দীর্ঘ দুই বছর পর আজ স্কুলে ফিরবে খুদে পড়ুয়ারা
কাটছে বন্দিদশা। আজ, বুধবার থেকে কচিকাঁচাদের হইচইতে ভরে উঠবে সব স্কুল। প্রাথমিক স্তর ক্লাস চালু হয়ে যাবে পুরোদমে। তবে সরকারি এবং সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত বিদ্যালয়ে। বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলির ছবিটা অবশ্য কিছুটা হলেও আলাদা। অনেক স্কুলই আজ বাচ্চাদের আনছে না। কেউ কেউ একেবারে এপ্রিলে নতুন শিক্ষাবর্ষ থেকেই নিচু ক্লাসের পড়ুয়াদের আনতে চায়। তবে ব্যতিক্রম বালিগঞ্জের দ্য বিএসএস স্কুল। তারা মঙ্গলবার থেকেই সপ্তম শ্রেণির পঠনপাঠন শুরু করেছে। নিচু ক্লাসের পড়ুয়াদের আনা হবে আজ, বুধবার।
পরিকাঠামো এবং লোকবল অনুযায়ী পঠনপাঠন চালু করা যাবে। শিক্ষাদপ্তরের তরফে এই ছাড় ছিলই। সেই অনুযায়ী হিন্দু স্কুল যথারীতি খুলে যাচ্ছে আজ থেকে। হেয়ার স্কুলের প্রধান শিক্ষক জয়ন্ত ভট্টাচার্য বলেন, ‘স্কুল খুলে দিচ্ছি। তবে, সবাইকে একসঙ্গে আনা হবে কি না, সে বিষয়ে আলোচনা চলছে।’ বেথুন স্কুলও খুলে যাচ্ছে আজ থেকে। খুদে পড়ুয়াদের যাতে কোনও মানসিক সমস্যা না হয়, তার জন্য বিশেষ যত্ন নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষিকা শাশ্বতী অধিকারী। সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গভর্নমেন্ট গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা পাপিয়া নাগ (সিনহা মহাপাত্র) জানান, ‘আমাদের ডে এবং মর্নিং, দু’টি শাখাই খুলছে।’ বুধবার থেকে সব ক্লাসই চালু হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জ্যাংরার একটি সরকার পোষিত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চন্দনময় ভট্টাচার্যও। কলকাতা পুরসভাও পুরস্কুলগুলি খোলার ব্যাপারে বৈঠক করেছে। রাত থেকেই স্যানিটাইজেশন শুরু হয়ে গিয়েছে বহু বিদ্যালয়ে।
প্রাথমিকে ক্লাস চালুর বিষয়ে জেলার স্কুলগুলির পক্ষ থেকে অবশ্য বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরা হচ্ছে। অনেকেই বলছেন, একদিনের নোটিসে স্কুলের স্যানিটাইজেশন শেষ করা কঠিন। তার উপরে দুয়ারে সরকারের কাজে বেশ কিছু শিক্ষক নিযুক্ত। বদলি নিয়ে শহরের স্কুলে চলে গিয়েছেন অনেকে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী। মঙ্গলবারও পাড়ায় শিক্ষালয়ে ব্যস্ত ছিলেন শিক্ষকরা। ফিরে গিয়ে স্কুলের দিকে নজর দিতে দেরি হয়েছে। এদিকে, কম্পোজিট গ্রান্ট বা তহবিলও অপ্রতুল। অনেক স্কুল পরিকাঠামো উন্নয়ন খাতে টাকা পায়নি। সে সব চ্যালেঞ্জ সামলেই অবশ্য দরজা খুলছে বিদ্যালয়ের।
দক্ষিণ কলকাতার রামমোহন মিশন স্কুল অবশ্য আজ খুলছে না। প্রধান অধ্যক্ষ সুজয় বিশ্বাস বলেন, ‘একদিনের নোটিসে এভাবে স্কুল খোলা যায় না। এতদিন একটা অ্যাকাডেমিক সেট-আপ ছিল। সেটা আপাতত বজায় থাকছে। আর কিছুদিন পরে খোলা হবে।’ লক্ষ্মীপৎ সিংঘানিয়া স্কুলের অধ্যক্ষা শিক্ষিকা মীনা কাক জানান, উচ্চ প্রাথমিক বৃহস্পতিবার এবং আরও ছোটদের শুক্রবার থেকে ডাকা হবে। লা মার্টিনিয়ার স্কুল অবশ্য ছোটদের এপ্রিল থেকে নিয়ে আসার পক্ষপাতী। একই নীতি নিয়েছে সেন্ট জেভিয়ার্স, সেন্ট জেমসের মতো স্কুলও। ডন বস্কো স্কুলও এদিন পর্যন্ত ছোটদের জন্য খোলার কথা জানায়নি। পাঠভবনের উচ্চ প্রাথমিক আজ থেকে খুললেও প্রাথমিক খোলার খবর নেই। খড়্গপুরের গ্রিফিনস ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে প্রথম শ্রেণি থেকে পঠনপাঠন শুরু হবে সোমবার।