, দোষী ছাড়া পেয়ে যাক আপত্তি নেই, নির্দোষ যেন শাস্তি না পায়। যাই হোক, আমি তৃণমূলে ছিলাম, তৃণমূলে আছি, তৃণমূলে থাকব, যদি তৃণমূল রাখে। আর যদি তৃণমূল তাড়িয়ে দেয়, তাহলে ওই বাদামওয়ালার মত বলতে হবে কাঁচা বাদাম।