রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

মনোনয়ন প্রত্যাহার একাধিক বিজেপি প্রার্থীর, সিউড়ি পুরসভার দখল নিতে চলেছে তৃণমূল

February 12, 2022 | 2 min read

সাঁইথিয়া, দিনহাটার পর এবার সিউড়ি পুরবোর্ডেরও দখল নিতে চলেছে শাসকদল। শুক্রবার মনোনয়ন প্রত্যাহারের প্রথম দিনেই গেরুয়া শিবিরের একের পর এক উইকেট পড়ল। এদিন ১৫টি ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিলেন। কার্যত ১৫টি ওয়ার্ড বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হতে চলেছে শাসকদল। সেই হিসেবে নির্বাচনের আগেই আরও একটি পুরবোর্ড শাসকদলের ঝুলিতে গেল। এদিন এই ‘সুখবর’ আসতেই সবুজ আবিরে কার্যত উৎসবে মেতে ওঠেন দলের কর্মী-সমর্থকরা। 

সিউড়ির পাশাপাশি এদিন দুবরাজপুরের ১১জন, সাঁইথিয়ার একজন, রামপুরহাটের ছ’জন ও বোলপুরের সাতজন বিরোধী প্রার্থী এদিন মনোনয়নপত্র প্রতাহার করেন। যদিও এজন্য তৃণমূলকেই কাঠগড়ায় তুলছে জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। তাদের দাবি, বিজেপি প্রার্থীদের ভয় দেখিয়ে মনোনয়ন তুলে নিতে বাধ্য করা হয়েছে। শাসকদল অবশ্য বিজেপির কথায় তেমন আমল দিতে রাজি নয়। ভোটের হাওয়া বুঝতে পেরেই বিরোধীরা নিজেদের সরিয়ে নিচ্ছে বলে শাসকদলের দাবি।

 কোনও প্রার্থী না পাওয়ায় সাঁইথিয়ার পুরভোট থেকে আগেই ছিটকে গিয়েছে বিজেপি। ১৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৩টি ওয়ার্ডে শাসকদল বাদে কোনও বিরোধী প্রার্থী মনোনয়ন জমা করতে পারেননি। এদিন আরও একজন বিরোধী প্রার্থী মননোয়ন তুলে নেওয়ায় ১৪টি ওয়ার্ড বিরোধীশূন্য হতে চলেছে। 

প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য শুক্র ও শনিবার, এই দু’দিন নির্বাচন কমিশনের তরফে দিন ঠিক করে দেওয়া হয়। এদিন মহকুমা শাসকের দপ্তরের সামনে অফিস খোলার আগে থেকেই লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন বিরোধী দলের প্রার্থীরা। প্রত্যেকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করার জন্য কাগজপত্র নিয়ে হাজির হন। অফিস খুলতেই চলে একের পর এক প্রার্থীর প্রার্থীপদ প্রত্যাহার। আর উল্টোদিকে শাসকদলের প্রার্থীদের কাছে সে খবর যেতেই ওয়ার্ডের কর্মীদের নিয়ে শুরু হয়ে যায় সবুজ আবিরখেলা। কর্মীরা বুঝে যান, আবারও সিউড়ি পুরবোর্ড তাঁদের দখলে আসছে। আগেই বিরোধী প্রার্থীর অভাবে ৮ নম্বর ওয়ার্ডে শাসকদলের প্রার্থীর জয় নিশ্চিত হয়ে যায়। এদিন ১৫জন বিজেপি প্রার্থী প্রার্থীপদ প্রত্যাহার করেন। সেগুলি হল ১, ৫, ৬, ৭, ৮, ৯, ১০, ১৩, ১৪, ১৫, ১৬, ১৭, ১৮, ২০ ও ২১ নম্বর ওয়ার্ড। সেই হিসেবেই আবারও সিউড়ি পুরবোর্ড শাসকদলের হাতে যাওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা।

দুবরাজপুরেও মোট পাঁচটি ওয়ার্ড বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হওয়ার পথে শাসকদল।  পাশাপাশি রামপুরহাটেও এদিন ছ’জন বিরোধী দলের প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন। 

মনোনয়ন প্রতাহারের জন্য এখনও একদিন বাকি আছে। রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন উঠেছে, বিজেপি প্রার্থীরা যেভাবে নির্বাচন থেকে সরে যাচ্ছেন, তাতে হয়তো এবার জেলার পুরভোটে তারা অংশগ্রহণই করবে না। বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, বীরভূম ভয়, সন্ত্রাসের জেলায় পরিণত হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করার রাস্তা খুঁজে পাচ্ছি না আমরা। নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষভাবে কাজ করেনি। সিউড়ি পুরসভায় আমরা লড়ব কি না তা নিয়ে শনিবার সিদ্ধান্ত জানানো হবে। যদিও বিজেপির অভিযোগে পাত্তা দিতে রাজি নয় শাসকদল। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল বলেন, আমি ভোটের পক্ষে আগেও ছিলাম, এখনও আছি। বিরোধীদের ক্ষমতা নেই তো মনোনয়নই জমা কেন দিয়েছিল কে জানে! ওদের কর্মীদের বল নেই বলেই এই অবস্থা হয়েছে।  সিউড়িতে মহকুমা শাসকের দপ্তরে মনোনয়ন প্রত্যাহারের ভিড়।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#BJP Bengal, #Trinamool Congress, #Municipal Election

আরো দেখুন