সিএএ প্রতিবাদীদের থেকে সংগৃহীত ক্ষতিপূরণ ফেরাতে যোগীকে নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) চালু নিয়ে ফের জোরালো সওয়াল শুরু করেছে বিজেপির বঙ্গ ব্রিগেড। গতকালই রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার রাজ্যকে এড়িয়ে সিএএ চালু করা হবে বলে দাবি করেছেন। কিন্তু ঘটনা হল, সরকারে থেকেও উত্তরপ্রদেশে সিএএ চালু করা তো দূরের কথা, বরং বিক্ষোভকারীদের দমাতে গিয়ে এখন লেজেগোবরে অবস্থা যোগী সরকারের। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট সাফ জানিয়ে দিয়েছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে জারি হওয়া নোটিস প্রত্যাহারের সঙ্গেই বাজেয়াপ্ত সম্পত্তি ও অর্থ ফিরিয়ে দিতে হবে। তবে ২০২০ সালের ৩১ আগস্ট বিজ্ঞপ্তি হওয়া নতুন আইনে সম্পত্তির ক্ষতিপূরণ আদায় করতে পারবে সরকার।
২০১৯ সালের ডিসেম্বর থেকে সিএএ বিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল হয় গোটা দেশ। উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন এলাকাও তেতে ওঠে। তছনছ করা হয় সরকারি সম্পত্তিও। বিক্ষোভ দমন করতে একাধিক কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে যোগী সরকার। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, বিক্ষোভকারীদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ জারি। সেই মতো জেলা ট্রাইব্যুনালের তরফে অভিযুক্তদের বাড়িতে নোটিস পাঠানো শুরু হয়। ট্রাইব্যুনালের শীর্ষ আধিকারিক হলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক। তিনিই মূলত নোটিস পাঠিয়ে ক্ষতিপূরণ আদায়ে পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। উত্তরপ্রদেশের ‘রিকভারি অফ ড্যামেজেস টু পাবলিক অ্যান্ড প্রাইভেট প্রপার্টি অ্যাক্ট’ মোতাবেক ক্ষতিপূরণ আদায় করা হচ্ছিল। পরে এক মামলার প্রেক্ষিতে সর্বোচ্চ আদালত বলে, রাজ্য সরকার তার ক্ষমতা লঙ্ঘন করছে। এটা কোনওভাবেই কাম্য নয়। তারপরেই বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করা থেকে পিছু হটে যোগী সরকার। সেই সঙ্গে পিঠ বাঁচাতে নোটিস প্রত্যাহার করে নেওয়ার ব্যাপারেও আদালতকে আশ্বস্ত করে তারা।
সেই মতো সিএএ বিরোধী বিক্ষোভে ক্ষতিপূরণ মেটানোর সব নোটিসই একে একে প্রত্যাহার করে নিচ্ছে যোগী সরকার। শুক্রবার রাজ্য সরকারের তরফে সর্বোচ্চ আদালতকে জানিয়েও দেওয়া হয়—ক্ষতিপূরণ আদায়ে অভিযুক্তদের কাছে পাঠানো যাবতীয় নোটিস প্রত্যাহার করে নেওয়া হচ্ছে। জানা গিয়েছে, লখনউ সহ উত্তরপ্রদেশের বহু জেলায় নোটিস পাঠিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তির সম্পত্তির বাজেয়াপ্ত কিংবা অর্থ আদায়ের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। এদিন, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ও সূর্যকান্তকে নিয়ে গঠিত বেঞ্চে কতগুলি নোটিস প্রত্যাহার করা হয়েছে, তার রিপোর্ট পেশ করে যোগী সরকার। রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল গরিমা প্রসাদ বেঞ্চকে জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই মোট ২৭৪টি নোটিস প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে তিনি আর্জি জানান, ক্ষতিপূরণ ফেরতের বিষয়টি ট্রাইব্যুনালকে দেখার অনুমতি দেওয়া হোক। সেই আর্জি নাকচ করে বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, রাজ্য সরকারকেই বাজেয়াপ্ত হওয়া সম্পত্তি ও অর্থ ফেরত দিতে হবে।