ইউক্রেন- রুশ যুদ্ধকে শুরুতে ভারত-পাকিস্তানের মতো খুনসুটিই ভেবেছিলেন কলকাতার ছাত্রী
সাইরেন শোনার সাথে সাথে শিক্ষার্থীরা তাদের পাসপোর্ট, ইউনিভার্সিটির আইডি এবং জলের বোতলের মতো প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সাথে নিয়ে নিকটস্থ বাঙ্কারে চলে যায়। এভাবেই কাটছে ইউক্রেনে জীবন। সে অভিজ্ঞতার কথাই জানালেন মুকুন্দপুরে বেড়ে ওঠা ডাক্তারির চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী প্রিয়াংশী পাল।
প্রিয়াংশী জানান, সাইরেন শোনার সাথে সাথে বিশ্ববিদ্যালয় তাদের নিকটস্থ বাঙ্কারের দিকে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। গতকাল থেকে তিন চারবার সাইরেন বেজে গেছে।
বাঙ্কারগুলি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নির্মিত ভূগর্ভস্থ, সুরক্ষিত কাঠামোর এবং সংকীর্ণ। ইউক্রেনীয় ছাড়াও, মিশরীয় ছাত্ররা যে বাঙ্কারে ছিল প্রিয়াংশীও সেখানে ছিল। প্রিয়াংশীর সহপাঠীদের মধ্যে অন্তত ১০ জন কলকাতার।
রুশ আগ্রাসনের এই ভয়ঙ্কর মুহূর্তে রাজধানী শহর কিভ থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত ইউক্রেনের ভিন্নিতসিয়া শহরে আটকে পড়া ১৫০০ ভারতীয় পড়ুয়ার মধ্যে রয়েছে কলকাতার বেশ কয়েকজন পড়ুয়া। প্রিয়াংশী তাদেরই একজন।
কলকাতার মুকুন্দপুরের বাসিন্দা প্রিয়াংশী পাল, ভিন্নিৎসিয়া ন্যাশনাল মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির চতুর্থ বর্ষের ডাক্তারি পড়ুয়া।
ভারত সরকারকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেছেন প্রিয়াংশীরা। কিভ ইতিমধ্যেই রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সেনাবাহিনী, সামরিক লোক এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে পার্থক্য করে না। বেসামরিক মানুষদের মৃত্যুর খবরও রয়েছে।
এই যুদ্ধকেও শুরুতে ভারত- পাকিস্তানের খুনসুটির মতোই সাধারণ ভেবেছিল প্রিয়াংশী এবং তার সহপাঠীরা। কিন্তু যত দিন যাচ্ছে ততই ভুল ভাঙছে।
অনেক ভারতীয় ছাত্র আগেই বিপদ বুঝে দেশে পাড়ি দিয়েছিল। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইনে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি না দেওয়ায় প্রিয়াংশী সেখানেই থেকে গিয়েছেন। এই আশায় যে কিছু দিনের মধ্যে পরিস্থিতি ঠিক হয়ে যাবে।
কিন্তু এখন আর সে আশা নেই। মার্শাল ল জারি হওয়ায় সে দেশে আটকে পড়েছেন প্রিয়াংশী।
যারা আটকা পড়ে আছেন তাদেরকে ভারতীয় দূতাবাসের পরবর্তী নির্দেশের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
২৫ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় দূতাবাস জানিয়েছে, দুটি সীমান্ত-ক্রসিং পয়েন্ট, হাঙ্গেরিয়ান সীমান্তে চোপ-জাহোনি এবং রোমানিয়ান সীমান্তে পোরুবনে-সিরেটের মাধ্যমে সরিয়ে নেওয়া হবে ভারতীয় নাগরিকদের, বিশেষ করে ছাত্রদের। হেল্পলাইন নম্বরগুলির সাথে সবসময় যোগাযোগ রাখার পরামর্শ দিয়েছে বিদেশ মন্ত্রক। শিক্ষার্থীদের, স্টুডেন্ট এজেন্সিগুলির সাথেও যোগাযোগ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।