গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার এবং সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে মিলিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশের মুক্তি যুদ্ধ
গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার এবং সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে মিলিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশের মুক্তি যুদ্ধ। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন, কলকাতা তথা পশ্চিমবঙ্গে আগত লক্ষ লক্ষ উদ্বাস্তুদের জন্যে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও অন্যান্য বাঙালি শিল্পীরা গণ আন্দোলনে যোগ দেন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অর্থ সংগ্রহ করেন।
বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তির উপলক্ষ্যে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের কণ্ঠে ‘বঙ্গবন্ধু তুমি ফিরে এলে’ গানটি মুক্তি পায়। প্রশ্নাতীত জনপ্রিয়তা পেয়েছিল গানটি,১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে, প্রথম একুশে ফেব্রুয়ারির উদযাপন উপলক্ষ্যে ঢাকায় পল্টন ময়দানে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত বিদেশি শিল্পীদের মধ্যে অন্যতম একজন ছিলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়।
আবার ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ যখন সবে মাত্র শুরু হয়েছে, সেই সময়ে রামগড়ের একটি চায়ের দোকানে বসে আড্ডা জমিয়েছেন দীনেন চৌধুরী, অংশুমান রায়, গৌরীপ্রসন্ন। সেই সময়ে আকাশবাণীর অবসরপ্রাপ্ত অধিকর্তা শ্রীতরফদার তাঁর রেকর্ড প্লেয়ারে শোনাচ্ছিলেন ৭ মার্চের মুজিবরের বক্তৃতা। ভাষণ শুনতে শুনতেই সিগারেটের প্যাকেটের সাদা কাগজে গৌরীপ্রসন্ন লিখে ফেললেন ‘শোনো, একটি মুজিবরের থেকে
লক্ষ মুজিবরের কণ্ঠস্বরের ধ্বনি-প্রতিধ্বনি
আকাশে-বাতাসে ওঠে রণি।’ সুর করলেন অংশুমান, গাইলেনও তিনি। গানটা ইংরেজিতে অনুবাদও হয়েছিল, ‘আ মিলিয়ন মুজিবর সিঙ্গিং’। ১৯৭১-এ মুজিবনগরে বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারের মন্ত্রী পরিষদের শপথ অনুষ্ঠানে বাজানো হয়েছিল এই গান। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে ১৯৭২-এর ডিসেম্বরে বঙ্গবন্ধুর আমন্ত্রণে রাষ্ট্রীয় অতিথি হিসেবে বাংলাদেশে গিয়েছিলেন গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার।
আবার বাংলাদেশ রেডিওর জন্য তিনি লিখেছিলেন ‘মাগো ভাবনা কেন
আমরা তোমার শান্তিপ্রিয় শান্ত ছেলে’। হেমন্তের কণ্ঠে সে গান অমর হয়ে রয়েছে।