গত দু’বছরে সুন্দরবনে ম্যানগ্রোভের জঙ্গল বেড়েছে ১৬৫ হেক্টর
বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় আম্পানে তছনছ হয়ে গিয়েছিল সুন্দরবনের বাদাবন। দক্ষিণ ২৪ পরগনার অংশেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ২০-৩০ শতাংশ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল। অনেকে ভেবেছিলেন, এই ক্ষতির ফলে আগামী দিনে ঝড়ের ঝাপ্টা হয়তো সামলাতে পারবে না বিস্তীর্ণ উপকূল। কিন্তু সেই শঙ্কাকে দূরে সরিয়ে দিল কেন্দ্রীয় সমীক্ষার রিপোর্ট। জানা গিয়েছে, গত দেড় থেকে দু’বছরে এই জেলায় ম্যানগ্রোভের জঙ্গল বেড়েছে ১৬৫ হেক্টর। এই বনাঞ্চল বৃদ্ধির নিরিখে দেশের মধ্যে পঞ্চম স্থানে দক্ষিণ ২৪ পরগনা। যা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বন বিশেষজ্ঞরা।
দুই বঙ্গের সমুদ্র উপকূলের বিস্তীর্ণ অংশজুড়ে রয়েছে ম্যানগ্রোভের অরণ্য। বাংলাদেশে রয়েছে ১০,৮১৩ বর্গ কিলোমিটার (৬২%) বনাঞ্চল। পশ্চিমবঙ্গের ভাগে পড়েছে সুন্দরবনের ৩৮ শতাংশ, অর্থাৎ ৪,৭২৬ বর্গ কিলোমিটার। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে পাড় ভাঙতে ভাঙতে বনাঞ্চল ক্রমশ ছোট হয়ে আসছে। নাব্যতা কমছে নদীগুলিতে। বিশেষ করে গত দু’-তিন বছরে যেভাবে একের পর এক ঝড় আছড়ে পড়েছে, তাতে এই বাদাবনের একাংশ ছারখার হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে নতুন করে ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল তৈরি করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।
ফরেস্ট সার্ভে অব ইন্ডিয়া নামে কেন্দ্রীয় সরকারের একটি সংস্থা দেশের বনাঞ্চলের সার্বিক হাল-হকিকত নিয়ে সমীক্ষা করেছে। তার মধ্যে ম্যানগ্রোভ অরণ্যের অবস্থাও পর্যালোচনা করেছে তারা। প্রতি দু’বছর অন্তর এই সমীক্ষা রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। ২০২১ সালের রিপোর্ট কিছুদিন আগেই প্রকাশ হয়েছে। উপগ্রহের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করেছে তারা। এই রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, দেশের যে সব রাজ্যে ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল রয়েছে, তার মধ্যে অনেক জায়গাতেই পরিসর কমেছে। আমেদাবাদে ৪.৬৭ বর্গ কিমি, নভসারিতে ১.৮২ বর্গ কিমি, আনন্দে ১.৫৩ বর্গ কিমি কমেছে ম্যানগ্রোভের বনাঞ্চল। অন্যদিকে, মহারাষ্ট্রের তিনটি জেলাতেও একইভাবে কমেছে এই বাদাবন।