করোনাকালে পাওয়া যায়নি দেখা, পুর-প্রচারে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে বিজেপি বিধায়ক
করোনাকালে কোথায় ছিলেন? বৃষ্টি-ঝড়ের পর কাউকে এলাকায় দেখা যায়নি। মঙ্গলবার চন্দ্রকোণায় পুরভোটের প্রচারে গিয়ে এমনই প্রশ্নবাণের মুখে পড়েন ঘাটালের বিজেপি বিধায়ক শীতল কপাট সহ অন্যান্য নেতৃত্ব। স্থানীয় মহিলারা তাঁদের ঘিরে বিক্ষোভে শামিল হন। করোনার সময় এলাকায় কোনও বিজেপি নেতাকে দেখা যায়নি। কিন্তু ভোট ঘোষণা হতেই ভোট পাখিরা বেরিয়ে পড়েছে, এই অভিযোগ তুলে স্থানীয় মহিলারা একজোট হয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। ওই ঘটনায় অত্যন্ত ‘অপমানিত’ বিজেপি নেতা ও কর্মীরা কিছুক্ষণ পরেই ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপির প্রার্থীকে মারধর করার অভিযোগ তুলে শহরের মুণ্ডুমালায় ঘাটাল-চন্দ্রকোণা রাস্তা অবরোধ করেন। প্রায় আধ ঘণ্টা অবরোধের পর চন্দ্রকোণা থানার পুলিসের হস্তক্ষেপে অবরোধ ওঠে।
এদিন ঘাটাল মহকুমার পাঁচটি পুরসভার দলীয় আহ্বায়ক তথা বিধায়ক শীতলবাবু চন্দ্রকোণা শহরে প্রচারে আসেন। কয়েকটি ওয়ার্ডে প্রচারও করেন। ১২ নম্বর ওয়ার্ডে শীতলবাবু ও ওই ওয়ার্ডের প্রার্থী তথা বিজেপির চন্দ্রকোণা মণ্ডল সভাপতি রাজীব পাল সহ বেশ কয়েকজন পড়াইমা এলাকায় যেতেই এলাকার মহিলারা বিক্ষোভ শুরু করেন। বিজেপির প্রার্থী, বিধায়ক ও কর্মীদের আটকে তাঁরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। মহিলারা বিজেপি কর্মী-নেতাদের আটকে রেখে বলেন, দু’বছর ধরে আমরা করোনা মহামারী পরিস্থিতিতে রয়েছি। গত বর্ষায় প্রবল বৃষ্টি ও ঝড়ের সময় আপনাদের কোনও বিজেপি নেতা ও কর্মীদের এই এলাকায় দেখা যায়নি। কেউ এসে খোঁজও নেননি। ভোটের বাদ্যি বাজতেই এদিন আপনারা ভোট চাইতে এসেছেন? আপনাদের লজ্জা করে না? মহিলারা বিধায়ক ও প্রার্থীর উদ্দেশে বলেন, আমাদের এলাকায় আপনাদের প্রচার করতে হবে না। বেরিয়ে যান। আমরা বেশ শান্তিতে রয়েছি। আমাদের যাঁকে পছন্দ হবে তাঁকেই ভোট দেব। এলাকায় এসে অশান্তির পরিবেশ তৈরি করতে হবে না। ওই ওয়ার্ডে তৃণমূলের প্রার্থী রয়েছেন দলের শহর সভাপতি প্রদীপ সাঁতরা।
ওয়ার্ডের বিজেপির প্রার্থী বলেন, যাঁরা এদিন বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন তাঁরা সকলেই তৃণমূলের সমর্থক। প্রদীপবাবুর হয়ে প্রচারে বের হন। আমাদের এলাকায় বিধায়ক প্রচারে আসবেন জানতে পেরে তৃণমূলই ওই ঘটনা ঘটিয়েছে।
এদিকে এদিন বিধায়ক নিজেও পিচ রাস্তার উপর বসে অবরোধে শামিল হন। তিনি বলেন, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাদের অপদস্থ করছে। ১২ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের কমীরা যখন আমাদের উপর চড়াও হয়, তখন পুলিসও উপস্থিত ছিল। কিন্তু পুলিস দাঁড়িয়ে দেখেছে। ওই ওয়ার্ডের পর আমরা ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মুণ্ডমালা এলাকায় প্রচারে গেলে সেখানে তৃণমূলের কর্মীরা তাদের দলীয় পতাকা নিয়ে এসে প্রচারে বাধা দেন। আমাদের প্রার্থী সুদীপ কুশারীকে মারধর করা হয়। এই ঘটনার প্রতিবাদে আমরা পথ অবরোধ করতে বাধ্য হই। সাধারণ মানুষ জানুক এই রাজ্যের গণতন্ত্র তলানিতে পৌঁছেছে।
যদিও তৃণমূল প্রার্থী প্রদীপবাবু বলেন, ওই সমস্ত মহিলা রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নন। আমরা কাউকে গণ্ডগোল করতেও বলিনি। সারা বছর এলাকায় বিজেপি নেতাদের টিকি পর্যন্ত দেখা যায় না। মানুষের কোনও উপকারে লাগে না। এখন ভোট চাইতে যেতেই হয়তো ওঁরা চটে গিয়েছেন। তাই ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন। পুলিস জানিয়েছে, দু’টি ঘটনারই অভিযোগ জমা পড়েছে। ইতিমধ্যেই তদন্তও শুরু হয়েছে।