পুরভোটের আগেই বিধ্বস্ত বিজেপি, ডানকুনিতে দলীয় পদ থেকে ইস্তফা প্রায় ৫০ পদাধিকারীর
অন্তর্দ্বন্দ্বের জেরে ফের বিধ্বস্ত পদ্ম-পরিবার। পুরভোটের আগে এবার হুগলির ডানকুনি পুরসভার বিজেপি শিবিরে নেমে এল ভাঙন। বৃহস্পতিবার বিজেপি নেতৃত্বকে চিঠি দিয়ে পদত্যাগ করলেন ডানকুনি বিজেপি-র প্রায় ৫০ জন বিজেপি পদাধিকারী। তাঁদের অভিযোগ, অর্থের বিনিময়ে প্রার্থী করা হয়েছে ডানকুনিতে। ডানকুনিতে পুরভোট আগামী ২৭শে ফেব্রুয়ারি। সদ্যই শেষ হয়েছে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর্ব। এর মধ্যেই ধাক্কা গেরুয়াশিবিরে। ডানকুনিতে দলের বিভিন্ন মণ্ডল, মোর্চা, ওয়ার্ড এবং বুথের দায়িত্বে থাকা জনা পঞ্চাশেক বিজেপি নেতা-কর্মী ইস্তফা দিয়েছেন বৃহস্পতিবার। পুরভোটে প্রার্থী বাছাই নিয়ে গুরুতর অভিযোগ তাঁদের। হুগলি জেলায় বিজেপির যুব মোর্চার সদস্য রাজ সিংহের কথায়, “পুরভোটে ২১ জন প্রার্থী দেওয়া হয়েছে কোনও রকম আলোচনা ছাড়া। অর্থের বিনিময়ে প্রার্থী করা হয়েছে। আমরা এটা মেনে নিতে পারিনি। তাই আমরা সকলে দলীয় পদ থেকে ইস্তফা দিলাম।”
উল্লেখ্য, দলের টিকিট না পেয়ে ডানকুনির বিজেপি নেতা প্রণব পাল নির্দল প্রার্থী হয়েছেন ডানকুনির ৯ নম্বর ওয়ার্ডে। ওই ওয়ার্ডে বিজেপির প্রার্থী শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি দেবাশিস মুখোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “আমার সঙ্গে কয়েক জনের কথা হয়েছে। স্থানীয় বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে কথা না বলে প্রার্থী করা হয়েছে। তাই ক্ষোভ থাকা স্বাভাবিক। তবে দু-এক দিনের মধ্যে সব ঠিক হয়ে যাবে।” বিজেপির বিভিন্ন পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন যাঁরা তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে সহানুভূতির বার্তা দিয়েছে তৃণমূল। ডানকুনি শহরের তৃণমূল সভাপতি তথা আট নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী প্রকাশ রাহার কথায়, “এটা হওয়ারই ছিল। কারণ যাঁরা পদত্যাগ করেছেন, তাঁরা এখানে বিজেপি-র ভিত তৈরি করেছেন। সেখানে বিধানসভা ভোটের সময়ে আমাদের দল থেকে যাওয়া কিছু তৎকাল বিজেপি লাফালাফি করছে। তাদের ওঁরা মানতে পারছেন না। অনেকে আছেন, যাঁরা আমাদের দলে আসার আবেদন করেছেন। দল হয়তো তাঁদের ঝাড়াইবাছাই করে নেবে।” পাশাপাশি, পুরভোটের আগে ভাঙন ধরেছে চুঁচুড়ার বিজেপিতেও। বৃহস্পতিবার জনা পঁচিশেক বিজেপি কর্মী তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বলে জোড়াফুল শিবির সূত্রে দাবি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার চুঁচুড়ার কামারপাড়ায় ২৩, ২৪ এবং ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের কর্মীদের নিয়ে সভা করেন স্থানীয় বিধায়ক অসিত মজুমদার। সেখানেই কংগ্রেস ছেড়ে দলে ফেরেন দেবাশিস যশ নামে এক তৃণমূল নেতা। প্রার্থী না হওয়ায় কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন দেবাশিস। তবে সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে বৃহস্পতিবার তৃণমূল শিবিরেই ফিরেছেন দেবাশিসবাবু।