কৃষি পরিকাঠামো উন্নয়নে রাজ্যে সাড়ে ৪৫ কোটি টাকায় হবে ৭৮টি প্রকল্প
কৃষি ক্ষেত্রে পরিকাঠামো উন্নয়নে রাজ্যে সাড়ে ৪৫ কোটি টাকায় হবে ৭৮টি প্রকল্প। প্রশাসন সূত্রের খবর, দু’মাসের মধ্যে এতগুলি প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে রাজ্য সরকার। কৃষি পরিকাঠামো তহবিল প্রকল্পের মাধ্যমে সেগুলির জন্য ব্যাঙ্ক ঋণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তালিকায় গুদামঘর, পণ্য পরীক্ষা কেন্দ্র, প্যাক হাউস, কাস্টম হায়ারিং সেন্টার, রাইস মিল সহ একগুচ্ছ প্রকল্প রয়েছে। ইতিমধ্যে ৫০০ কোটি টাকায় আরও ৪৪৪টি প্রকল্প রূপায়ণের প্রস্তাব জমা পড়েছে। চলতি সপ্তাহে উত্তরবঙ্গ বিজনেস মিটে বিষয়টি বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন কৃষিদপ্তরের প্রধান সচিব ওঙ্কার সিং মিনা। এ ব্যাপারে বিভিন্ন সমবায় সমিতি, কৃষি উৎপাদন সংস্থা, স্বনির্ভর গোষ্ঠী আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
রাজ্যের গ্রামীণ অর্থনীতির অন্যতম ভিত্তি কৃষি। এবার কৃষি ক্ষেত্রে পরিকাঠামো উন্নয়নে নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে রাজ্য সরকার। প্রশাসন সূত্রে খবর, গত ১০ ডিসেম্বর কৃষি পরিকাঠামো তহবিল প্রকল্প নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। প্রকল্পটি নিয়ে রাজ্যস্তরে মনিটরিং কমিটির প্রথম মিটিং হয় ১৩ ডিসেম্বর। ওই মাসে এ ব্যাপারে জেলা স্তরেও মনিটরিং কমিটির বৈঠক হয়। চলতি বছর ৩১ জানুয়ারি নবান্নে বিভিন্ন জেলাকে নিয়ে প্রকল্পটি সম্পর্কে ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম করা হয়। ইতিমধ্যে প্রকল্পটি জেলায় জেলায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। শিলিগুড়ির কাছে কাওয়াখালি বিশ্ববাংলা শিল্পীহাটে উত্তরবঙ্গ বিজনেস মিটে কৃষিদপ্তরের প্রধান সচিব জানান, ইতিমধ্যে ৪৫ কোটি ৫১ লক্ষ টাকায় ৭৮টি প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন করা হয়েছে। ওই অর্থ ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ হিসেবে উপভোক্তাদের দেওয়া হবে। এক্ষেত্রেও উপভোক্তারা কিছু সহায়তা পাবেন। কৃষি পরিকাঠামো তহবিল প্রকল্পে বিভিন্ন জেলা থেকে আরও ৪৪৪টি প্রকল্প জমা পড়েছে। সেগুলি বাস্তবায়িত করতে ৫০০ কোটি টাকা লাগবে। কৃষিদপ্তর জানিয়েছে, এই প্রকল্পের উপভোক্তা হিসেবে প্রাইমারি এগ্রিকালচারাল ক্রেডিট সোসাইটি, স্বনির্ভর গোষ্ঠী, কৃষি উৎপাদক সংস্থা, যৌথ দায়বদ্ধ গোষ্ঠী, কৃষক উৎপাদক সংস্থা সমূহের মহাসঙ্ঘ, নিয়ন্ত্রিত বাজার কমিটি প্রভৃতি বিবেচিত করা হচ্ছে। তাদের মাধ্যমে গুদামঘর, পণ্য পরীক্ষা সংস্থা, প্যাক হাউস, হিমঘর, বাছাই ও গ্রেডিং কেন্দ্র, পরিপক্ক কক্ষ, কৃষি যন্ত্রপাতি ভাড়া কেন্দ্র বা কাস্টম হায়ারিং সেন্টার, সুরক্ষিত চাষের কাঠামো, রাইস মিল, ডাল মিল, তেলকল প্রভৃতি গড়া হচ্ছে। নয়া এই পদক্ষেপে অংশ নিতে পারবেন কৃষি উদ্যোগপতি, নবীন উদ্যোগপতিরাও। তাঁরাও সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলি গড়তে পারবেন।
এই প্রকল্পে দু’কোটি টাকার প্রজেক্ট গড়তে সহজেই মিলবে ব্যাঙ্ক ঋণ। এ জন্য কোনওরকম কো-ল্যাটারাল সিকিউরিটি, ক্রেডিট গ্যারান্টি প্রয়োজন হবে না। সুদে তিন শতাংশ অনুদান মিলবে। তা সাতবছর পর্যন্ত পাওয়া যাবে। দু’কোটি টাকার বেশি মূল্যের প্রকল্পের ক্ষেত্রে সুদে অনুদান মিলবে দু’কোটি টাকা পর্যন্ত। বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সাহায্য ও ভর্তুকি এই প্রকল্পে যুক্ত করা যাবে। অর্থাৎ একসঙ্গে মিলবে দু’টি প্রকল্পের সাহায্য। এছাড়া কাস্টম হায়ারিং সেন্টার গড়ার জন্য কৃষিদপ্তর থেকে মোট প্রকল্পের ৪০ শতাংশ সরকারি ভর্তুকি এবং সুদে তিন শতাংশ অনুদান মিলবে।
শিলিগুড়িতেই এমন ছ’টি প্রকল্পের অনুমোদন হয়েছে। মহকুমা কৃষিদপ্তর সূত্রের খবর, চারটি কাস্টম হায়ারিং সেন্টার, একটি করে ওয়েল ও রাইস মিল হচ্ছে। এক্ষেত্রে ব্যয় হবে প্রায় আট কোটি টাকা। এর বাইরে আরও চারটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য রাজ্যের কাছে পাঠানো হয়েছে।