রাজ্যে বাণিজ্যিক জমি, বাড়ির লিজের আবেদন নেওয়া ও অনুমতি দেওয়া হবে অনলাইনে
বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের আগে বড় সিদ্ধান্ত রাজ্যের। রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি হাব (সেক্টর ফাইভ) সহ বিধাননগরের সেক্টরগুলিতে বিনিয়োগ টানতে এবার কমার্শিয়াল প্লটের লিজ হস্তান্তরের বিষয়টিকে নিয়ে আসা হচ্ছে ‘ইজ অব ডুইং বিজনেস’-এর আওতায়। বিধাননগরের সমস্ত জমিই ৯৯৯ বছরের লিজে দিয়েছে রাজ্য। অতএব জমির লিজ অন্য কারও নামে করতে গেলে লাগে নগর উন্নয়ন ও পুর বিষয়ক দপ্তরের ছাড়পত্র। এবার আর সেই ছাড়পত্র পেতে সশরীরে উপস্থিত হতে হবে না ওই দপ্তরের কার্যালয়ে। কারণ এই ক্ষেত্রে আবেদন নেওয়া ও অনুমতি দেওয়ার জন্য সম্পূর্ণ অনলাইন পরিষেবা চালু করা হচ্ছে।
এই পরিষেবা বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের আগেই চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য। অনলাইন পরিষেবা চালু হলে বাণিজ্যিক প্লটে ‘লিজ ট্রান্সফার’ বা নতুন ভাড়া বসানোর ছাড়পত্র পেতে পৃথিবীর যে কোনও প্রান্ত থেকে আবেদন করা যাবে। দেখা গিয়েছে, বিধাননগরে যাঁদের নামে কমার্শিয়াল প্লটের লিজ, তাঁরা অনেকেই রাজ্যের বা দেশের বাইরে থাকেন। অতএব সশরীরে আবেদনপত্র জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয় তাঁদের। অনলাইন পরিষেবা চালু হলে তাঁদের আর সেই হয়রানি হবে না। আর নতুন যে বিনিয়োগকারী লিজ নেবেন, তাঁকেও আর ‘লিজ ট্রান্সফারের’ জন্য দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে হবে না।
বিধাননগরে এতদিন শুধু বসবাস করা হয়, এমন বাড়ি, জমির ‘লিজ ট্রান্সফারের’ ক্ষেত্রে অনলাইনে আবেদন করা যেত। এবার বাণিজ্যিক কাজের জন্য নির্দিষ্ট জমির ক্ষেত্রেও এই পরিষেবা চালু করা হচ্ছে। এই পরিষেবা চালু করা হবে চারটি সেক্টরের জন্যে। সেক্টর চার-এ মূলত ভেরি রয়েছে। সেখানে এই পরিষেবা চালু করার প্রয়োজন নেই বলেই মনে করছেন দপ্তরের আধিকারিকরা।
আবেদন করার সময়ে অনলাইনে জমা দিতে হবে জমি সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য। সেই জমি বা বাড়ি পর্যবেক্ষণে যাবেন দপ্তরের আধিকারিকরা। দেখে নেওয়া হবে যাকে ভাড়া দেওয়া হচ্ছে, বা যার নামে ‘লিজ ট্রান্সফার’ করা হচ্ছে, সেই ব্যক্তি বা সংস্থার সত্যিই কোনও অস্তিত্ব আছে কি না। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে ছাড়পত্র দেবে নগর উন্নয়ন ও পুর বিষয়ক দপ্তর। একটি এসএমএস যাবে আবেদনকারীর মোবাইলে। তাতেই থাকবে লিঙ্ক। সেই লিঙ্কে ক্লিক করলেই ডাউনলোড করা যাবে ভাড়া বা ‘লিজ ট্রান্সফার’-এর ছাড়পত্র। এজন্য প্রয়োজনীয় ফি-ও দেওয়া যাবে অনলাইনেই।
বিধাননগর তৈরি করতে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায়ের উদ্যোগে রাজ্য সরকার মাত্র এক টাকার বিনিময় জমি কিনেছিল তদানীন্তন মন্ত্রী হেমচন্দ্র নস্করের থেকে। ভেরি বুঝিয়ে শহর গড়ার উপযুক্ত পরিকাঠামো তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল সেচদপ্তরকে। জমি বণ্টনের দায়িত্ব ছিল সল্টলেক নোটিফায়েড এরিয়া অথরিটির। পরবর্তীকালে বিধাননগরের জমির সম্পূর্ণ দায়িত্ব আসে নগর উন্নয়ন ও পুর বিষয়ক দপ্তরের হাতে।