রাজ্য বিজেপির ‘নতুন’ টিমের অভিজ্ঞতা কম! ভগবতের কাছে সুকান্ত-শুভেন্দুদের নামে নালিশ দিলীপের
রাজ্য বিজেপির ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যেভাবে দলের মধ্যে অসন্তোষ ও টালমাটাল অবস্থা চলছে সে বিষয়টি এবার সংঘ প্রধান মোহন ভগবতকে (Mohan Bhagwat) জানালেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। রাজ্য বিজেপির দায়িত্বে থাকা অনেকেরই সংগঠনে অভিজ্ঞতা কম, নতুন এসেছে দলে। ফলে একটা সমস্যা তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার মধ্যেই দলের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়েও সংঘ প্রধানকে বিস্তারিত বলেছেন রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি। কারও নাম না করে রাজ্য বিজেপির বর্তমান সমস্যাগুলি তুলে ধরে কড়া নালিশ করেছেন দিলীপবাবু, এমনটাই খবর।
রাজ্য বিজেপির সভাপতি হিসেবে সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumder) দায়িত্ব নেওয়ার পর নতুন করে রাজ্য কমিটি ঘোষণা করা হয়। নতুন রাজ্য কমিটি থেকে পুরনোদের বাদ দেওয়া হয়। শুরু হয়ে যায় বিদ্রোহ। একাধিক বিধায়কদের ক্ষোভও প্রকাশ্যে আসে। এরপর জেলা জেলায় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। সকলেই রাজ্য বিজেপির বর্তমান ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী তথা দলের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী ও তার টিম এবং সেই টিমে থাকা কয়েকজন তৎকাল নেতাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন। যেভাবে নতুন টিম দল পরিচালনা করছে তা নিয়ে ক্ষোভ চরমে ওঠে। সংঘের কার্যকর্তারাও পুরোও বিষয়টি নিয়ে বিজেপির বর্তমান রাজ্য নেতাদের বিরুদ্ধে কার্যত বিরক্ত। এই পরিস্থিতিতেই গত ৩১ জানুয়ারি প্রথম কলকাতায় আসেন সংঘ প্রধান মোহন ভাগবত। তখন দু’দিন ধরে সংঘ পরিবারের আভ্যন্তরীন বৈঠক হয়েছিল। এরপর আবার রাজ্য সফরে আসেন ভগবত। সেই সময়ই গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় মোহন ভগবতের সঙ্গে দেখা করেন মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ এবং বাঁকুড়ার সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ডাঃ সুভাষ সরকার। রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি ও দলের সাংগঠনিক অবস্থা নিয়ে দিলীপবাবুর সঙ্গে কথা হয়।
এ প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, “অনেকদিন পর ওনার সঙ্গে দেখা হল। পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা হয়েছে। দলের সাংগঠনিক অবস্থা নিয়েও দু-চার কথা হয়। রাজ্য বিজেপির বর্তমান টিমের অনেকেরই পরিচয় কম। দলের আন্দোলনও কম রয়েছে। সে কারণে একটা সমস্যা হচ্ছে। কর্মীরাও হতাশ। তাছাড়া, শাসকদলের সন্ত্রাসের বিষয় নিয়েও কথা হয়েছে।” দলীয় সূত্রে খবর, রাজ্য বিজেপির বর্তমান টিম যেভাবে চলছে তা নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বড় অংশই যেমন অসন্তুষ্ট। তেমনই আরএসএসের কার্যকর্তারাও বিরক্ত। বঙ্গ বিজেপিতে চলা এই ক্ষোভ-বিক্ষোভের কথা সংঘ প্রধান মোহন ভগবতের কানেও রয়েছে। এরপরই তিনি দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) মুখ থেকেই পুরোও বিষয়টি নিয়ে খবর নেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
রাজ্য বিজেপির বর্তমান সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের বিরুদ্ধে দলের কোনও অংশের কোনও ক্ষোভ নেই। বিদ্রোহী শিবির ও আদি নেতাদের কথায়, ভাল মানুষ সুকান্ত মজুমদারকে অন্ধকারে রেখেই সংগঠনের স্টিয়ারিং ধরেছে রাজ্য বিজেপির কয়েকজন। সেখানে কয়েকজন তৎকাল বিজেপিও রয়েছেন। বিক্ষুব্ধ শিবিরের এক নেতার কথায়, দিলীপ ঘোষ সভাপতি থাকাকালীন দলের উপর একটা নিয়ন্ত্রণ ছিল। কিন্তু নতুন জমানায় কার্যত টালমাটাল বঙ্গ বিজেপি। পুরোও বিষয়ে আরএসএসও অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করুক বলে চাইছে বিজেপির বিদ্রোহী নেতাদের একাংশ।