করোনা থেকে মুক্তির পরেই বলবৎ হবে সিএএ, অমিত শাহের বক্তব্যে বিতর্ক
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (CAA) থেকে পিছু হঠছে না কেন্দ্র। সোমবার একথা পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। একটি সংবাদংমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “সিএএ থেকে পিছু হঠার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। করোনা থেকে মুক্তির পরেই আইন বলবৎ করতে উদ্যোগ নেবে কেন্দ্র।”
উল্লেখ্য, সিএএ নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। শুরু থেকেই এর বিরোধিতায় নেমেছে সব বিরোধী দল। উঠেছে আইনটি প্রত্যাহারের দাবি। তবে কেন্দ্রের বক্তব্য, এই আইন কারও নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার জন্য নয়, নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন। তাতেও অবশ্য বিরোধীদের নিরস্ত করা যায়নি। কেন্দ্র সিএএ কার্যকর করতে গেলেই যে বিরোধীরা ফের এর বিরুদ্ধে মাঠে নেমে পড়বে, তাও সবার জানা। এই পরিস্থিতিতেই সরকারের উদ্দেশ্য স্পষ্ট করলেন অমিত শাহ। এর আগেও এমন কথা বলতে শোনা গিয়েছে তাঁর মুখে।
করোনা পরিস্থিতির কারণে সিএএ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সক্রিয়তায় ভাটা পড়েছে। সেই সঙ্গে বিরোধীরাও শান্ত। তার অর্থ এই নয় যে সিএএ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ফিকে হয়ে গিয়েছে। এদিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, করোনার কারণে এই বিষয়টি একটু থমকে আছে ঠিকই। কিন্তু রোগের প্রকোপ কমলেই এই নিয়ে পদক্ষেপ করবে সরকার। শাহ এই সাক্ষাৎকারে উত্তরপ্রদেশের নির্বাচন, হিজাব বিতর্ক-সহ একাধিক সাম্প্রতিক ইস্যু নিয়ে কথা বলেছেন।
উত্তরপ্রদেশ ভোটে বিরোধীরা বারবার বিজেপির বিরুদ্ধে ‘মেরুকরণের রাজনীতি’র অভিযোগ তুলেছে। সে প্রসঙ্গে শাহ এদিন বলেন, মেরুকরণ যদি ঘটে থাকে, তা হলে তা অনুভব করেছেন কৃষক, অনুভব করেছেন দরিদ্র মানুষেরা। আমরা ধর্মের মেরুকরণ করিনি, জাতি-ধর্ম-বর্ণের নির্বিশেষে যাঁদের সুবিধা পাওয়া কথা ছিল, তাঁদের হাতে সুবিধা পৌঁছে দিয়েছি। তিনি জোরের সঙ্গে বলেছেন যে উত্তরপ্রদেশে বিজেপিই ক্ষমতায় ফিরছে। সে রাজ্যে যোগী প্রশাসন নিয়ে তাঁর বক্তব্য, উত্তরপ্রদেশে আগে জাত-পাত ও ধর্মের ভিত্তিতে রাজনীতি চলত।
যোগী আদিত্যনাথের সময়ে পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে। শাহর দাবি, ২০১৪, ২০১৭ এবং ২০১৯– তিনটি নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশের মানুষ বিজেপিকে সমর্থন করেছে। রাজ্যে আইনশৃঙ্খলার উন্নতি, গরিব কল্যাণ, উন্নয়ন ও প্রশাসনিক স্তরে বদলের কারণেই মানুষ ঢালাও ভোট দিয়েছেন বিজেপিকে।
এদিকে, হিজাব ইস্যুতে শাহ বলেন, “আমার ব্যক্তিগত বিশ্বাস, সব ধর্মের মানুষের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ড্রেসকোডকে মান্যতা দেওয়া উচিত। আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে, দেশ সংবিধান অনুযায়ী চলবে না ব্যক্তিগত ইচ্ছাকে গুরুত্ব দেবে। এর পর আদালত যে সিদ্ধান্ত নেবে তাকে আমি মেনে নেব। প্রত্যেকেরই মানা উচিত।”