পুরভোটের পর দিলীপ গড় খড়গপুরে বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দল প্রকাশ্যে
পুরভোট মিটতে না মিটতে রেলশহর খড়্গপুরের ফের BJP-র গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে। এবার অভিযোগের তীর সদ্যনির্বাচিত BJP কাউন্সিলর ও বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায় বিরুদ্ধে। দল বিরোধী কাজকর্ম করায় দলেরই এক কর্মীকে হেনস্থা করার অভিযোগ উঠল বিধায়ক হিরণের বিরুদ্ধে। এই অভিযোগের পর হিরণ ও তার সমর্থক গোষ্ঠীর তরফ থেকে দলের বিরুদ্ধে অন্তর্ঘাতের পাল্টা অভিযোগ তোলা হয়েছে।
পুরসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর ২৪ ঘন্টা পেরিয়েছে। পুরভোটে খড়গপুর পুরসভার ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হয়েছিলেন বিধায়ক হিরন্ময় চট্টোপাধ্যায়। প্রধান বিরোধী প্রার্থী তৃণমূলের জহর পালকে হারিয়ে বিপুল ভোটে জয় যুক্ত হয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার রাতে ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের তালবাগিচা এলাকায় দলীয় বৈঠকে যোগ দিতে বিজেপির দলীয় কার্যালয়ে উপস্থিত হন হিরণ। সেই সময় দলীয় কার্যালয়ে উপস্থিত বিজেপি কর্মীদের সামনেই স্থানীয় এক দাপুটে বিজেপি নেতা চঞ্চল কর-কে হেনস্থা করার অভিযোগ ওঠে হিরণের বিরুদ্ধে।
চঞ্চল করের অভিযোগ, হিরণের নির্দেশেই তার কিছু লোকজন মারধর করে দলীয় কার্যালয় থেকে বের করে দেয় চঞ্চল করকে।ওই বিজেপি কর্মীর মোবাইল ফোনটিও কেড়ে রেখে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে । দলীয় কার্যালয় থেকে চঞ্চলকে বের করে দিয়ে তাকে ছাড়াই সেখানে কর্মী বৈঠক করেন সদ্য নির্বাচিত কাউন্সিলর হিরণময় চট্টোপাধ্যায় এমনটাই জানিয়েছেন চঞ্চল কর। BJP নেতার অভিযোগ, গত বছরের ১৫ আগস্ট চঞ্চলের উদ্যোগেই ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে তৈরি হয় বিজেপির ওই দলীয় কার্যালয়টি। ঘটনা ঘটার মুহূর্তের মধ্যেই ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয় এলাকায়। ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় খড়্গপুর থানার পুলিশ।
হিরনের পাল্টা অভিযোগ, পুরসভা নির্বাচনের আগে থেকেই স্থানীয় ভোটারদের প্রভাবিত করছিলেন চঞ্চল কর। বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিজেপিকে ভোট না দেওয়ার হুমকি দিয়ে এসেছেন বলে হিরণের পক্ষ থেকে অভিযোগ উঠেছে। BJP-কে ভোট না দেওয়ার জন্য বাড়ি বাড়ি ৫০০ টাকা বিলিকরার অভিযোগ উঠেছে ‘মীরজাফর’ চঞ্চল করের বিরুদ্ধে।এদিন রাতে হিরণ জানিয়েছেন, তিনি যখন দলীয় কার্যালয়ে ঢুকেছেন তখন চঞ্চল কর গোলমাল পাকানোর চেষ্টা করে। ভোটের আগেও তার সমর্থকদের ভয় দেখিয়ে হুমকি দিয়ে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছিল চঞ্চল। এদিনও সেখানে উপস্থিত মহিলা সমর্থকদের গায়ে হাত তোলার অভিযোগ উঠেছে চঞ্চল করের বিরুদ্ধে। ওই নেতার বিরুদ্ধে তাহানি অভিযোগ জানাতে চলেছেন দলের মহিলা সদস্যরা, জানিয়েছেন হিরণ।
৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের হিরণের কাছে পরাজিত তৃণমূল নেতা ও প্রাক্তন কাউন্সিলার জহরলাল পালের বক্তব্য, BJP-র এটা হওয়ারই ছিল।BJP শিবিরের দুই গোষ্ঠীর নিজেদের মধ্যে গোষ্ঠীকোন্দল ও মারপিট হবেই।ভোটের কয়েকদিন আগের থেকেই তালবাগিচা এলাকায় মদ মাংস টাকা বিলিয়েছে BJP , অভিযোগ তৃণমূল নেতার।একইসঙ্গে তিনি এটাও জানিয়েছেন, এই সব করে তালবাগিচা এলাকায় মদ্যপদের সংখ্যা বাড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি ।
বিজেপি রাজ্য নেতৃত্ব এই নির্বাচনে তারকা-বিধায়ক হিরণকে ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করেছিল। এমনকি গোটা পুরসভা এলাকায়হিরনকে প্রচারের মুখ করেখড়্গপুরে প্রচার চালিয়েছিল BJP । নির্বাচন মিটে গেলেও সেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের রেশ এখনও চলতে থাকায়বেশ কিছুটা অস্বস্তিতে গেরুয়া শিবিরও।