অসম্পূর্ণ ডাক্তারি কোর্স, ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তায় ইউক্রেন ফেরৎ ভারতীয় পড়ুয়ারা
যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন থেকে ঘরে ফিরছেন একের পর এক পড়ুয়া। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন তাঁদের পরিবারের সদস্যরা। এই ক’দিন তাঁদের কীভাবে কেটেছে, সেই অভিজ্ঞতা শুনিয়েছেন তাঁরা। শুক্রবার ঘরে ফিরেছেন হাওড়ার আমতার নরিট গ্রামের মিখাইল আলম। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরের বাসিন্দা রায়না রুবাইয়া এবং সৈয়দ মুস্তাকিন আহমেদ। বাড়ি ফেরার পর প্রাণের ভয় কাটলেও তাঁদের ঘিরে ধরেছে ভবিষ্যৎ ও কেরিয়ার নিয়ে দুশ্চিন্তা। প্রত্যেকেই চাইছেন, দেশের সরকার তাঁদের বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিক। একইসঙ্গে তাঁদের কেউ কেউ আশাবাদী, দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে যাবে ইউক্রেন। ফের সেখানে গিয়েই পড়াশুনো শেষ করতে পারবেন তাঁরা।
শুক্রবার রাতে আমতার নরিটে নিজের বাড়িতে ফেরেন মিখাইল আলম। ইউক্রেনের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃতীয় বর্ষের ডাক্তারি পড়ুয়া তিনি। তাঁর কথায়, আবার কবে ইউক্রেন স্বাভাবিক হবে, সেই আশায় দিন গুনছি। ভারত সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়ও রয়েছি। বিপদের মধ্যে তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয় বা বিদেশ মন্ত্রকের কাছ থেকে তেমন কোনও সাহায্য না পাওয়ার কথা জানালেন তিনি। তাঁর কথায়, আমরা নিজেরাই বাস ভাড়া করে রোমানিয়া সীমান্তের দিকে রওনা দিই। প্রায় ছ’ঘণ্টা বাসযাত্রার শেষে রোমানিয়া সীমান্ত থেকে ১০ কিলোমিটার আগে আমাদের নামিয়ে দেওয়া হয়। সেখান থেকে কনকনে ঠান্ডায় ১০ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে সীমান্তে পৌঁছই। কিন্তু রোমানিয়া প্রবেশ করতে আমাদের আরও দু’দিন সময় লেগে যায়।
বারুইপুরের রায়না রুবাইয়া বলেন, এখনও যুদ্ধের ট্রমা কাটিয়ে উঠতে পারছি না। একটা সময় মনে হয়েছিল, আর হয়তো নাও বাঁচতে পারি। তবে সবাই মিলে একসঙ্গে থাকায় সেই ভয় কেটেও যায় এক সময়। কথায় কথায় তিনি জানান, একটা ছোট বাঙ্কারে ৪০০-৫০০ জন ঠাসাঠাসি করে থাকতে হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের পড়াশোনা নিয়ে এখনও কিছু জানায়নি। আমাদের কেরিয়ার কী হবে, তা নিয়ে প্রবল দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছি। এখানকারই তরুণ সৈয়দ মুস্তাকিন আহমেদ বাড়ি ফিরেছেন শুক্রবার। তিনি বলেন, প্রতি মুহূর্তে আতঙ্কিত ছিলাম আমরা। প্রাণ নিয়ে যে ফিরে আসতে পেরেছি, তার জন্য রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারকে ধন্যবাদ। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এখনও আমাদের কিছু জানায়নি। সেই পরিস্থিতিও নেই ওখানে। এখন দেখা যাক, আমাদের এখানকার সরকার কী ব্যবস্থা নেয়। এখানকার দুই সরকারের প্রতি আমার সম্পূর্ণ আস্থা আছে।