আনিসের দাদা এবং বাবাকে প্রাণে মারার হুমকি! অভিযোগ দায়ের আমতা থানায়
বুধবার অর্থাৎ, ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে আনিসের দাদা এবং বাবাকে প্রাণে মারার হুমকি দিয়ে ফোন আসার ঘটনায় শনিবার আমতা থানায় অভিযোগ দায়ের করলেন আনিসের দাদা সাবির খান। তবে তিনি এ-ও জানান যে, হুমকি দেওয়ার এক দিন পর, অর্থাৎ ২৪ ফেব্রুয়ারি তাঁর কাছে আরও একটি ফোন আসে। তবে সেই ফোনে তাঁকে ভুল হয়ে গেছে বলে ক্ষমাও চান ওই অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি। যখন এই ফোনটি আসে তখন তিনি পুলিশ স্টেশনেই বসে ছিলেন। ভাইয়ের মৃত্যু নিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলছিলেন।
তিনি আরও জানান যে, থানার ওসি-র পরামর্শেই তিনি থানায় গিয়ে এই ঘটনার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন।
প্রসঙ্গত ২৩ ফেব্রুয়ারির রাতে , খুনের হুমকি দিয়ে ফোন করার অভিযোগ আনেন মৃত ছাত্রনেতা আনিস খানের দাদা। একই সঙ্গে সিবিআই তদন্তের দাবি থেকে পিছু না হটলে পুরো পরিবার-কে ‘দুনিয়া থেকে সরিয়ে’ দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। রাত ১ টা ৪ মিনিটে একটি অজ্ঞাত পরিচয় নম্বর থেকে এই হুমকি ফোনটি আসে বলে জানান আনিসের দাদা সাবির খান। তার মধ্যেই আবার এই হুমকি ফোন তাঁদের পরিবারে যথেষ্ট আতঙ্কের সৃষ্টি করেন বলেও তিনি জানান।
প্রসঙ্গত, আনিস মৃত্যু-রহস্যে এখনও সিবিআই তদন্তের দাবিতে অনড় আনিসের পরিবারের সদস্যরা। রাজ্য সরকারের তদন্ত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আনিসের বাবা। আনিসের মৃত্যুর তদন্ত প্রথমে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাওড়া গ্রামীণ) ইন্দ্রজিৎ সরকারের নেতৃত্বে শুরু হয়েছিল। তবে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ইতিমধ্যেই সিট (বিশেষ তদন্তকারী দল) গঠন করা হয়েছে।
শনিবার ভোরে কবর থেকে আনিসের দেহ তোলা নিয়ে ধুন্ধুমার হয় হাওড়া আমতার দক্ষিণ খাঁপাড়ায়। বিক্ষোভের মুখে দেহ না তুলে ফিরে যেতে বাধ্য হয় পুলিশ। শনিবার ভোরে দ্বিতীয় বার ময়নাতদন্তের জন্য আনিসের দেহ আনতে গ্রামে যায় পুলিশ। নিয়ম অনুযায়ী, পরিবারের তরফে আনিসের বাবা বা অন্য কোনও সদস্যের সেখানে উপস্থিত থাকার কথা। সেখানে ছিলেন স্থানীয় বিডিও এবং বিএমওএইচ।
আনিসের বাবা সালেম খান বলেন, ‘‘আমি আদালতের রায় অমান্য করিনি। আদালতের রায় অনুযায়ী দেহ তোলা হবে। সিট-এর সদস্যদের জানিয়েছিলাম যে, আমি শারীরিক ভাবে অসুস্থ। হাসপাতালে ভর্তি হতে পারি। সেই জন্য সময় চাইছি।’’ স্পষ্ট নির্দেশ সত্ত্বেও কেন দেহ তুলতে শনিবার ভোরেই হাজির হল পুলিশ? এর উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘আমি নিজে থেকে ছেলের দেহ তোলাব। তা নিয়ে আগেই লিখিত জানিয়েছি। তার পরও ওরা রাতের অন্ধকারে চলে এল। এটাকে দেহ চুরি করার উদ্দেশ্য ছাড়া আর কী বলব? আমি সিট-এর উপর আর কী করে বিশ্বাস রাখব?’’