পড়ুয়ারা অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ছে কি না বোঝার জন্য শিক্ষকদের অনলাইনে পাঠ স্বাস্থ্য দপ্তরের
এবার শিক্ষকরাও ডাক্তার। শুনতে অবাক লাগলেও রাজ্যের স্কুলগুলিতে কিছুটা সেই ভূমিকাতেই দেখা যাবে তাঁদের। এই মর্মে স্কুল শিক্ষকদের রোগ ধরতে অনলাইনে বিশেষ প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করেছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। পড়ুয়াদের মধ্যে কোনও রোগ বাসা বাঁধছে কি না, সেটা গোড়াতেই ধরতে এই উদ্যোগ বলে জানিয়েছেন তাঁরা। প্রথম ধাপে বেশ কয়েকটি জেলায় শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ শেষের দিকে। তবে একবারে সবাইকে ডাক্তারির প্রাথমিক পাঠ দেওয়া হচ্ছে না। প্রথম ধাপে মাস্টার ট্রেনার হিসেবে জেলায় জেলায় শিক্ষকদের দল তৈরি করা হচ্ছে। পরবর্তীকালে তাঁরাই তাঁদের স্কুলে গিয়ে বাকিদের প্রশিক্ষণ দেবেন। স্কুল স্বাস্থ্য প্রকল্পের অধীনে এই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে রাজ্যজুড়ে। করোনার জেরে এই কর্মসূচির উপর বাড়তি জোর দিয়েছে স্বাস্থ্যভবন।
কোন কোন রোগের উপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে? চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, চোখ, কান, চর্মরোগের উপসর্গ কীভাবে চেনা যাবে, তা নিয়ে শিক্ষকদের বিশেষ পাঠ দেওয়া হচ্ছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার এক স্বাস্থ্যকর্তা বলেন, ধরা যাক, কোনও পড়ুয়া শ্রেণিকক্ষের শেষ বেঞ্চে বসে। ব্ল্যাকবোর্ডের লেখা সে হয়তো ঠিকমতো দেখতে পাচ্ছে না। তার চোখের কোনও সমস্যা হল কি না, তা জানতে আগেভাগে শিক্ষকদের পদক্ষেপ করতে হবে। আবার কারও চোখ লাল যদি হয়, সেক্ষেত্রে কী করণীয়, তা বোঝানো হচ্ছে শিক্ষকদের। ত্বকে কোনও র্যাশ বেরলে কী করতে হবে তার প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। আবার অনেক ক্ষেত্রে বাচ্চাদের হাত থেকে চামড়া ওঠার প্রবণতা থাকে। কী করলে এমনটা হবে না, তাও বলা হচ্ছে প্রশিক্ষণ শিবিরে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব বোঝানোর পাশাপাশি সচেতন করার বার্তাও দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
এছাড়াও পড়ুয়ারা অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ছে কি না, তো বোঝার জন্য নানা উপসর্গ নিয়ে শিক্ষকদের পাঠ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। যাদের ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে বলে মনে হবে, তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে নিকটবর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠাবেন শিক্ষকরা।
জানা গিয়েছে, প্রতি জেলা থেকেই কমবেশি দেড়শো থেকে দু’শো স্কুলকে প্রথম ধাপে বাছাই করা হয়েছে। প্রতিটি স্কুল থেকে এক বা দু’জন শিক্ষককে এক্ষেত্রে ‘নোডাল টিচার’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের অনলাইনে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এই প্রশিক্ষণের বিষয়ে অন্যান্য জেলার তুলনায় ভালো জায়গায় রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা। এই জেলায় প্রথম ধাপে ১৬৫টি স্কুলের ৩২২ জন শিক্ষককে প্রশিক্ষণের জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই ২২৯ জনের প্রশিক্ষণ হয়ে গিয়েছে। এদিকে, এই প্রশিক্ষণের ব্যাপারে পিছিয়ে রয়েছে মালদহ ও মুর্শিদাবাদ। তবে সবাইকেই যাতে চিকিৎসার পাঠ দেওয়া যায়, তা নিশ্চিত করবে স্বাস্থ্যভবন।