পুষ্পা ছবির আইটেম সঙের সুরে প্রচার সিপিএমের
‘কী চাইছে অশোকনগর’, অ্যাপের মাধ্যমে মানুষের চাহিদা জানার চেষ্টা করে চমক দিয়েছিল সিপিএম নেতৃত্ব। এবার জনপ্রিয় দক্ষিণী সিনেমা পুষ্পার ‘ও আন্তাভা’ গানের আদলে শহরবাসীর অভাব অভিযোগ তুলে ধরে নজর কাড়ল বামেরা। ওই গান ইতিমধ্যে শহরে ভাইরাল হয়েছে। ওই গানকে হাতিয়ার করে যুব ভোটারদের পাশাপাশি শহরবাসীকে নিজেদের কাছে টানতে চাইছেন মরিয়া বাম নেতারা। যদিও এই উদ্যোগকে শাসক শিবির রাজনৈতিক চমক বলে উড়িয়ে দিয়েছে। শাসক দলের নেতাদের দাবি, উন্নয়নের নিরিখে এবারও ঘাসফুলে আস্থা রাখবেন অশোকনগরের মানুষ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের সময় থেকে অশোকনগরকল্যাণগড় পুরসভা এলাকায় বামেরা তৃতীয় শক্তিতে পরিণত হয়েছে। লোকসভা ভোটে মোট ২৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে বিজেপি ১৭টিতে এগিয়েছিল। তৃণমূল এগিয়েছিল ছ’টি ওয়ার্ডে। কিন্তু গত বিধানসভা ভোটে এই হিসাব কার্যত উল্টে যায়। তৃণমূল ১৭টি ওয়ার্ডে এগিয়ে যায়। বিজেপি মাত্র ছ’টি ওয়ার্ডে এগিয়েছিল। কিন্তু পুরসভা ভোটে মাটি কামড়ে লড়াইয়ে নেমেছেন বাম নেতৃত্ব। অশোকনগরের মানুষ কেমন উন্নয়ন চান, সপ্তাহ দুয়েক আগে অ্যাপের মাধ্যমে জানতে চিয়েছিল সিপিএম। এমনকী যেসব বাড়ির সদস্যরা মোবাইল ব্যবহারে সড়গড় নন, তাঁদের বাড়িতে ছাপানো কাগজ নিয়ে মতামত জানার চেষ্টা হয়েছিল। এবার সিপিএম সুপারহিট পুষ্পা সিনেমার জনপ্রিয় গানকে হাতিয়ার করেছে। ওই গানের মাধ্যমে পাড়ায় মস্তানি, দুর্নীতি, কাটমানির মতো একাধিক ইস্যু তুলে ধরা হয়েছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন স্ট্রিট কর্নার ও কর্মসূচির আগে ওই গান বাজানো হচ্ছে। ভিন্ন রাজনৈতিক মানসিকতার অনেকে ওই গানের তালে হাসিমুখে শরীরও দোলাচ্ছেন।
অশোকনগরের প্রাক্তন বাম বিধায়ক তথা সিপিএম নেতা সত্যসেবী কর বলেন, খুব সহজে সাধারণ মানুষের কাছে আমরা পৌঁছতে চাইছি। তাই ওই জনপ্রিয় গানের সুরের মাধ্যমে অশোকনগরের দুর্নীতি, কাটমানি, বেহাল পরিষেবা তুলে ধরা হয়েছে। আগে অ্যাপের মাধ্যমে অশোকনগরবাসীর মন বোঝার চেষ্টাও সফল হয়েছে। মোট ৯ হাজার ৭২৬ জন মানুষ লিঙ্কে ক্লিক করে তাঁদের মতামত জানিয়েছেন। লোকসভা ও বিধানসভা ভোট আলাদা বিষয়। মানুষ এবার পুরসভা থেকে দুর্নীতির শিকড় উপড়ে ফেলতে চাইছে। মানুষ ভোট দিতে পারলে বামেরাই ফিরবে। বর্তমান বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী বলেন, কোনও রাজনৈতিক দলের জনভিত্তি নষ্ট হলে তারা সস্তা ও চটকদারি বিষয়কে সামনে এনে বাজিমাত করতে চায়। তাই একের পর এক ভোটে বামেরা, ‘টুনির মা’, ‘টুম্পা সোনা’র মতো নানান গানকে আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চেয়েছিল। কিন্তু এইসব করে তারা নিজেদের বালখিল্যের জায়গায় নামিয়েছে। এবারও ওদের চটকদারি রাজনীতির কারণে নতুন গান এনেছে। কিন্তু ওতে অশোকনগরের শিক্ষিত ও প্রগতিশীল মানুষ ভুলবেন না।