গ্রেপ্তার মন্ত্রী নবাব মালিকের ইস্তফা নয়, মমতার সাথে একমত শিবসেনা নেতা সঞ্জয়
মহারাষ্ট্রে এনসিপি মন্ত্রীর গ্রেপ্তারির পরেই শরদ পওয়ারকে ফোনে ‘পরামর্শ’ দিয়েছিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার সে কথাই প্রকাশ্যে বললেন শিবসেনা সাংসদ তথা দলের মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত। বুধবার সন্ধ্যায় তিনি বলেন, ‘‘কোনও অবস্থাতেই ধৃত মন্ত্রী নবাব মালিকের ইস্তফা গ্রহণ করা উচিত নয়।’’
ধৃত নবাবকে বুধবারই আদালতে পেশ করে জেরার জন্য হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানায় ইডি। সেই আবেদন মেনে ধৃত মন্ত্রীকে আগামী ৩ মার্চ পর্যন্ত ইডি-র হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।
বেআইনি আর্থিক লেনদেনে জড়িত থাকা এবং মাফিয়া ডন ডাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গে যোগাযোগের অভিযোগে নবাবকে বুধবার বিকেলে গ্রেপ্তার করে কেন্দ্রীয় সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। তার পরে ফোনে প্রায় ১০ মিনিট মমতার সঙ্গে এনসিপি সভাপতি পওয়ারের কথা হয়। এনসিপি-র একটি সূত্র জানিয়েছে, ধৃত নবাবকে মহারাষ্ট্রের শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেস জোট ‘মহা বিকাশ আগাড়ি’-র মন্ত্রিসভা থেকে বাদ না দেওয়ার জন্য পওয়ারকে পরামর্শ দিয়েছেন মমতা। এ প্রসঙ্গে গত বছরের ১৭ মে রাজ্যের তৎকালীন দুই মন্ত্রী, ফিরহাদ হাকিম এবং প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের গ্রেপ্তারির কথাও শরদকে বলেছেন মমতা। নারদ মামলায় সিবিআই ফিরহাদ-সুব্রতকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করলেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা তাঁদের মন্ত্রিসভা থেকে সরাননি।
সঞ্জয় বুধবার নরেন্দ্র মোদী সরকারকে নিশানা করে বলেন, ‘‘আফজল খান যেমন ছত্রপতি শিবাজিকে আলিঙ্গনের অছিলায় পিঠে ছুরি দিয়ে আঘাত করেছিলেন, ‘মহা বিকাশ আগাড়ি’ সরকারকে সে ভাবেই পিছন থেকে ছুরি মারতে চাইছে কেন্দ্র।’’ ঘটনাচক্রে, মহারাষ্ট্রের জোট সরকারের নেতৃত্বে রয়েছে সঞ্জয়েরই দল। শিবসেনা সভাপতি উদ্ধব ঠাকরেই সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।
বুধবার দক্ষিণ মুম্বইয়ে ইডি-র আঞ্চলিক দফতরে প্রায় ৭ ঘণ্টা জেরার পর গ্রেপ্তার করা হয় নবাবকে। ইডি-সূত্রের খবর, বেআইনি আর্থিক লেনদেনের ওই মামলায় অভিযুক্তের তালিকায় রয়েছেন মাফিয়া ডন দাউদ ইব্রাহিমের ভাই ইকবাল কাসকর এবং বোন হাসিনা পারকরের নাম। যদিও গ্রেপ্তারির পর শারীরিক পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় ইডি দফতরের বাইরে হাজির সাংবাদিকদের উদ্দেশে নবাব চিৎকার করে বলেন, ‘‘মাথা নত করব না। ভয় পাই না। লড়াই করব এবং জিতব। সত্যটা সকলের সামনে আনব।’’
সম্প্রতি মুম্বইয়ে হাসিনার ঠিকানা-সহ একাধিক জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিল ইডি। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল, ইকবালকেও। দাউদ পরিবারের সঙ্গে সম্পত্তি কেনাবেচায় নবাব জড়িত ছিলেন বলে ইডি-র একটি সূত্রের দাবি। গত অক্টোবরে শাহরুখ খানের পুত্র আরিয়ানকে মুম্বই উপকূলে প্রমোদতরী থেকে মাদক মামলায় গ্রেপ্তারির পর ধারাবাহিক ভাবে কেন্দ্রীয় সংস্থা নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি)-র বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন নবাব। তাঁর অভিযোগ ছিল, বিজেপি চক্রান্ত করে আরিয়ানকে ফাঁসিয়েছে।