আজ শিলিগুড়ি পুরসভার তৃণমূলের কাউন্সিলরদের উত্তরকন্যায় ডাক মমতার
শিলিগুড়ি পুরসভার (Siliguri Municipal Corporation) সমস্ত কাউন্সিলরকে ডেকে পাঠালেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)৷ মঙ্গলবার বেলা ১২টায় উত্তরকন্যায় (Uttarkanya) ডেকে পাঠিয়েছেন৷ সেখানেই পুরবোর্ড গঠন-সহ শিলিগুড়ির সার্বিক উন্নয়ন নিয়ে কথা হতে পারে বলে সূ্ত্রের খবর৷ শিলিগুড়ি পুরসভায় ঐতিহাসিক জয়ের পর সোমবার দুপুরে শিলিগুড়ির মেয়র হিসেবে গৌতম দেবের নাম ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছেন তৃণমূলের প্রার্থী গৌতম দেব।
সোমবার বিকেলে শিলিগুড়ি পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ নৌকাঘাট মোড়ে নতুন কাউন্সিলরদের অভিন্দন জানানোর পাশাপাশি শিলিগুড়িবাসীকে ধন্যবাদ জানান৷ ঘোষণা করে মাত্র ৬ ঘণ্টায় শিলিগুড়ি থেকে কলকাতা যাতায়াতের ব্যবস্থা করবে তাঁর সরকার৷ সার্বিকভাবে শিলিগুড়ির উন্নয়ের কাজ করবে নতুন পুরবোর্ড৷ তাই মনে করা হচ্ছে নতুন কাউন্সিলরদের সঙ্গে শিলিগুড়ির সার্বিক মানোন্নয়নের জন্য আলোচনা করবেন মুখ্যমন্ত্রী৷
শিলিগুড়িতে তৃণমূলের জয় নিঃসন্দেহে ঐতিহাসিক৷ ২০১১-এর বিধানসভা ভোটের পর থেকে রাজ্যের প্রায় সব পুরসভার দখল নিয়েছে তৃণমূল৷ ব্যতিক্রম ছিল শিলিগুড়ি৷ পুরভোটে শাসকদলের ভোট লুঠের চেষ্টার হাত থেকে নিজেদের ভোট রক্ষা করার ডাক দিয়ে বিরোধীদের নিয়ে জোটের ডাক দিয়েছিলেন অশোক ভট্টাচার্য৷ এই ছকেই ২০১৫-র পুরভোটে শিলিগুড়িতে বাজিমাত করেন বাম আমলের পুরমন্ত্রী৷ তারপরই গোটা রাজ্যে তা ‘শিলিগুড়ি মডেল’ বলে পরিচিত পায়৷ অশোকের ‘শিলিগুড়ি মডেল’ অক্সিজেন জুগিয়েছিল আইসিইউ-তে চলে যাওয়া বামেদের৷ এই মডেলকে সামনে রেখেই রাজ্যে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখতে শুরু করে বামেরা৷ কিন্তু ২০১৬ এবং ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে সেই স্বপ্ন তাদের পূরণ হয়নি৷ এবার শিলিগুড়ির মাটিতেই ধরাশায়ী হল ‘অশোক মডেল’৷
২০২০ সালে পুরবোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। তার মধ্যেই হানা দেয় অতিমারি করোনা। এর ফলে ভোট করা সম্ভব হয়নি রাজ্যের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া অন্যান্য পুরনিগমের মতো শিলিগুড়িতেও রাজ্য সরকার প্রশাসকমণ্ডলী বসানোর সিদ্ধান্ত নেয়। সৌজন্য দেখিয়ে অশোক ভট্টাচার্যকেই প্রশাসকমণ্ডলীর প্রধান করার প্রস্তাব দেয় রাজ্য সরকার। কিন্তু নীতিগত কারণে অশোক সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। সেখানে শেষ পর্যন্ত গৌতম দেবকে প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান করা হয়।
এদিন জয়ের পর গৌতম দেব পুরো কৃতিত্ব দেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তিনি বলেন, নেত্রী আমার উপরে আস্থা রেখেছেন। আমি কৃতজ্ঞ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমার জীবনের ধ্রুবতারা। এবার শিলিগুড়ি শহরের সামগ্রিক উন্নয়নের দিকে সম্পূর্ণ নজর দিতে হবে।