প্রয়াত কিংবদন্তী ফুটবলার সুরজিৎ সেনগুপ্ত
প্রয়াত কিংবদন্তী ফুটবলার সুরজিৎ সেনগুপ্ত। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় তাঁর অবস্থা আরও খারাপ হয়। ২৩শে জানুয়ারি করোনা নিয়ে তিনি ভর্তি হয়েছিলেন পিয়ারলেস হাসপাতালে। কদিন পরেই তাঁকে দিতে হয় ভেন্টিলেশনে। সেই থেকে তিনি ভেন্টিলেশনেই ছিলেন। কিন্তু তাঁর শারীরক অবস্থার কোনও উন্নতি হয়নি।
তাঁর পরিবারের লোকেরা চাইছিলেন পি জি হাসপাতালের ডাক্তাররা তাঁকে একবার দেখুক। সেই অনুরোধে মান্যতা দিয়ে শুক্রবার রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস পিয়ারলেসে যান। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ডাঃ মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায়, বক্ষরোগ বিশেষজ্ঞ সোমনাথ কুন্ডূ, হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ সরোজ মণ্ডল প্রমুখ। তাঁকে রাখা হয়েছিল অ্যাসিস্ট কন্ট্রোল মেকানিক্যাল ভেন্টিলেশনে। তাঁর হৃদযন্ত্রের অবস্থা ভাল নয়। ভেন্টিলেশনের মাধ্যমে তাঁর শরীরের অক্সিজেনের মাত্রা ৯৩ শতাংশ ছিল। তাঁর ট্রাকিয়োস্টমি করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু শারীরিক সমস্যার কারণে তা করা যায়নি। তাঁকে সর্বক্ষণ পর্যবেক্ষণে রেখেছিলেন ডাক্তাররা।
সাতের দশকে কলকাতা ময়দানে দাপিয়ে ফুটবল খেলেছেন সুরজিৎ সেনগুপ্ত। মোহনবাগানের হাত ধরে কলকাতা ময়দানে পা রাখলেও, এই ফুটবলারকে খ্যাতির শিখরে পৌঁছে দিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল।
নিজের সময়ে দেশের অন্যতম সেরা উইঙ্গার ছিলেন। খেলেছেন দুই প্রধানেই। কলকাতা মোহনবাগান থেকে কেরিয়ার শুরু করলেও পরে অবশ্য ইস্টবেঙ্গলে চলে যান। এরপরে হয়ে যান লাল-হলুদের ঘরের ছেলে। ১৯৭৫-এ ঐতিহাসিক শিল্ড ফাইনালের ডার্বিতে ইস্টবেঙ্গল ৫-০ গোলে জেতে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে। ডার্বিতে সেই ৫-০ গোলের রেকর্ড এখনও ইস্টবেঙ্গলের জন্য অক্ষত।
ইস্টবেঙ্গল শতবর্ষতে যত টিম হয়েছে লাল-হলুদের বেশিভাগ দলেই ছিলেন সুরজিৎ। বিতর্ক থেকে ছিলেন কয়েক মাইল দূরে। ফুটবল নিয়ে পড়াশোনা করতে করতে একজন পরিসংখ্যানবিদ হয়ে ওঠেন ধীরে ধীরে। খেলা ছাড়ার পরে কয়েকবার কমেন্ট্রি করতে দেখা গেলেও পুরোপুরি কমেন্ট্রিতে আসেননি কোনওদিনই।
আধুনিক ফুটবলে ছিল আগ্রহ। নতুন নতুন নিয়ম তিনি জানতেন। বাংলার ফুটবলের কোনও খারাপ সময় এলে সুরজিৎ সেনগুপ্ত এগিয়ে আসতেন। বিভিন্ন সংবাদপত্রে নিয়মিত কলাম লিখতেন। অবসর সময়ে ফুটবল নিয়েই পড়াশোনা করতেন। বিদেশি ফুটবল ছাড়াও কলকাতা ময়দানের ছোটো দলের খবরও রাখতেন।
তার প্রয়াণে শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী ,মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।