কোচবিহারবাসীর মুক্তির জন্য লড়বেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী? রাজ্যভাগের উস্কানি নিয়ে বিতর্ক শুরু
“কোচবিহারবাসীর মুক্তির জন্য লড়াই করে যাব”, নিশীথ প্রামাণিকের এই মন্তব্যে দানা বাঁধল বিতর্ক। চিলা রায়ের ৫১২তম জন্মজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানমঞ্চে একথা বলেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক (Nishith Pramanik)। এতেই প্রশ্ন উঠেছে, কোন মুক্তির কথা বলতে চাইছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছে তৃণমূল। প্রাক্তন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “উসকানিমূলক মন্তব্য করে বিজেপির মন্ত্রী এবং বিধায়করা শান্তিভঙ্গের চেষ্টা করছেন।”
উল্লেখ্য, বুধবার কোচবিহার ২ নম্বর ব্লকের বানেশ্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত সিদ্ধেশ্বরী এলাকায় গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের অনন্ত মহারাজ গোষ্ঠীর ডাকে চিলা রায়ের ৫১২ তম জন্মজয়ন্তী উদযাপন করা হয়। এদিন শীতলকুচি কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক বরেন চন্দ্র বর্মন বলেন, “সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে কোচবিহার আলাদা রাজ্য চাই। উত্তরবঙ্গ আলাদা রাজ্য চাই।” আবার বিজেপির তুফানগঞ্জ কেন্দ্রের বিধায়ক তথা জেলা বিজেপি সভাপতি মালতী রাভা ভাষণে বলেন, “যেভাবে কোচবিহার আলাদা রাজ্য চাইছে, উত্তরবঙ্গ আলাদা রাজ্য চাইছে, একইভাবে বলছি বীর চিলা রায়ের জীবনী রাজ্যের পাঠ্যপুস্তকে যেন অন্তর্ভুক্ত করা হয়।”
বিধায়কদের মন্তব্য ঘিরে শোরগোলের মাঝে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক বলেন, “উত্তরবঙ্গবাসী, বৃহত্তর কোচবিহারবাসীর মুক্তির জন্য লড়াই করে যাব। অনন্ত মহারাজের দেখানো পথ ধরেই লড়াই চালিয়ে যাব।” এদিন মুখ্যমন্ত্রী বীর চিলা রায়ের একটি মূর্তি স্থাপনের জন্য ১৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করার ঘোষণা করেছিলেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিজের সাংসদ উন্নয়ন তহবিল থেকে ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করার ঘোষণা করেন। তার সঙ্গে গ্রেটার সমর্থকদের আবেগ উসকে নিশীথ এদিন বলেন, “মন্ত্রী হয়ে যখন ফিরেছিলাম, সেই সময় আমার সঙ্গে থাকা চার শতাধিক নারায়ণীসেনাকে গ্রেপ্তার করে অকথ্য অত্যাচার করা হয়েছিল। সেই কথা কোনওদিন ভোলার মতো নয়। অনন্ত মহারাজ নিজের মায়ের শেষকৃত্যে পর্যন্ত আসতে পারেননি। দু’বছর অসমের এই অনুষ্ঠান উদযাপন করতে হয়েছে। এই বিষয়গুলি ভুলে গেলে চলবে না।”
পালটা প্রাক্তন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এই ধরনের উসকানিমূলক মন্তব্য কখনওই কোচবিহারবাসী মেনে নেবে না। আগামী ২০২৪ সালে নিশীথ প্রামাণিককে কোচবিহারের মানুষ মুক্তি দিয়ে দেবে।”