বিজেপিকে ভোট নয়, উত্তরপ্রদেশে ঘরে ঘরে প্রচারে কৃষকেরা
‘আপনারা কি এখনও মিথ্যে প্রতিশ্রুতিতে বিশ্বাস করবেন? ভরসা রাখবেন জুমলাবাজিতে? এবার সময় এসেছে সঠিক মানুষকে বেছে নেওয়ার।’ উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনের ইতিমধ্যেই দু’দফা শেষ হয়ে গিয়েছে। বাকি রয়েছে আরও পাঁচ দফার ভোট। বাকি পর্যায়ের ভোটের আগে কার্যত নজিরবিহীনভাবে এমন স্লোগান দিয়েই যোগী-রাজ্যের ঘরে ঘরে ঘুরছেন আন্দোলনকারী কৃষকরা। এবং এবারের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে কঠোর শাস্তি দেওয়ার আর্জি জানিয়ে ডাক দিচ্ছেন, গেরুয়া দলের সমস্ত প্রার্থীকে হারিয়ে দেওয়ার। আগামীকাল, রবিবার উত্তরপ্রদেশের ৫৯টি কেন্দ্রে তৃতীয় দফার নির্বাচন।
বিজেপিকে হারানোর ডাক দিয়ে ইতিমধ্যেই ‘মিশন উত্তরপ্রদেশ’ কর্মসূচির ঘোষণা করেছেন আন্দোলনকারী কৃষকরা। সেইমতোই বিভিন্ন আন্দোলন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, উত্তরপ্রদেশের প্রত্যেক দফার নির্বাচনের আগে আগের তুলনায় বিজেপি বিরোধী ইস্যুতে বেশি সোচ্চার হচ্ছেন কৃষকরা। রাজ্য কমিটিগুলিকে এমনই নির্দেশ দিয়েছে কৃষক সংগঠনগুলি। সেইমতোই মোদী এবং যোগী বিরোধী প্রচারের অভিমুখ স্থির করা হচ্ছে। জানিয়েছেন কৃষক নেতারা।
বাড়ি বাড়ি গিয়ে সংযুক্ত কিষান মোর্চার প্রতিনিধিরা সাফ জানাচ্ছেন, ‘এবার অত্যন্ত ভাবনাচিন্তা করে ভোটাধিকার প্রয়োগের সময় উপস্থিত। সিদ্ধান্ত নিতে সামান্য ভুল হলেই ফের সাধারণ মানুষ এবং কৃষকদের জীবন দুর্বিষহ করে তুলবে বিজেপি। এমনকী ফের নিয়ে আসা হতে পারে কেন্দ্রের তিনটি কৃষি আইন।’ কিষান মোর্চা জানিয়েছে, ‘আমাদের এখন একজোট হতে হবে। এককাট্টা না হলে বিজেপি এবং গেরুয়া শিবিরকে কোণঠাসা করা যাবে না। একজোট হয়েই সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে যাতে, আগামী দিন অনেক বেশি সুরক্ষিত থাকে। সেই কারণে সঠিক মানুষকে বেছে নিয়ে তাঁকেই সরকার চালানোর ক্ষমতা দেওয়া প্রয়োজন। এই মর্মেই রাজ্যের সর্বত্র প্রচার চালানো হচ্ছে।’
কৃষক সংগঠনগুলি জানিয়েছে, লখিমপুর খেরি কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনির ছেলে আশিসের জামিনের বিষয়টিও প্রচারে তুলে আনা হয়েছে। অভিযোগ করা হচ্ছে যে বিজেপি সরকার দুষ্কৃতীদের আশ্রয় দিতে মরিয়া। কৃষকদের দাবি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ছেলের জামিনের বিরোধিতা করে ইতিমধ্যেই তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। তবে কৃষক সংগঠনগুলি মোদী সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে সাফ জানিয়ে দিয়েছে, ভোট মিটে যাওয়ার পরও গেরুয়া শিবিরের স্বস্তির কোনও কারণ নেই। বরং মোদী বিরোধী ইস্যুতে আরও জোরদার হবে আন্দোলন। এই ব্যাপারে সারা ভারত কিষান সভার সাধারণ সম্পাদক হান্নান মোল্লা বলেন, ‘১৫ মার্চের পরই আবার বৈঠকে বসবে সংযুক্ত কিষান মোর্চা। সেখানে পরবর্তী আন্দোলন কর্মসূচি স্থির করা হবে। ঢিলেমি দেওয়ার প্রশ্ন নেই।’ সরাসরি বার্তা দিতে খুব শীঘ্রই গোরক্ষপুর, এলাহাবাদ এবং বারাণসীতেও যাবেন সর্বভারতীয় কৃষক নেতারা।