রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

বইমেলার ভেতর আরেকটা মেলা – বিকোচ্ছে হস্তশিল্প থেকে গয়না

March 8, 2022 | 2 min read

জনসমাগমের নিরিখে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি রয়েছে কলকাতা বইমেলার। রবিবার রেকর্ড ভিড় দেখেছিল মেলা প্রাঙ্গণ। সেই ধারাই বজায় রইল সোমবার সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনেও। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোদের তাপ‌ বেড়েছে। কিন্তু মানুষের উৎসাহে ভাটা পড়েনি। নিয়মমাফিক সাহিত্যবাসর, বই প্রকাশ, খেলা, কুইজের আসর তো ছিলই। তার সঙ্গে সমানে পাল্লা দিল বিভিন্ন ধারার পেইন্টিং, শো-‌পিস, কস্টিউম ও জাঙ্ক জুয়েলারি কিংবা অভিনব প্রিন্টের রকমারি হাতব্যাগের বিকিকিনি আর রসনাতৃপ্তি।
ফি বছর বইমেলার দিকে তাকিয়ে থাকেন প্রকাশক ও বই বিক্রেতারা। মূলত ব্যবসার স্বার্থে। তার বাইরেও বিপুল সংখ্যক মানুষ রয়েছেন, যাঁরা নির্ভর করেন এই মেলার উপরে। তাঁরা মূলত লোকশিল্প ও হস্তশিল্পের মতো অসংগঠিত ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত। করোনার প্রকোপে একবছর বইমেলা হয়নি। বন্ধ ছিল অন্যান্য মেলাও। অংসগঠিত ক্ষেত্রে নেমে এসেছিল রোজগারহীনতার অন্ধকার। এখন পরিস্থিতি ফের স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। বইমেলা হচ্ছে। তাই ছন্দে ফিরেছে তাঁদের জীবনও। কথাটা যে কতটা সত্যি, প্রমাণ পাওয়া গেল শান্তি সরকারের মন্তব্যে। মছলন্দপুরের এই বধূ এসেছেন কস্টিউম জুয়েলারির সম্ভার নিয়ে। বিক্রি কেমন হচ্ছে জানতে চাইলে হেসে বললেন, ‘যা ভেবেছিলাম তার থেকে খানিক বেশিই হচ্ছে। এখনও তো মেলা শেষ হতে বেশ ক’টা দিন বাকি। রোজই প্রচুর মানুষ আসছেন। দেখা যাক কী হয়!’ পাশেই বসে পাটের উপর কড়ি দিয়ে দুল তৈরি করছিলেন শিশির গুপ্ত। বনগাঁ থেকে বইমেলায় এসেছেন পসরা নিয়ে। তিনিও স্বীকার করলেন, বইয়ের পাশাপাশি এসব কেনাকাটার দিকে ঝোঁক এবার একটু বেশি।


রকমারি ডিজাইন ও প্রিন্টের পাটের হাতব্যাগের চাহিদাও এবার তুঙ্গে। মেলাজুড়ে ইন্ডিয়ান জুট বোর্ডের প্রতিটি স্টলই দেখা গেল উৎসাহীদের উপচে পড়া ভিড়। পাটের ব্যাগ, শিশিরবাবুদের ডাইনে রেখে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন ছাড়িয়ে এগতেই চোখে পড়ল রকমারি পেন্টিংয়ের সম্ভার। লাইভ পোট্রেট থেকে ডিজিটাল আর্ট— কী নেই সেখানে। নিজের বানানো ডিজিটাল আর্টের পোস্টার নিয়ে বসেছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম স্টাডিজের পড়ুয়া সৌরভ কাঞ্জিলাল। বিক্রির ব্যাপারে প্রশ্ন করায় মিলল সংক্ষিপ্ত উত্তর, ‘সো ফার সো গুড’। এর পাশাপাশি অন্যান্যবারের মতো রসনাতৃপ্তির ঢালাও আয়োজনও রয়েছে। কেনাকাটা সেরে মানুষ ঢুকে পড়ছেন স্টেট ফিশারিজ কিংবা দীঘা ফিশ কর্পোরেশনের স্টলে। নিমেষে শেষ ফিশ ফ্রাই, ব্যাটার ফ্রাই, ফিঙ্গার। শেষপাতে আইসক্রিম, মিষ্টি, কেক-পেস্ট্রি সবই রয়েছে। 


বইমেলার এবারের থিম কান্ট্রি বাংলাদেশ। উদযাপিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের জন্মশতবর্ষ। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর, নেতাজির ১২৫তম জন্মবর্ষ, সত্যজিৎ রায়ের জন্মশতবর্ষ এবং ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ বছর উদযাপনের বিশেষ অনুষ্ঠানও চলছে। এদিকে, মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণামতো এদিনই রাজ্য সরকারের তরফে বইমেলার জন্য সেন্ট্রাল পার্কের আনুষ্ঠানিক হস্তান্তর করা হয় গিল্ড কর্তৃপক্ষকে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#junk jwellery, #fairs, #Book Fair

আরো দেখুন