কর্ণাটকের উল্টো ছবি কাশ্মীরে, হিজাব না পরায় অনলাইন রোষের শিকার ছাত্রী
উচ্চমাধ্যমিকে তিনি রাজ্যের মধ্যে প্রথম হয়েছেন। ৫০০’এর মধ্যে প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৯। জেলা প্রশাসন স্বীকৃতিও দিয়েছে। মিলেছে বহু সম্মান। অথচ, এ হেন পড়ুয়াকে উৎসাহ দেওয়া তো দূরের কথা, কাশ্মীরের মৌলবাদীরা উলটে তাঁকে আক্রমণ করছে। কারণ, তিনি হিজাব (Hijab Row) পরেন না।
স্রেফ হিজাব না পরায় হুমকি দেওয়া হচ্ছে কাশ্মীরের দ্বাদশ শ্রেণির টপার আরুজা পারভিজকে (Aroosa Parviz)। মৌলবাদীদের বক্তব্য, ‘যে মহিলা হিজাব পরেন না তিনি সাচ্চা মুসলিম হতে পারেন না।’ সোশ্যাল মিডিয়ায় কাশ্মীরের উচ্চমাধ্যমিক টপারকে নিয়ে শনিবার সকাল থেকেই শুরু হয়ে যায় আক্রমণ। বলা হয়, কর্ণাটকের প্রতিবাদী কন্যা মুসকানকে দেখে কিছু শেখা উচিৎ আরুজের। কীভাবে নিজের ধর্মকে সম্মান করতে হয়, সেটা জেনে রাখা উচিৎ তাঁর।
যদিও, এসব আক্রমণের মুখে দমে যাননি কাশ্মীরের ওই প্রতিভাবান তরুণী। বরং, মৌলবাদীদের পালটা দিয়েছেন তিনি। আরুজা পারভিজ বলছেন, “আমি ইসলামের সব নিয়ম মানি। নিজেকে ভাল মুসলিম প্রমাণ করার জন্য হিজাব পরার দরকার নেই।” এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে কাশ্মীরের ওই পড়ুয়া বলেন, “আমি আল্লাহকে বিশ্বাস করি। ইসলামিক নিয়ম মেনে চলি। ভাল মুসলিম হতে হলে আমাকে হিজাব পরতেই হবে, তার কোনও মানে নেই।” আরুজা সাফ বলে দিচ্ছেন, কে কী বলল না বলল তাতে তাঁর কিছু যায় আসে না। তবে, এই সব কথাবার্তা শুনে তাঁর বাবা-মা চিন্তিত।
বস্তুত, আরুজা পারভিজ একা নন। মুসলিম বুদ্ধিজীবীদের একটা বড় অংশ একে একে হিজাব নিয়ে মুখ খুলতে শুরু করেছেন। গতকালই কেরলের রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান (Arif Mohammad Khan) বলেছেন, ইসলামে হিজাব একেবারেই বাধ্যতামূলক নয়। শিখদের ক্ষেত্রে যেমন পাগড়ি বাধ্যতামূলক, ইসলামে একেবারেই তেমন নয়। খানের বক্তব্য, কোরানে ৭ বার হিজাবের কথা বলা হয়েছে, কিন্তু সেটা মহিলাদের জন্য বাধ্যতামূলক তা বলা হয়নি। কেরলের রাজ্যপালের সাফ কথা, যারা মুসলিম মহিলাদের উন্নতির পথে বাধা দিতে চায় তারাই হিজাবের পক্ষে।