‘ফাটা ডিমে তা দিচ্ছে’, পুরভোটে গো হারা হারের পর বঙ্গবিজেপির নেতাদের কটাক্ষ তথাগতর
দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেওয়া, ব্যর্থতার কড়া ভাষায় সমালোচনা করার প্রবণতা নতুন নয় বর্ষীয়ান নেতা তথাগত রায়ের (Tathagata Roy)। তবে সম্প্রতি বঙ্গ বিজেপির নানা ত্রুটিবিচ্যুতি নিয়ে তির্যক ভাষায় লাগাতার তির বিঁধছেন তিনি। এবার তাঁর নিশানায় পুরভোটে বিজেপি (BJP) কার্যত শূন্য হয়ে যাওয়া। রাজ্যের ১০৮ পুরসভার মধ্যে কোনওটিই আসেনি গেরুয়া শিবিরের দখলে। তার পরপরই ‘চিন্তন বৈঠক’ শুরু করছে বঙ্গ বিজেপি। শনিবার সেই বৈঠকের আগে তথাগত ঘোষ টুইটে ফের কটাক্ষ করলেন দলীয় নেতৃত্বকে। তাতে বাংলার গেরুয়া শিবিরকে উটপাখির সঙ্গে তুলনা করে তাঁর তির্যক মন্তব্য – “ফাটা ডিমে আর তা দিয়ে কি ফল পাবে”? এ প্রসঙ্গে তিনি সুধীন দত্তের ‘উটপাখি’ কবিতার লাইন উল্লেখ করেছেন।
শুক্রবার তথাগত রায়ের টুইটে দেখা যায় তিনি লিখেছেন, “বিধানসভা ভোটের ফলের পর বিজেপি বিপর্যয় স্বীকার না করে বলেছিল, ৩ থেকে বাড়িয়ে ৭৭ তো করেছি! সেই উটপাখির মতো আচরণের ফল হল আজ পুরভোটে প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া!” এরপর তিনি সুধীন দত্তর কবিতার কথা উল্লেখ করেন। এতেই স্পষ্ট, বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বকে তিনি উটপাখির সঙ্গে তুলনা করলেন।
১০৮টি পুরসভার ভোট পরীক্ষায় বঙ্গ বিজেপির পারফরম্যান্সে দিল্লির নেতারা রীতিমতো বিরক্ত। শনিবার রাজ্য নেতৃত্বকে নিয়ে বৈঠক করতে আসছেন সহ-পর্যবেক্ষক অমিত মালব্য (Amit Malvya)। শুরু হবে চিন্তন বৈঠকে। পুরভোটে বিপর্যয়ের পিছনে কী কী কারণ রয়েছে তা খুঁজে বের করে বিস্তারিত রিপোর্ট মালব্যর থেকে নেবেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা(JP Nadda), সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বি এল সন্তোষরা। এই চিন্তন বৈঠকেও থাকবেন রাজ্য বিজেপির অন্যতম এই সাধারণ সম্পাদক তথা হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। ১০৮টি পুরসভার ভোটে পর্যদুস্ত হওয়ার পর শুধু সন্ত্রাসের তত্ত্ব আঁকড়ে হারের কারণকে দেখাতে চাইছে বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত শিবির। দলের নিচুতলার সংগঠনের ভেঙে পড়া অবস্থাকে আড়াল করতে চাইছে বঙ্গ বিজেপির ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী। তখন কিন্তু তাদের এই সন্ত্রাসের যুক্তি কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে কতটা খাটবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
এই পরিস্থিতিতে দলের অন্যতম বর্ষীয়ান সদস্য তথাগত রায়ের টুইট যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। ক্রমশই ভোটযুদ্ধে নিজেদের দুর্বলতাই প্রকাশিত হচ্ছে। অন্তর্তদন্ত করে সংগঠনকে ঢেলে সাজানোর তাগিদ কম, তাত্বিক দিকে আলোকপাতেই বেশি আগ্রহী বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব, এমনই মনে করেন অনেকে। তথাগত রায়েরও প্রশ্ন, পুরভোটে নিশ্চিহ্ন হওয়ার পর এখন চিন্তন বৈঠকের প্রাসঙ্গিকতা কী?