আগামীকাল ১০৮টি পুরসভায় ভোট, বুথে বুথে নির্বাচনী এজেন্ট দিতেই নাজেহাল বঙ্গ বিজেপি
আজ বাদে কাল রাজ্যের ১০৮ টি পুরসভায় ভোট। দুহাজারের বেশি ওয়ার্ড। তবে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপির যা সাংগঠনিক দশা, তাতে ষাট শতাংশ ওয়ার্ডে তাদের কমিটির অস্তিত্বই নেই। ফলে ভোটের দিন বহু বুথে বিজেপি প্রার্থীদের নির্বাচনী এজেন্টও থাকছে না। বিজেপি নেতৃত্বের পর্যবেক্ষণ, উত্তর ২৪ পরগনা, পশ্চিম মেদিনীপুর, নদিয়া এবং উত্তরবঙ্গের বেশ কিছু ওয়ার্ডে জনসমর্থন ধাকলেও সাংগঠনিক গাফিলতি প্রভূত। ফলে যোগ্য বুথ এজেন্টই মিলছে না।
অথচ, বিধানসভা ভোটের আগে সিংহভাগ বুথেই কমিটি গড়ে ফেলেছিল বিজেপি। ক্ষমতা দখল করতে না পারলেও ৭৭টি কেন্দ্রে জয়ের পিছনে যে বুথ কমিটিগুলির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। তা স্বীকার করেন রাজ্য বিজেপির সব নেতাই। দলের এক প্রবীণ নেতার কথায়, ‘বুথস্তরে সংগঠন তৈরি করেও ৭৭টির বেশি আসনে আমরা জিততে পারিনি। সেখানে পুরভোটে বুথ কমিটি ছাড়া আমাদের কী দশা হবে, ভাবতেই খারাপ লাগছে।’
শুধু নিচুতলার সংগঠনেই নয়, দলের উপরতলার হতাশাও প্রচারে স্পষ্ট। সুকান্ত মজুমদার, দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারীর শমীক ভট্টাচার্যের মতো কয়েক জনকেই শুধু ছোটাছুটি করতে দেখা গিয়েছে। বাকি নেতানেত্রী বেপাত্তা। লকেট চট্টোপাধ্যায়, শান্তনু ঠাকুরের মতো সাংসদদের এক দিনও প্রচারে দেখা যায়নি। বনগাঁর পুরভোট ছেড়ে শান্তনু কেন উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা ভোটের প্রচারে, তা নিয়ে গেরুয়া শিবিরেও প্রশ্ন অনেকের।
হুগলির সাংসদ তথা রাজ্য বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক লকেট চট্টোপাধ্যায় বাংলার বিধানসভা ভোটের পর থেকেই উত্তরাখণ্ডে পড়েছিলেন। তাঁকে ওই রাজ্যে বিজেপির নির্বাচনী পর্যবেক্ষকও করা হয়েছিল। কিন্তু উত্তরাখণ্ডে ভোট মিটেছে সপ্তাহ তিনেক আগেই। লকেটও কলকাতায়। তবু পুরভোটের প্রচারে নিজের লোকসভা কেন্দ্র হুগলিতেও দেখা যায়নি তাঁকে। লকেটের এহেন উদাসীনতা বিজেপির অনেকের কাছেই ইঙ্গিতপূর্ণ ঠেকছে। যদিও লকেট জানিয়েছেন, শরীর খারাপ বলেই প্রচারে নেই তিনি। রাজ্য বিজেপির কয়েক জনকে নির্দিষ্ট দায়িত্ব দেওয়া হলেও তারা গা-লাগাননি বলে বিজেপি সূত্রে জানা যাচ্ছে।
অন্য দিকে কয়েক জন প্রাক্তন পদাধিকারী পুরভোটে দায়িত্ব না-পেয়েও বিভিন্ন জেলায় প্রচারে গিয়েছিলেন। এমনই এক নেতার কথায়, ‘সব দেখেশুনে যা বুঝলাম, আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া এলাকায় বিজেপি দ্বিতীয় স্থান ধরে রাখতে পারলেও শহরাঞ্চলে বামেরাই দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসবে।’ রাজ্যের ১০৮টি পুরসভার ভোটে বঙ্গ বিজেপি তাই কোনও অঘটনের প্রত্যাশাও ছেড়েছে। তবে শমীক ভট্টাচার্যের দাবি, ‘নির্বাচন অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ হলে বিজেপি যথেষ্ট ভালো ফল করবে।’