জল্পেশ মেলার প্রথম দিনেই ঢল নামল ভক্তদের
মঙ্গলবার শিবচতুর্দশীতে শৈবতীর্থ জল্পেশে মেলার উদ্বোধন হয়। ঐতিহ্যবাহী জল্পেশ মেলার সূচনা করেন অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দপ্তরেরমন্ত্রী বুলুচিক বরাইক। উদ্বোধনপর্বে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশচন্দ্র অধিকারী, জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা বর্মন প্রমুখ। মন্দির কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ১০ দিন মন্দির সংলগ্ন জমিতে মেলা চলবে। এদিন মেলা প্রাঙ্গণে সরকারি স্টলেরও উদ্বোধন করা হয়।
গত দু’বছর কোভিডের কারণে শিব চতুর্দশীতে জল্পেশে মেলা হয়নি। শ্রাবণী মেলাও বসেনি। এবার মেলা বসায় প্রথমদিনই উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তের পাশাপাশি অসম থেকেও লোকজন আসেন। জল্পেশ মেলা আয়োজকরা জানিয়েছেন, প্রথমদিনই মেলায় রেকর্ড ভিড় হয়েছে। ভিড় দেখে খুশি মেলায় আসা স্টল ব্যবসায়ীরাও। জিলিপি, মিষ্টি, ফাস্টফুডের দোকানগুলিতে দুপুর থেকে ভিড় উপচে পড়ে। নাগরদোলা সহ রাইডগুলিতে ছিল যথেষ্ট ভিড়। গত দু’বছর জল্পেশে ভক্তরা শিবের মাথায় জল ঢালতে এলেও মেলা বসেনি। এ বছর করোনা পরিস্থিতি অনেকটাই অনুকূলে। তাই ভিড় হবে ধরেই নিয়েছিলেন মেলা আয়োজকরা। মেলা শুরুর দিনই এত মানুষ আসায় খুশি সকলেই।
এদিন মেলার মাঠে পা ফেলার মতো জায়গা ছিল না। খাবারের দোকান হোক বা কসমেটিক্সের দোকান, ভিড় ছিল সর্বত্রই। মেলায় আসা ব্যবসায়ীরা বলেন, প্রথমদিন যা বোঝা গেল তাতে বৃষ্টি না হলে লক্ষাধিক লোক সমাগম হবে।
মেলা ঘোরার পাশাপাশি এদিন পুণ্যার্থীরা জল্পেশ মন্দিরের গর্ভগৃহে গিয়ে শিবের মাথায় জল ঢালেন। মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে সিসি ক্যামেরায় নজরদারি চালানো হয়। অন্যান্যবারের মতো এ বছরও ১০ ও ১০০ টাকার টিকিট করা হয়েছে। মন্দির কমিটির নিয়োগ করা নিরাপত্তারক্ষী, ভলান্টিয়ার ছাড়াও নজরদারিতে রয়েছে ময়নাগুড়ি থানার পুলিস। মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য এবার মেলায় মাইক ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে বলে জানান ময়নাগুড়ি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শিবম রায়বসুনিয়া।
মন্ত্রী বুলুচিক বরাইক বলেন, শিবরাত্রি উপলক্ষে এদিন থেকে জল্পেশ মেলা শুরু হল। এটা অনেক পুরনো মেলা। এরসঙ্গে ময়নাগুড়ি তথা জলপাইগুড়ি জেলাবাসীর আলাদা আবেগ জড়িয়ে। ঐতিহ্যবাহী এমন একটি মেলার উদ্বোধক হিসেব থাকতে পেরে আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান বলে মনে করছি। ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলায় জেলায় হওয়া মেলাগুলির প্রতি নজর দিয়েছেন। কোচবিহারের রাসমেলা কিংবা জল্পেশ মেলায় বাইরে থেকে প্রচুর ভক্তের সমাগম হয়। এখানে আগামী দিনে আর কী কাজ করা যায় তা নিয়ে মন্দির কমিটির সঙ্গে আলোচনা করব।