পুরভোটে প্রার্থী ৩ চিকিৎসক, প্রচারের পাশাপাশি দেখছেন রোগীও
রাজপুর-সোনারপুরের পল্লব দাস, মুক্তেশ্বর ভট্টাচার্য এবং ডায়মন্ডহারবারের তমাল হালদার। এই তিনজনের মধ্যে মিল কোথায়? তাঁরা তিনজনই এবার পুরভোটের প্রার্থী এবং প্রত্যেকেই পেশায় চিকিৎসক। ভোটের লড়াইয়ে নেমেও কর্তব্যে অবিচল তাঁরা। প্রচারে বেরিয়েও রোগী দেখতে পিছপা হচ্ছেন না কেউ। দিচ্ছেন পরামর্শও। তিনজনেরই বক্তব্য, কেউ সমস্যার কথা বলতে এলে তাঁকে ফেরাতে পারব না।
পল্লববাবু এবং তমালবাবু তৃণমূলের হয়ে এবার দুই পৃথক পুরসভা থেকে প্রার্থী হয়েছেন। মুক্তেশ্বরবাবু সিপিআইয়ের হয়ে ময়দানে নেমেছেন। চিকিৎসার মতো পেশায় থেকেও কীভাবে রাজনীতিতে সময় দিচ্ছেন তাঁরা? তিন ডাক্তার প্রার্থীর জবাব, রোগী দেখার সময় কিছুটা কাটছাঁট করতে হয়েছে। কিন্তু একেবারে বন্ধ হয়ে যায়নি। রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার বিদায়ী চেয়ারম্যান পল্লববাবু। এবারও তিনি ২০ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী। তাঁর ভোটে লড়াইয়ের অভিজ্ঞতা থাকলেও বাকি দু’জন নবাগত। তিনজনের প্রচারে গিয়ে দেখা গেল, কেউ তাঁদের স্যার বলে সম্বোধন করছেন, কেউ ডাকছেন ডাক্তারবাবু বলে।
সোনারপুরের সুভাষ পার্কে বাড়ি বাড়ি জনসংযোগে বেরিয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থী পল্লববাবু। এই পর্বে তাঁকে চিকিৎসকের ভূমিকাতে পাওয়া গেল একাধিকবার। একটি বাড়িতে ঢুকতেই এক বৃদ্ধা বলে উঠলেন, ডাক্তারবাবু, ক’দিন আগে পড়ে গিয়ে পায়ে চোট লেগেছে। হাঁটাচলা করতে পারছি না একদম। সেখানেই বসে রোগীকে পরীক্ষা করতে শুরু করলেন পল্লববাবু। লিখে দিলেন প্রেসক্রিপশনও। প্রার্থী বলেন, আমার ভোটাররা অনেকেই আমার পেশেন্ট। কেউ মেডিক্যাল রিপোর্ট দেখিয়ে নিচ্ছেন। কাউকেই ফেরাচ্ছি না। একই অভিজ্ঞতার সম্মুখীন ডায়মন্ডহারবারের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী তমালবাবু। প্রচারের সময় এক অসুস্থ মহিলা এগিয়ে এসে জানান, তাঁর কিডনিতে পাথর ধরা পড়েছে। কোথায় কী ভাবে চিকিৎসা হবে, জিজ্ঞাসা করতেই হাসি মুখে সব বুঝিয়ে বলে দিলেন ডাক্তারবাবু। তিনি বলেন, মানুষের সেবা করাই আমার পেশা। তাই কেউ কোনও অসুস্থতার কথা বললে চেষ্টা করি সাহায্য করতে। বাকি দু’জনের তুলনায় একটু আলাদা রাজপুর- সোনারপুরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিআই প্রার্থী মুক্তেশ্বরবাবু। তিনি ‘ডক্টর অন কল’ পরিষেবায় যুক্ত। ফোন এলেই সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে যান। এখন অবশ্য সবসময় তা করতে পারছেন না। তাই ফোনেই বেশিরভাগ সময় পরামর্শ দিচ্ছেন আয়ূষের এই চিকিৎসক। যে পরিস্থিতির মধ্যেই তিনি থাকুন না কেন, কাউকেই ফেরাচ্ছেন না।