তিন লক্ষের কাছাকাছি ডোজ দিয়ে দেশে তৃতীয় বাংলার মহিলা টিকাকর্মী
করোনার বিরুদ্ধে দুঃসাহসিক ও মরণপণ লড়াইয়ে যাঁদের হাত ধরে জয় এসেছে, জাতীয় স্তরে এবার সম্মানিত হতে চলেছেন দেশের সেই টিকাকর্মীরা। এই কর্মসূচির হাত ধরেই জাতীয় স্তরে সম্মানিত হবে বাংলাও। পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে বেশি টিকাদান করা দুই মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীকে ৮ মার্চ, আন্তর্জাতিক নারী দিবসে দিল্লিতে সম্মানিত করতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। ওই অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার জন্য শুধু অনুমতি দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বাস্থ্যদপ্তর, দিল্লি যাওয়া-আসার বিমানের টিকিটও কেটে দিয়েছে। তাঁদের সঙ্গে একজন আধিকারিককেও পাঠানো হচ্ছে। শনিবার দপ্তরের তরফ থেকে ফুল, মানপত্র দিয়ে সম্মানিত করা হয় দু’জনকে। স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম বলেন, মুখ্যমন্ত্রী ওই দু’জন এবং তাঁদের পরিবারকে প্রচুর অভিনন্দন জানিয়েছেন। শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রাজ্যের সমস্ত করোনা যোদ্ধা ও তাঁদের পরিবারকেও।
৩ মার্চ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের চিঠি এসে পৌঁছয় স্বাস্থ্যভবনে। সেখানে বলা ছিল, দেশের প্রতিটি রাজ্য থেকে দু’জন করে সর্বোচ্চ সংখ্যক টিকাদান করা মহিলাকর্মীকে সম্মানিত করবে তারা। কেন্দ্রীয় সরকারের তালিকাভুক্ত দু’টি নাম রাজ্যকে যাচাই করে নিতে বলা হয়। সেই পর্ব শেষ হলে স্বাস্থ্যমন্ত্রক রাজ্যকে জানায়, আসন্ন নারী দিবসের প্রাক্কালে নয়াদিল্লিতে বাংলায় দুই মহিলা স্বাস্থ্যকর্মী সম্মানিত হবেন। ওই দুই কর্মী হলেন লেখা রায় ও নন্দিতা মুখোপাধ্যায়।
২০২১ সালের গোড়ায় টিকাকরণ অভিযান শুরুর পর থেকে এখনও পর্যন্ত লেখাদেবী ২ লক্ষ ৬৮ হাজার ৫৯০ ডোজ টিকা দিয়েছেন। নন্দিতাদেবী দিয়েছেন ২ লক্ষ ৪২ হাজার ২৯৪ ডোজ। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, দু’জনেই উত্তর ২৪ পরগনা জেলার দুই টিকাকর্মী। লেখাদেবী বারাসাত ১ ব্লকের বড়বড়িয়া সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কমিউনিটি হেলথ অফিসার। নন্দিতাদেবী পানিহাটি পুরসভার ফার্স্টটায়ার সুপারভাইজার।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, দেশের সব রাজ্য মিলিয়ে যে ৭৪ জন সেরা মহিলা টিকাকর্মীর তালিকা তৈরি করেছে কেন্দ্র, তাতে তৃতীয় স্থানে রয়েছেন লেখাদেবী। ৩ লক্ষ ২ হাজার ৭০৫ ডোজ টিকা দিয়ে তামিলনাড়ুর ত্রিচির বিমানগর আরবান প্রাইমারি হেলথ সেন্টারের মহিলা টিকাকর্মী ই থারানি রয়েছেন শীর্ষস্থানে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বিহারের পাটনার গুরু নানক ভবনের টিকাকর্মী মায়া যাদব। নন্দিতাদেবী ওই তালিকায় প্রথম দশে রয়েছেন।
শনিবার লেখাদেবী বলেন, সম্মানিত হওয়ার খবর পেয়েছি। অসম্ভব ভালো লাগছে। আমাদের কাজের মর্যাদা পাব জেনে ভীষণ আনন্দ হচ্ছে। ৫ মাস আগে বাবাকে হারিয়েছি। উনি বেঁচে থাকলে খুব খুশি হতেন। নন্দিতাদেবী বলেন, খুব আনন্দ হচ্ছে। মানুষকে নানাভাবে উদ্বুদ্ধ করেছি টিকা নিতে।