বিফলে শীর্ষ নেতৃত্বের হুঁশিয়ারি, গোঁজ কাঁটা রয়েই গেল জোড়াফুল শিবিরে
এখনও ‘নির্দল’ বা ‘গোঁজ’ হিসেবে পুরভোটে যাঁরা দলের বিরুদ্ধে লড়ছেন, তাঁদের ফের হুঁশিয়ারি দিল তৃণমূল কংগ্রেস। দলের তরফে শুক্রবার জানানো হয়েছে, নির্দলরা নির্বাচন থেকে সরে না গেলে তাঁদের সকলকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।
এ দিন উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরে পুরভোটের প্রচারে এসেছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সেখানেই দলীয় প্রার্থী জয়া দত্ত এবং জুঁই তালুকদারের সমর্থনে সভা করেন তিনি। পার্থবাবু বলেন, ‘‘দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে যাঁরা নির্দল প্রার্থী হিসাবে ভোটে দাঁড়িয়েছেন, তাঁদের আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত সময় দিচ্ছি। এর মধ্যে লিখিত ভাবে তাঁদের জানাতে হবে তাঁরা দলীয় প্রার্থীর সঙ্গে আছেন। তা না করলে দল তাঁদের বহিষ্কার করবে। নির্বাচনের পরেও তাঁদের দলে ফেরানো হবে না।’’
প্রার্থী তালিকা ঘোষণার সময় থেকেই পুরভোট নিয়ে অভ্যন্তরীণ সমস্যায় রয়েছে শাসক দল তৃণমূল। একাধিক জেলায় সেই সমস্যা গড়িয়েছে ‘নির্দল’ বা ‘গোঁজ’ প্রার্থী নিয়ে। এই ‘নির্দল’দের একটা বড় অংশকেই গত তিন-চার দিনে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সংশ্লিষ্ট জেলার নেতারা। কয়েকটি জেলায় আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে প্রার্থীদের সরে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে চেষ্টাও চালানো হচ্ছে। কিন্তু উত্তর ২৪ পরগনার মতো কয়েকটি জায়গায় তাতে কাজ হয়নি। দলীয় সূত্রে খবর, এই জেলায় বিধায়ক, সাংসদ এমনকি প্রভাবশালী নেতাদের সমর্থনেই এই রকম বেশ কয়েক জন নির্দল এখনও ভোটের লড়াইয়ে রয়ে গিয়েছেন।
শ্রীরামপুর-হুগলি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বারবার অনুরোধ করেছিলাম, নির্দল হয়ে দাঁড়িয়ে বিজেপি ও সিপিএম-সহ বিরোধীদের সুবিধা না করে দিতে। তা অগ্রাহ্য করায় ১৪ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’’
মালদহের ইংরেজবাজারে ৯ জন, পুরাতন মালদহে ৫ নির্দল প্রার্থীকে এ দিন বহিষ্কার করেছে তৃণমূল। এঁদের মধ্যে ২ জন বিদায়ী কাউন্সিলর, কিন্তু এ বারে টিকিট পাননি। আরও ২ জন বিদায়ী কাউন্সিলর স্ত্রীকে প্রার্থী করেছিলেন। তাঁরা অবশ্য এই ১৪ জনের মধ্যে নেই। তবে তাঁদেরও দল বহিষ্কার করেছে।
এই সমস্যা রয়েছে বাঁকুড়ায়ও। বাঁকুড়া পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বহিষ্কৃত নির্দল প্রার্থী অনন্যা রায় চক্রবর্তী দাবি করেছেন, দলের কর্মীরা তাঁর সঙ্গেই রয়েছেন। তাঁর মিছিলে দেখা গিয়েছে ওয়ার্ড সভাপতি, বুথ সভাপতি, ওয়ার্ডের যুব সভাপতির মতো একাধিক নেতাকে। এ দিকে, এ দিন মলয় ঘটক বাঁকুড়ায় সাংগঠনিক বৈঠক করেছেন। তাঁর দাবি, নির্দলেরা ভোটে কোনও ‘ফ্যাক্টর’ হবে না।