সন্দেশখালির মণিপুর গ্রামে ঘুমপাড়ানি গুলি করে বাঘকে বন্দি করল বনকর্মীরা
সকালে নদীর পাড়ে জঙ্গল সংলগ্ন এলাকায় ছাগলের জন্য ঘাস কাটতে গিয়েছিলেন কয়েকজন গ্রামবাসী। হঠাৎ দেখেন ঘাসজমির মধ্যে বিরাট এক বাঘ। রবিবার সন্দেশখালির মণিপুর গ্রামের ঘটনা। দিনের শেষে ঘুমপাড়ানি গুলি করে বাঘটিকে বন্দি করেন বনকর্মীরা।
গ্রামের এক বাসিন্দা বিদেশ মণ্ডল জানান, বাঘ দেখে ওই গ্রামবাসীরা প্রথমে চমকে পালিয়ে আসেন। এরপর চিৎকার শুরু করেন তাঁরা। তখন আমরা সবাই একজোট হয়ে লাঠিসোটা নিয়ে বাঘ তাড়াতে যাই। কিন্তু সে কী বাঘ! না পালিয়ে সে উল্টে আমাদেরই আক্রমণ করে বসে। ছায়রাফ কারিগর নামে এক গ্রামবাসীর উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে তাঁর হাত কামড়ে ধরে। সেই অবস্থাতেই ছায়রাফ অন্য হাতে থাকা কাস্তে দিয়ে বাঘকে আঘাত করতে থাকেন। শেষে তাঁকে ছেড়ে জঙ্গলে ঢুকে যায় সেটি। বাঘের হামলায় গুরুতর জখম ছায়রাফকে তড়িঘড়ি স্থানীয় চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে কলকাতার আরজিকর হাসপাতালে রেফার করা হয় তাঁকে। গ্রামবাসীরা আরও জানিয়েছেন, মণিপুর গ্রামে নদীর পাশেই আনুমানিক ১০ বিঘা জায়গা জুড়ে একটি জঙ্গল রয়েছে। নদীর ওপারে সুন্দরবনের মূল জঙ্গল। নদী সাঁতরে সুন্দরবন থেকে ওই জঙ্গলে বাঘটি ঢুকেছে বলে অনুমান গ্রামবাসীদের। তারপর ঘাসবনে সেটি ওত পেতে ছিল। মণিপুর গ্রামে বাঘ ঢোকার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন বনদপ্তরের কর্মীরা। গ্রাম সংলগ্ন জঙ্গলকে নাইলনের জাল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়। তারপর বাঘ ধরতে খাঁচা পাতেন বনকর্মীরা। যদিও বাঘ সেই খাঁচার দিকে যায়নি। সন্ধ্যা ছ’টা নাগাদ সে ঘুরতে ঘুরতে চলে আসে নাইলনের জালের পাশে। তখনই বনকর্মীরা ঘুমপাড়ানি গুলি করেন তাকে। এরপর নিস্তেজ বাঘটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যান চিকিৎসার জন্য। সন্দেশখালি দুই নম্বর ব্লকের বিডিও অর্ণব মুখোপাধ্যায় জানান, সকালে বাঘ ঢোকার খবর পাই। সঙ্গে সঙ্গে বনকর্মী ও পুলিসকে জানিয়েছি। পুলিসকর্মীরাও ঘটনাস্থলের দিকে রওনা হয়েছেন।