উত্তরের পুরভোটে বাজিমাত করতে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের হাতিয়ার করল তৃণমূল
ব্যক্তি মমতা আবেগ এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের জনমুখী প্রকল্প; এই দু’ইতে ভর করেই বিধানসভা নির্বাচনে দক্ষিণবঙ্গে বাজিমাত করেছিল ঘাসফুল শিবির। জোড়াফুল প্রতীকে ঢেলে ভোট দিয়েছিলেন বঙ্গের মহিলা ভোটারা। তৃণমূল কংগ্রেস নারী ক্ষমতায়নের চেষ্টায় ব্রতী। ফলে প্রতি নির্বাচনে মহিলা ভোটদাতারাও আস্থা রাখছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর। এবার উত্তরের ভোটেও একই মডেল নামাচ্ছে জোড়াফুল শিবির। ভোট প্রচারে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের ব্যবহার করা হচ্ছে।
জলপাইগুড়ি পৌরসভার ২৫টি ওয়ার্ডেই মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠী সদস্যাদের মাধ্যমে প্রচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঘাসফুল শিবির। জলপাইগুড়ি পৌরসভার মোট ভোটদাতার সংখ্যা ৮৯ হাজারের কিছু বেশি। এর মধ্যে মহিলা ভোটারের সংখ্যা ৪৬ হাজারের বেশি। বলাইবাহুল্য শহরে সংখ্যার নিরিখে পুরুষদের তুলনায় এগিয়ে রয়েছেন মহিলা ভোটদাতারা। এবার সেই মহিলা ভোটকেই পাখির চোখ করে এগোচ্ছে শাসক শিবির। জলপাইগুড়ি পৌরসভার ২৫টি ওয়ার্ডে মোট স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সংখ্যা ৭৬৮টি, প্রতিটি গোষ্ঠীতে ১১ জন করে মহিলা রয়েছেন।
স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের রীতিমতো কাউন্সিলিং করা হচ্ছে। স্বাস্থ্যসাথী, কন্যাশ্রী, রুপশ্রী ইত্যাদি প্রকল্প সম্পর্কে গোষ্ঠীর মহিলাদের জানানো হচ্ছে। তাঁরা আবার সাধারণ মহিলা ভোটারদের এগুলো বোঝাবেন।
এছাড়াও গোষ্ঠীর প্রত্যেক সদস্যের বাড়িতেও দু-তিনজন করে ভোটার রয়েছেন। এছাড়া পরিচিত ও প্রতিবেশিরাও রয়েছেন। ফলে ৭৬৮ টি গোষ্ঠীর মোট ৮,৪৪৮ জন সদস্যের মধ্যে যদিও ৫ হাজার সদস্যও তৃণমূলের হয়ে প্রচার করেন, তাহলে আরও ১০ হাজার ভোটারের তৃণমূলের প্রচারে প্রভাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
শিউলি পাল, মাধবী বিশ্বাস জনৈকা দুই স্বনির্ভর গোষ্ঠী সদস্যা বলেন, ‘আমরা কী পেয়েছি জানি, কিন্তু এবার পাড়ায় প্রার্থীর সঙ্গে এমনকি নিজেরাও আলাদাভাবে প্রার্থীর জন্য পরিচিত বাড়ি বাড়ি ভোট প্রচারের জন্য।’ ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী সৈকত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ” স্বনির্ভর গোষ্ঠী গঠন করে পৌরসভা এলাকায় অনেক মহিলাই এখন স্বাবলম্বী হয়েছেন। প্রার্থী হিসেবে অনেক মহিলাই আমার হয়ে প্রচারে নেমেছেন।”
জলপাইগুড়ি পুরসভার প্রাক্তন ভাইস চেয়ারপার্সন পাপিয়া পাল বলেন,”মহিলা ভোটারের সংখ্যা এবার জলপাইগুড়ি পৌরসভায় পুরুষ ভোটারের চেয়ে কয়েক হাজার বেশি। মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে রোজগারের রাস্তা দেখাতে বিভিন্নভাবে সাহায্য করা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই তাদের আমাদের প্রার্থীদের প্রতি আলাদাভাবে সহানুভূতি থাকতেই পারে।”